বাংলাদেশের এক অচ্ছেদ্য অংশ অন্নদাশঙ্কর রায়
অন্নদাশঙ্কর রায়ের জন্ম ১৫ মে ১৯০৪ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অধীন ঢেঙ্কানলে (বর্তমানে ওড়িয়া)। আর মারা যান ২৮ অক্টোবর ২০০২ সালে। তিনি ৯৮ বছর বেঁচে ছিলেন। অল্পের জন্যে তিনি শতবর্ষী খেতাবটি মিস করেছেন। লেখক পাঠকের হৃদয়ে বেঁচে থাকেন লেখালেখির মধ্য দিয়ে। ল্যাটিন আমেরিকান সাহিত্যিক হোর্হে লুইস বোর্হেসের বই বিষয়ক একটি ভিন্ন স্বাদের রচনা রয়েছে। হোর্হে লুইস বোর্হেস বলছেন, লেখকদের বইগুলো থাকে পাঠকের কাছে তাঁদের প্রতিনিধি হয়ে।
অন্নদাশঙ্কর রায়ের লেখায় তৎকালীন পূর্ব বাংলার গ্রামচিত্র উঠে এসেছে। তিনি যুক্তবঙ্গের স্মৃতি ও মুক্তবঙ্গের স্মৃতিতে উল্লেখ করেছেন, কেও যদি কেবল শহরগুলোই ঘুরে ঘুরে দেখত তাহলে তার মনে ধারণা জন্মাত যে বাংলাদেশ একটি হিন্দুপ্রধান প্রদেশ। কিন্তু একটু কষ্ট করে গ্রামগুলোর মাটি মাড়ালেই সেই ধারণা ধূলিসাৎ হতো। অবিভক্ত বাংলার অধিকাংশ গ্রাম ছিল মুসলিমপ্রধান। হিন্দু জমিদারদের জমিদারি যাওয়ার আগে থেকেই তারা গ্রাম ছাড়া হন । ইংরেজদের কুইট ইন্ডিয়া, হিন্দু জমিদারদের কুইট ভিলেজ, এর অনিবার্য পরিণতি পার্টিশনের পর পাকিস্তানের হিন্দুদের কুইট টাউন। পূর্ববঙ্গের শহরগুলো দেখতে দেখতে মুসলিমপ্রধান হয়ে যায়।
তিনি আরও লিখছেন, যেখানে শতকরা নব্বই জন চাষি মুসলমান সেখানে শতকরা নব্বই ভাগ জমির মালিক হিন্দু। … জমি থেকেই বাংলার হিন্দু মুসলমানদের সংঘর্ষ। তিনি মন্তব্য করেন-যেটা আসলে জমিঘটিত সেটাই ধর্মঘটিত হয়ে দাঁড়ায়।
তার জবানীতে ওঠে এসেছে মুসলিম মধ্যবিত্ত শ্রেণি বিকাশের মূল কারণ। তিনি লিখেছেন, র্যামেজ ম্যাকডোনাল্ডর কমিউনাল অ্যাওয়ার্ড ও ভারত সরকার তথা বাংলা সরকারের পিছিয়ে পড়া মুসলমানদের জন্য সরকারি চাকরিবাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাংলায় মুসলিম মধ্যবিত্ত শ্রেণি বিকাশে সাহায্য করেছে বলে উল্লেখ করেছেন। হিন্দুরা এ বিকাশ ভালোভাবে নেয়নি, যদি তারা এটা খুশি মনে মেনে নিতো তাহলে হয়ত মুসলমানেরা দেশভাগের কথা মুখে আনত না। তিনি মুসলমান সমাজে শ্রেণি বিভক্তি অর্থাৎ আশরাফ অর্থাৎ অভিজাত জমিদার ও আতরাফ অর্থাৎ অনভিজাত চাষি, জোলা ও জেলেদের কথাও উল্লেখ করতে ভুলেননি।
দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশভাগ অন্নদাশঙ্কর রায় মেনে নিতে পারেননি। তার সাহিত্য চর্চায় দেশভাগের বিরুদ্ধে তার অবস্থান ফুটে উঠেছে। যেমন খুকি ও খোকা কবিতায় লিখেছেন,
তেলের শিশি ভাঙল বলে
খুকুর পরে রাগ করো
তোমরা যে সব বুড়ো খোকা
ভারত ভেঙ্গে ভাগ করো
তার বেলা?
