কাউকে ক্ষমা করে এগিয়ে যাবেন যেভাবে

ক্ষমা
ছবি: সংগৃহীত

মানুষের বিভিন্ন অনুভূতির মধ্যে রাগ, ক্ষোভ, অভিমান অন্যতম। অনেক সময় বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে আমাদের মনোমালিন্য হয়। কখনো কখনো রাগ করে আমরা সেই মানুষটির সঙ্গে কথা বলা বা যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। পরিবারের কাছের মানুষ, বন্ধু, সহকর্মী যার সঙ্গেই রাগ বা মনোমালিন্য হোক না কেন, দীর্ঘদিন সেই রাগ কি পুষে রাখা উচিত?

মাঝে মাঝে কাউকে ক্ষমা করা খুব কঠিন মনে হতে পারে। তবে কিছু ক্ষেত্রে ক্ষমা করে ইতিবাচক চিন্তা নিয়ে সামনে এগিয়ে গেলে মানসিক শান্তি মিলবে। যদি অপর মানুষটি আপনার জীবনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে এবং আপনার কাছের কেউ হয় তাহলে তাকে ক্ষমা করার মানসিকতা রাখুন। কীভাবে কাউকে ক্ষমা করবেন তার ৫টি উপায় নিয়ে কথা বলব আজ।

খোলাখুলিভাবে কথা বলুন

যেকোনো সমস্যা সমাধানে যোগাযোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে ক্ষমা করতে চাইলে প্রথমে তার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করুন। আপনি তার কোন আচরণে বিরক্ত হয়েছেন বা ওই মুহূর্তে আপনি তার কাছ থেকে কী রকম ব্যবহার আশা করছিলেন, তা নিয়ে কথা বলুন। কথা বলার সময় কোনো পক্ষই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে কথা বলবেন না। গঠনমূলকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে অপরজনকে ক্ষমা করার চেষ্টা করুন। তবে যদি অপরজন কথা বলতে আগ্রহী না হয় অথবা উল্টো নেতিবাচক কথা বলে তাহলে তাকে এড়িয়ে চলাই ভালো। তবে নিজের মানসিক প্রশান্তির জন্য মনের কথাগুলো কোথাও লিখে ফেলতে পারেন।

ইতিবাচক দিকের কথা লিখে রাখুন

অনেকের জার্নালিং করার অভ্যাস রয়েছে। আপনার নিত্যদিনের বিভিন্ন বিষয় ছাড়াও জীবনের এরকম ঘটনা যা  আপনার মনে আঘাত দিয়েছে, এ ধরনের বিষয়গুলো লিখে ফেলতে পারেন। তবে সেই বিষয়গুলো থেকে আপনি কী শিক্ষা পেয়েছেন সেগুলোতেই গুরুত্ব দিন। আবেগ দিয়ে চিন্তা না করে বরং এরকম অবস্থা থেকে আপনি কী শিখেছেন সেগুলো লিখে ফেলুন। এর মাধ্যমে আপনি নিজের বিষণ্ণতা কাটিয়ে নিজের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারবেন।

সহানুভূতি প্রকাশ করুন

ক্ষমার সঙ্গে 'সহানুভূতি' শব্দটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সহানুভূতি বাড়ানোর মাধ্যমে আপনি অন্যের জায়গায় নিজেকে চিন্তা করে দেখতে পারবেন। সহানুভুতি আপনাকে ক্ষমাশীল করে তুলবে। গবেষণায় দেখা গেছে, কাউকে ক্ষমা করার ক্ষেত্রে সহানুভূতি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারো সঙ্গে মনোমালিন্য হলে অপরজনকে শত্রু মনে না করে তাকে বুঝতে চেষ্টা করুন। ভেবে দেখুন তার এ ধরনের ব্যবহারের কারণ কী বা তিনি বর্তমানে কোন খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন কি না।  এভাবে চিন্তা করে দেখলে আরেকজনকে ক্ষমা করা সহজ হয়ে যাবে। এর সঙ্গে আরেকজনের ভালো গুণগুলো নিয়ে চিন্তা করে তাদেরকে সুযোগ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।

নিজের ব্যাপারে ভাবুন এবং এগিয়ে যান

মনে করুন, আপনার অফিসের একজন সহকর্মী আপনার কাজের কৃতিত্ব নিয়ে নেন, সবার সামনে আপনাকে অপমান করেন এবং বাকিদের সঙ্গে আপনাকে নিয়ে সমালোচনায় মেতে থাকেন। এরকম পরিস্থিতিতে আপনি কি করবেন? আপনি সরাসরি তার সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারেন, যদি সে তার ভুল বুঝতে না পারে তবে আপনি পরবর্তী পদক্ষেপে যেতে পারেন। যেগুলো হলো- বিষয়টি অফিসে জানানো, অন্য বিভাগে চলে যাওয়া অথবা চাকরি পরিবর্তন করা। ক্ষমা করার মানে এই না যে আপনি নিজে মানসিক কষ্ট সহ্য করে কারও সঙ্গে হাসি মুখে কথা বলবেন। কেউ যদি বারবার একই ভুল করতে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার কিছু করার নেই। নিজেকে তার থেকে দূরে রেখে এগিয়ে যান।

প্রয়োজনে সাহায্য নিন

অতীতের কথা ভুলে এগিয়ে যাওয়া খুব সহজ ব্যাপার নয়। বিশেষ করে যদি আপনি খুব ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যান এবং এই ট্রমা ভুলতে না পারেন তবে আপনাকে অবশ্যই সাহায্য নিতে হবে। কোনো বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিয়ে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যান। একজন বিশেষজ্ঞ আপনার এ ধরনের অনুভূতি নিয়ে কাজ করে আপনাকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারবেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Sinner dethrones Alcaraz to capture maiden Wimbledon crown

Jannik Sinner downed Carlos Alcaraz 4-6, 6-4, 6-4, 6-4 on Sunday to win his first Wimbledon title, gaining sweet revenge for his painful defeat in the French Open final.

4h ago