অন্ধ্র প্রদেশে আঘাত হানবে আজ, তামিলনাড়ুতে ভারী বৃষ্টিপাতে নিহত ৮
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় 'মিগজাউম' আজ মঙ্গলবার ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বাপাতলা জেলার উপকূল অতিক্রম করতে যাচ্ছে। এর আগে এই ঝড়ের প্রভাবে তামিলনাড়ু রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আট জন।
আজ মঙ্গলবার ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এই তথ্য জানিয়েছে।
চেন্নাইতে পাঁচ ব্যক্তি পানিতে ডুবে মারা গেছেন। বাকিদের মধ্যে একজন পড়ে যাওয়া গাছ ও অপর একজন ভেঙে পড়া প্রাচীরের আঘাতে প্রাণ হারান। অপর এক ব্যক্তি পানিতে ডুবে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। আজ মঙ্গলবার চেন্নাই পুলিশ এই তথ্য জানায়।
এই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের ফলে এক থেকে দেড় মিটার উঁচু জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়তে পারে অন্ধ্র প্রদেশের দক্ষিণের উপকূলীয় নিচু অঞ্চল। ঝড়ের প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যাবে বাপাতলা ও কৃষ্ণ জেলায়। আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাষ মতে, এর গতিবেগ সর্বোচ্চ ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে।
অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার আট জেলায় ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করেছে। পুডুচেরিতে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
জান-মালের ক্ষতি এড়াতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি কর্মকর্তাদের এই ঘূর্ণিঝড়কে গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড় কবলিত অঞ্চলে উদ্ধার ও ত্রাণকাজের জন্য ইতোমধ্যে দুই কোটি রুপি তহবিলের জোগান দেওয়া হয়েছে। নিচু এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে আনা হয়েছে এবং তাদের জন্য ৩০০ অস্থায়ী ত্রাণ শিবির তৈরি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্র থেকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, প্রয়োজন অনুযায়ী ভারতের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। বাড়তি সদস্যরাও যেকোনো মুহূর্তে এগিয়ে আসতে প্রস্তুত।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগের মহাপরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপত্র সতর্ক করেন, অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলবর্তী শহরগুলোতে নজিরবিহীন ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর পরিমাণ ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার হতে পারে।
তিনি জানান, এ ধরনের ঘূর্ণিঝড়ে ছোট ও মাঝারি গাছ উপড়ে যেতে পারে এবং বাঁশ ও মাটির তৈরি বাড়িঘরের বড় আকারের ক্ষতি হতে পারে। এ ছাড়া, টেলিফোন ও বিদ্যুতের খুঁটিগুলোও আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
চেন্নাইয়ে বৃষ্টি থেমে গেলেও শহরের বেশিরভাগ অংশ এখনো পানিতে নিমজ্জিত। নিচু অঞ্চলগুলো বড় আকারে প্লাবিত হয়েছে।
গতকাল চেন্নাই বিমানবন্দরের রানওয়েতে পানি ঢুকে পড়লে সব ধরনের উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল। আজ সকাল থেকে বিমানবন্দরের কার্যক্রম আবার শুরু হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, বিমানবন্দরে আটকে পড়া বহির্গামী যাত্রীরা ফ্লাইটের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন।
সতর্কতার অংশ হিসেবে ওডিশা সরকার দক্ষিণের জেলাগুলোতে উদ্ধারকর্মী মোতায়েন করেছে। উপকূলীয় ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে মাছ ধরার নৌকার মালিকদের সমুদের যেতে মানা করা হয়েছে।
Comments