অন্নদাশঙ্কর রায় মনে করতেন দেশ স্বাধীন করাই শেষ কথা নয়। তিনি সংস্কৃতির বিবর্তন গ্রন্থের মুখবন্ধে লিখেছেন, ''আমরা ক্রমশ হৃদয়ঙ্গম করছি যে দেশকে স্বাধীন করাটাই যথেষ্ট নয়, দেশের মানুষকে স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে, কাজ করতে ও নির্মাণ করতে শেখাতে হবে। পশ্চিমের সঙ্গে আধুনিকের সঙ্গে পা মিলিয়ে নিতে হবে। পাশ্চাত্যের সঙ্গে ঐতিহ্যের অন্বয় রক্ষা করতে হবে। লোক সংস্কৃতির সঙ্গে জনগণের সঙ্গে যোগসূত্র অবিচ্ছিন্ন রাখতে হবে। তিনি ওপার বাংলার সঙ্গে পা ও মন মিলিয়ে চলার ওপর জোর দিয়েছেন। মানুষে মানুষে ঐক্যে তিনি বিশ্বাসী ছিলেন।
তিনি পথে প্রবাসে গ্রন্থে লিখেছেন- ''যেদিন আমি বিদেশ যাত্রা করেছিলুম সেদিন শুধু দেশ দেখতে যাইনি। গেছলুম মানুষকেও দেখতে, মানুষের সঙ্গে মিশতে, মানুষের সঙ্গে নানা সম্বন্ধ পাতাতে। দেশের প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট সৌন্দর্যের চেয়ে দেশের মানুষ সুন্দর। মানুষের অন্তর সুন্দর, বাহির সুন্দর, ভাষা সুন্দর, ভূষা সুন্দর দেশ দেখতে ভালো লাগে না, যদি দেশের মানুষকে ভালো না লাগে। ... যে দেশে যাও সেদেশে দেখবে মানুষের চেয়ে সুন্দর কিছু নেই, মানুষের সৌন্দর্যের ছোঁয়া লেগে বুঝি বাকী সব সুন্দর হয়েছে।'' দেশ-ভূগোলের নামে মানুষের বিভক্তি অন্নদাশঙ্কর রায়কে ক্ষুব্ধ করেছে।
অন্যদিকে সৃষ্টিশীল লেখকেরা পাঠকের বুকশেলফে থাকেন প্রতীকী রূপে। এ মুদ্রিত বই হয় পাঠকের সঙ্গে তাদের মিথোস্ক্রিয়ার প্রধান মাধ্যম। বই লেখককে বাঁচিয়ে রাখে। পাঠকের সঙ্গে লেখকের যোগাযোগ সময়োর্ত্তীণ বিষয়। সৃষ্টিশীল লেখকের মৃত্যু নেই। যেমন মৃত্যু নেই অন্নদাশঙ্কর রায়ের। পাবলো নেরুদার বয়স বন্দনা কবিতায় বলেছেন,
বয়সে বিশ্বাস নেই আমার...
তাহলে আমরা কী দিয়ে জীবন মাপবো
কেবল মিটার, কিংবা কিলোমিটার কিংবা বয়স দিয়ে...
