কেন বিয়ে করেননি রতন টাটা

রতন টাটা
রতন টাটা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের শীর্ষ শিল্পপতি, ছিলেন শীর্ষ ধনীদের একজন। কিন্তু ৮৬ বছরের জীবদ্দশায় কখনো বিয়ের পিঁড়িতে বসেননি প্রয়াত রতন টাটা। তার নেই কোনো সন্তান-সন্ততিও। কিন্তু কেন?

আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।

এতে বলা হয়, ১৯৯৭ সালে এক সাক্ষাৎকারে রতন বলেছিলেন, 'স্ত্রী, সন্তান বা পরিবার না থাকায় অনেক সময় একাকী বোধ করি। একটি পরিবারের অংশ হওয়ার তাড়নাও বোধ করি কখনো কখনো। আবার কাউকে নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে না, এটা ভেবে নিজের স্বাধীনতাটাও উপভোগ করি। কিন্তু এর বাইরে, একাকীত্ব তাড়া করে আমায়।'

সাবেক বলিউড অভিনেত্রী সিমি গারেওয়ালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই কথা স্বীকার করেছিলেন রতন। সেখানে তিনি আরও বলেন, তার জীবনে মোট চারবার প্রেম এসেছে। এরমধ্যে একবার বিয়ের বেশ কাছাকাছি চলে এসেছিলেন। সেটি ছিল তার প্রথম প্রেম।

উচ্চ-মাধ্যমিক পাস করে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে যান রতন। আর্কিটেকচারে ডিগ্রি অর্জনের পর লস অ্যাঞ্জেলসের একটি কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেন। তখনই এক মার্কিন তরুণীর প্রেমে পড়েন তিনি। সে প্রেম এতই গভীর ছিল যে দুজনে মিলে সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করবেন।

কিন্তু দেশে তার দাদি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় ভারতে ফেরেন রতন। ১৯৬২ সাল, তখনই আবার শুরু হয় ভারত-চীন যুদ্ধ। আগে কথা পাকা থাকলেও এবার বিয়ের ব্যাপারে বেঁকে বসে তার প্রেমিকার পরিবার। মেয়ে ভারতে গিয়ে থাকবে, এটা মানতে পারছিলেন না তারা। ভেঙে যায় তাদের সম্পর্ক।

অভিনেত্রী সিমি গারেওয়ালের সঙ্গেও একসময় প্রেমের সম্পর্ক ছিল রতনের। ২০১১ সালে এক সাক্ষাৎকারে সিমি নিজেই এ কথা স্বীকার করেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়। সিমি বলেন, 'আমি আর রতন একসঙ্গে অনেকটা পথ হেঁটেছি। মানুষ হিসেবে সে নিখুঁত। তার বোধশক্তিও প্রখর। তার মতো ভদ্র মানুষ খুব একটা দেখিনি আমি। অর্থ কখনো তাকে প্রলুব্ধ করেনি।'

তিনি আরও বলেন, 'বিদেশে থাকার সময় রতনকে অনেক চিন্তামুক্ত দেখায়। কিন্তু দেশে ফিরলে সেটা আর থাকে না।'

ধারণা করা যায়, কাজ ও দায়িত্বের চাপেই দেশে কখনো ভারমুক্ত থাকতে পারতেন না রতন। কখনো বিয়ে না করার পেছনে এটিও ছিল একটি বড় কারণ। সিমিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেই রতন বলেছিলেন, 'অনেকগুলো কারণে আমার কখনো বিয়ে হয়নি। সময় একটি কারণ। আবার যুবক বয়সে আমি কাজের মধ্যে ব্যস্ত ছিলাম অনেক।'

রতন ও সিমির সম্পর্ক বেশিদিন টেকেনি। ১৯৭০ সালে রবি মোহনকে বিয়ে করেন সিমি। রতনের জীবনে আসা বাকি দুই নারী কারা, তা কখনো খোলাসা করেননি তিনি।

বুধবার শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করা রতন টাটার জন্ম ১৯৩৭ সালে। তার বাবা ছিলেন টাটা পরিবারের দত্তক সন্তান। ১০ বছর বয়সেই বাবা-মার বিচ্ছেদ দেখতে হয় রতনকে। এরপর তিনি মানুষ হন দাদির কাছে।

অনেকে ধারণা করেন, ছোট বয়সে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ রতনের মধ্যে এক ধরনের বিয়ের ভীতি তৈরি করেছিল। প্রথম প্রেমিকার সঙ্গে বিয়ে ভেঙে যাওয়া সেই ভীতিকে আরও বাড়িয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Fire breaks out at tissue warehouse in Narayanganj

Upon receiving the information, 19 firefighting units from various stations rushed to the scene and are currently working to bring the blaze under control

22m ago