‘মুক্তিযুদ্ধের চিকিৎসা ইতিহাস’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসার ইতিহাসভিত্তিক বই 'মুক্তিযুদ্ধের চিকিৎসা ইতিহাস' লিখেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ শাহাদুজ্জামান ও খায়রুল ইসলাম। ৫ বছর নানা পর্যায়ে গবেষণা করে লেখা বইটি প্রকাশ করেছে প্রথমা প্রকাশনী।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল হলে এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে আয়োজন করা হয় প্রকাশনা উৎসবের।
অনুষ্ঠানে আলোচক ও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতালের অন্যতম সংগঠক ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতালের নার্স পদ্মা রহমান, মুক্তিযুদ্ধকালীন চিকিৎসক কাজী মিসবাহুন নাহার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এ বি ম খুরশীদ আলম, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ বিশিষ্ট চিকিৎসকরা।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতালের অন্যতম সংগঠক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, 'এই প্রথম কোনো লেখক মুক্তিযুদ্ধকালীন চিকিৎসা ইতিহাসকে বইয়ের পাতায় তুলে এনেছেন। মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসকরাও যে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের মতো আরেকটি যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন তা অনেকেরই অজানা। এই গুরুত্বপূর্ণ বইটি মুক্তিযুদ্ধের চিকিৎসা ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক হিসেবে ভূমিকা রাখবে।'
বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতালের নার্স ও মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসায় অবদান রাখা পদ্মা রহমান বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধে আমাদের হাতেও অস্ত্র ছিল। আমরাও অস্ত্রও হাতে যুদ্ধ করেছি। তবে সেই অস্ত্র কোন মারণাস্ত্র নয়, জীবন বাঁচানোর অস্ত্র। আমাদের হাতে রাইফেলের বদলে ছিল অপারেশনের কা ছুরি, কাঁচি, ব্যান্ডেজ,যা দিয়ে আমরা প্রাণ বাঁচাতাম।'
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এ বি ম খুরশীদ আলম বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের ২ মে বাংলাদেশের প্রথম কোন অধিদপ্তর হিসেবে ডা. টি হোসেনের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জন্ম হয়। মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসা ইতিহাসের ক্ষেত্রে এই বইটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।'
মুক্তিযুদ্ধকালীন চিকিৎসক ডা. কাজী মিসবাহুন নাহার বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে পারা আমার ও অন্য চিকিৎসকদের জন্য বড় একটি প্রাপ্তি ছিল। জুন মাসে আমি মেডিকেল অফিসার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করি। মুক্তিযুদ্ধে পেশাজীবীদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শহীদ হয়েছেন চিকিৎসকরা।'
প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, 'এই ২ অনুসন্ধানী গবেষক দীর্ঘ সময় ধরে অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যে তথ্য- উপাত্ত বইয়ে তুলে ধরেছেন তা সমৃদ্ধ একটি গবেষণা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। বইটিকে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতারও একটি শ্রেষ্ঠ উদাহরণ বলা যায়। '
অনুষ্ঠানে 'মুক্তিযুদ্ধের চিকিৎসা ইতিহাস' বইটির লেখক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ শাহাদুজ্জামান ও খায়রুল ইসলাম বইয়ের নানা অধ্যায় ও মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
Comments