যিনি দারুণভাবে জীবনের কথা বলে যান
বলে যান অনবরত জীবনের কথা
যিনি প্রস্ফুটিত হয়ে চলেছেন অনবরত
আসুন, তার জন্য বন্ধ করি
সময়ের মাপামাপি আর স্থল গণনা...(অনুবাদ আজফার হোসেন)
সৃষ্টিশীলতায় কালোত্তীর্ণ এক অধিনায়ক অন্নদাশঙ্কর রায়ের। এমন মানুষের মৃত্যু নেই। তিনি পাঠকের সঙ্গে রয়েছেন, রয়েছেন পাঠকের মনোজগতে। অন্নদাশঙ্কর রায় সৃষ্টি ও সংযুক্তিতে অনন্য। যা তাকে টিকিয়ে রেখেছে সগৌরবে। অন্নদাশঙ্কর রায়ের সৃষ্টিসম্ভার বৈচিত্র্যময় ও বিপুল। তিনি সমানতালে করাত চালিয়েছেন। শিল্প, সাহিত্য, প্রবন্ধ, কবিতা, উপন্যাস, স্মৃতিস্মরণে সমান গতিতে তিনি পারঙ্গম। যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানেই সোনা ফলিয়েছেন।
অন্নদাশঙ্কর রায়ের মানসজগৎ স্বতন্ত্র। তিনি ছিলেন গ্রহণোমুখ ব্যক্তিত্ব। তিনি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য এ দু'ধারা থেকে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছেন। সমন্বয় করেছেন। বলা যায় সমন্বয়বাদী লেখক। তিনি আধুনিকতা ও ঐতিহ্যকে একসুঁতোয় বাঁধতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি ঋদ্ধ মননের অধিকারী।
''অন্নদাশঙ্কর রায়ের প্রবন্ধ: বিষয়-বৈচিত্র্য ও ভাবনার ভিন্ন মাত্রা'' বিষয়ে ভারতের শিলিগুড়ির উত্তরবঙ্গ বিশ^বিদ্যালয়ে একটি পিএইচডি সম্পাদিত হয়েছে। গবেষক উত্তম দাস তার গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেছেন-''পরিবারের বৈষ্ণবীয় প্রভাব ও ওড়িয়ার সমন্বিত এক সংস্কৃতির মধ্যে তাঁর বেড়ে ওঠা। ব্যক্তি জীবনে রবীন্দ্রনাথ, প্রমথ চৌধুরী, গান্ধী ও টলস্টয়-এর ভাবধারার পাশাপাশি সবুজপত্রের প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের ভাবধারায় সমৃদ্ধ হন তিনি। গবেষক আরও উল্লেখ করেন, সমাজ সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়গুলোর সঙ্গে মানবজীবন কীভাবে জড়িয়ে রয়েছে তা তিনি স্বজ্ঞা ও মনন দিয়ে বিচার করেছেন। চিন্তার সচ্ছলতা, যুক্তিশীলতা, বিচক্ষণতা ও বিচারশীলতা, নৈতিকতা ও মানবিকতার প্রসাদ গুণে ও প্রাঞ্জল শৈলীতে ও শিল্পিতভাবে অসাধারণ সাহিত্যে রূপান্তরিত করেছেন''।
প্রকাশেও তিনি ছিলেন ঝরঝরে ও নির্ভার। প্রকাশের ভাষা স্বতন্ত্র, যুক্তিপূর্ণ, তথ্য ও উদ্ধৃতির মিশেল। তিনি আইসিএস কর্মকর্তা হিসেবে পেশাজীবন পার করলেও সাহিত্যিক পরিচয় সেটিকে ছাপিয়ে গেছে। লেখালেখির ব্যাপারে অন্নদাশঙ্কর রায় ছিলেন তীব্র গতিশীল।
