ত্বকে স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ কেন হয়, সমাধান কী

স্ট্রেচ মার্ক
ছবি: সংগৃহীত

ত্বকের স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ শারীরিক যন্ত্রণার কারণ না হলেও অস্বস্তিদায়ক। স্ট্রেচ মার্ক কেন হয় ও করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. আসমা তাসনীম খানের কাছ থেকে।

ত্বকে স্ট্রেচ মার্ক কী

ডা. আসমা তাসনীম বলেন, স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ হলো ত্বকের এমন এক ধরনের দাগ, যা ত্বক প্রসারিত বা অতিরিক্ত টান পড়ার ফলে তৈরি হয়। স্ট্রেচ মার্ক যখন তৈরি হয় শরীরে তখন সেটি সাধারণত লালচে, গোলাপি, বেগুনি রঙের দাগ আকারে দেখা যায়। ধীরে ধীরে তা হালকা হয়ে সাদা রঙের সরু দাগে পরিণত হয়।

সাধারণত পেট, বুক, তলপেট, উরু, নিতম্ব, বাহু, কাঁধ এই জায়গাগুলোতে স্টেচ মার্ক বেশি হয়। পায়ের নিচের অংশ হাঁটু থেকে গোড়ালিতেও স্ট্রেচ মার্ক দেখা যায়।

স্ট্রেচ মার্ক পড়ার কারণ

বিভিন্ন কারণে ত্বকে স্ট্রেচ মার্ক তৈরি হতে পারে। যেমন-

১. হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে হতে পারে। শরীরের সারফেস এরিয়া বা উচ্চতা ও বয়সের তুলনায় ওজন অনেক বেড়ে যাওয়ার কারণে স্ট্রেচ মার্ক দেখা দেয়।

২. বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর-কিশোরীর বিকাশ হঠাৎ করে হয়। ওই সময় ত্বক অনেক দ্রুত টান ধরতে পারে এবং ত্বক ফেটে ফেটে যায়। কোলোজেন ফাইবারগুলো ভেঙে যাওয়ার কারণে স্ট্রেচ মার্ক তৈরি হয়।

৩. গর্ভাবস্থায় ত্বক প্রসারিত হওয়ার ফলে অন্তঃসত্ত্বা নারীর ত্বকে স্ট্রেচ মার্ক দেখা দেয়।

৪. দীর্ঘদিন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ-ক্রিম ব্যবহার করার ফলে চামড়া পাতলা হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে স্ট্রেচ মার্ক তৈরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

৫. হরমোনজনিত কারণেও হতে পারে।

৬. জেনেটিক প্রভাব অর্থাৎ পরিবারে কারো স্ট্রেচ মার্ক থাকলে অন্যদেরও হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

স্ট্রেচ মার্ক দূর করার উপায়

ডা. আসমা তাসনীম বলেন, স্ট্রেচ মার্ক বা ফাট দাগ কখনোই পুরোপুরি নিরাময় হয় না। অনেকে স্ট্রেচ মার্ক দূর করার জন্য অয়েল ম্যাসাজ করেন, কোকোনাট অয়েল, অলিভ অয়েল, ভ্যাসলিনসহ বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করেন। এগুলো ব্যবহারে ত্বকের আদ্রর্তা রক্ষা হয় কিন্তু ফাটা দাগ কমাতে খুব বেশি প্রভাব পড়ে না।

স্ট্রেচ মার্কের প্রধান চিকিৎসা হিসেবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেক বেশি স্ট্রেচ মার্ক কমানো যেতে পারে। এটিকে স্কার রিভিশন বলা হয়। সার্জারি বা নন সার্জিক্যাল পদ্ধতির মাধ্যমে স্কার রিভিশন করা হয়। যেমন- ফ্র্যাকশনাল লেজার, পিআরপি মাইক্রোনিডলিং, এমএনআরএফ বা মাইক্রোনিডলিং ও রেডিওফ্রিকোয়েন্সি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় স্ট্রেস মার্কের চিকিৎসায়। আরবিএম লেজার থেরাপি প্রয়োগেও স্ট্রেচ মার্ক অনেকটা কমে যায়। চিকিৎসায় স্ট্রেচ মার্ক ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কমতে পারে, দাগ হালকা হয় কিন্তু ত্বক আগের অবস্থায় কখনোই ফিরে যায় না।

এছাড়া ট্রেটিনোইন ক্রিম যেটি ভিটামিন এ এর ডেরিভেটিভ এবং পেপটাইড কন্টেনিং ক্রিম দীর্ঘসময় ব্যবহার করার ফলে নতুন স্ট্রেচ মার্ক হালকা করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন ঘরোয়া পদ্ধতিতে স্ট্রেচ মার্ক কমানোর কোনো সুযোগ নেই। স্ট্রেচ মার্ক কমাতে প্রয়োজনে অবশ্যই চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Kuet students set fire to symbolic VC chair

The ongoing protests stem from a clash between two student groups on February 18

53m ago