অন্নদাশঙ্করের চিন্তার কেন্দ্রে ছিল আবহমান বাংলার সংস্কৃতি। তিনি বাংলা সংস্কৃতির সারবত্তা সিঞ্চনে ব্যাপ্ত ছিলেন আজীবন। তৎকালীন পূর্ববঙ্গ আজকের বাংলাদেশ তাঁর সাহিত্যচর্চার মূল খেত। তাঁর স্মৃতি, রচনায় বারবার ওঠে এসেছে পূর্ব বাংলার মানসচরিত।
অন্নদাশঙ্কর রায় তার 'যুক্তবঙ্গের স্মৃতি ও মুক্তবঙ্গের স্মৃতি'-তে লিখেছেন, ''প্রথম বয়সেই আমাকে এমন কয়েকটা সিদ্ধান্ত নিতে হয় যার ফলে আমার বাকি জীবনটাই যাই বদলে। বি-এ পাশ করার পর আমি সিদ্ধান্ত নিই আই-সি-এস পরীক্ষায় বসবো ও সফল হলে বিলেত যাব। তার বছরখানেক বাদে সিদ্ধান্ত নিই যে সাহিত্য সৃষ্টির কাজ শুধু বাংলাতে করব। ইংরেজিতেও না। ওড়িয়াতেও না। তার পরের বছর সিদ্ধান্ত নেই যে আমি কোন প্রদেশে নিযুক্ত হতে চাই জিজ্ঞাসা করলে আমি উত্তর দেব তখনকার দিনের বাংলাদেশ। ভারতের অন্য কোনো প্রদেশে নয়।" শান্তিনিকেতনে সরাসরি সাক্ষাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অন্নদাশঙ্কর রায়কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, '' তুমি বাংলাদেশ বেছে নিলে কেন'?'। তিনি উত্তর বলেছিলেন, ''আমি বাংলাসাহিত্যের লেখক। তাই বাংলাদেশ আমার প্রকৃত স্থান। ''
অন্নদাশঙ্কর রায়ের এ স্বীকারোক্তি তাঁর স্থান ও ভাষার প্রতি অনুরাগ প্রকাশ করে। তার জীবনবোধ বাংলার মাটি ও ভাষায় প্রোথিত। তিনি আরও বলেন, দেশ দেখা কেবল প্রকৃতিকে দেখা নয়, মানুষকেও দেখা।. . .আমি যাদের কথা লেখি তারা ব্যক্তি। তিনি পূর্ববাংলার সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবন নিপুণভাবে তুলে ধরেছেন। প্রশাসনিক ও বিচারিক দায়িত্ব পালনের সময় তিনি কাছ থেকে দেখেছেন বাংলার হিন্দু-মুসলমানদের অন্তঃসম্পর্ক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক পালাবদলে তাদের ভূমিকা।
নওগাঁয় অবস্থানকালীন অন্নদাশঙ্কর রায় পূর্ব বাংলার মাটি, মানুষ, নদী ও প্রকৃতির প্রেমে পড়েন। যুক্তবঙ্গের স্মৃতি ও মুক্তবঙ্গের স্মৃতি' তে তিনি উল্লেখ করেছেন- নওগাঁ মহকুমা সৃষ্টির মূলে গাঁজার চাষ। নওগাঁর যে পাড়াটি গাঁজা কালটিভেটার্স কোঅপারেটিভ সোসাইটি গড়ে তুলেছে সেটি একটি ছোটখাটো টাউনশীপ।
তাঁর এই প্রেম আরও প্রগাঢ় হয় কুষ্টিয়ায় মহকুমা হাকিমের দায়িত্ব পালনের সময়। 'জীবন যৌবন' গ্রন্থে তিনি লেখেন- ''আমরা কুষ্টিয়ায় যত সুখী ছিলুম আর কোথাও অত সুখী ছিলুম না। আমি তো ভেবেছিলুম অকালে অবসর নিয়ে কুষ্টিয়াতেই বসবাস করব। সেই মহকুমাতেই রবীন্দ্রনাথের শিলাইদহ আর লালন ফকিরের ছেঁউড়িয়া। তিনি এসময় লালনের ওপর বড় ধরনের কাজ করেন। তিনি বলেন, আমার মতে রাজশাহী, পাবনা ও কুষ্টিয়াই হচ্ছে সারা বাংলার হৃদয় ভূমি।''
তিনি আরও লিখেছেন (আইসিএস অফিসার) নিযুক্তির পর এক এক করে অনেকগুলি জেলায় কাজ শিখি ও কাজ করি। মুর্শিদাবাদ। হুগলি। বাঁকুড়া। রাজশাহী। চট্টগ্রাম। ঢাকা। আবার বাঁকুড়া। নদীয়া। আবার রাজশাহী। আবার চট্টগ্রাম। ত্রিপুরা। মেদিনীপুর। আবার বাঁকুড়া। আবার নদীয়া। বীরভূম। ময়মনসিংহ। হাওড়া। এখানে অবিভক্ত বাংলায় ছেদ। অতঃপর কলকাতা। আবার মুর্শিদাবাদ। আবার কলকাতা। একখানে চাকরিতে শেষ।
এ ছেদের আবেগঘন অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছে তাঁর 'জীবন যৌবন' গ্রন্থের শেষভাগে-''...ছিন্ন হয়ে গেল পূর্ববঙ্গের সঙ্গে আমার এতদিনের প্রশাসনিক সম্পর্ক। সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা বলতে যাকে বোঝায় তা পূর্ববঙ্গই। সোনার বাংলা যাকে বলা হয় সে-ও পূর্ববঙ্গ। হায়, সেখানে আমি বিদেশী।''
বাংলার রেনেসাঁসের শেষ প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃত অন্নদাশঙ্কর রায়। তার সাহিত্য সাধনায় ভারতীয় সংস্কৃতি ও ইউরোপীয় এনলাইটেনমেন্টের সমন্বয় ঘটেছিল। তিনি বাংলার রেনেসাঁস গ্রন্থে, রেনেসাঁস শব্দটি দারুণভাবে ব্যবচ্ছেদ করেছেন- ''রেনেসাঁসের প্রধান লক্ষণ হলো দিব্য চেতনার পরিবর্তে মানবিক চেতনা, ব্রহ্মজ্ঞানের পরিবর্তে বক্তৃজ্ঞান, পারলৌকিক বা অলৌকিক কার্যকারণ পরম্পরার পরিবর্তে ঐহিক বা প্রাকৃতিক কার্যকারণ পরম্পরা, ভক্তির পরিবর্তে যুক্তি, আপ্তবাক্যের পরিবর্তে প্রমাণসিদ্ধ বাক্য, অথরিটির পরিবর্তে লিবার্টি।"
অন্নদাশঙ্কর রায়ের মানসচরিত নির্মাণে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছে পূর্ব বাংলার মাটি, মানুষ ও প্রাকৃতি। তাঁর শাণিত জীবনবোধ ও ধারালো লেখনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে নানাভাবে। তিনি জীবনব্যাপী বাঙালিয়ানার সাধনা করেছেন, যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি দুই বাংলার সাহিত্য ও সাধনার সেতুবন্ধক।
পুনশ্চ 'যুক্তবঙ্গের স্মৃতি ও মুক্তবঙ্গের স্মৃতিতে তিনি লিখেছেন, ''পূর্ববঙ্গের সঙ্গে সম্পর্কটা কোনোদিনই জন্মসূত্রে ছিল না। পুরুষাক্রমিকও নয়। সম্পর্কটা কর্মসূত্রে। ভালোবাসার রেশমী সুতো, সেটিও তার একটি সূত্র। সেই সূত্রে আমি এখনো তার সঙ্গে বাঁধা। তার নাম এখন হয়েছে ''গণপ্রজাতন্ত্রী স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। সংক্ষেপে বাংলাদেশ।''
এমনি বাংলাদেশের সঙ্গে অন্নদাশঙ্কর রায়ের সম্পর্ক। কীর্তিমানের প্রতি শ্রদ্ধা অনেক।
খান মো. রবিউল আলম: লেখক ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ
Comments