গ্রিস থেকে লন্ডনগামী ফ্লাইটে টার্বুলেন্স, আহত ২

বিমানবন্দরে ইজিজেট এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ। ফাইল ছবি: রয়টার্স
বিমানবন্দরে ইজিজেট এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ। ফাইল ছবি: রয়টার্স

সাম্প্রতিক সময়ে এয়ার টার্বুলেন্সের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। মে মাসে প্রবল টার্বুলেন্সের ঘটনায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে একজন নিহত হওয়ার পর আরও বেশ কয়েকটি ফ্লাইটে টার্বুলেন্সের তথ্য পাওয়া গেছে। এবার তালিকায় যোগ হল ইজিজেটের লন্ডনগামী ফ্লাইট।

গতকাল বুধবার এ বিষয়টি জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

গ্রীসের করফু থেকে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রারত ফ্লাইটটিতে টার্বুলেন্স  দেখা দেয়।

১৯ আগস্ট ইজিজেটের ফ্লাইট নম্বর ৮২১০ করফু থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর উড়োজাহাজটি রোমে অবতরণ করতে বাধ্য হয়। ইতালির আকাশসীমায় টার্বুলেন্সের জেরে দুই ক্রু সদস্য আহত হন।

বিপর্যস্ত যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য ওপর একটি উড়োজাহাজ পাঠানো হয়। সে উড়োজাহাজে চেপে তারা একই দিন যুক্তরাজ্যে পৌঁছান।

গ্রীসের করফু শহরের একটি রিসোর্ট। ফাইল ছবি: রয়টার্স
গ্রীসের করফু শহরের একটি রিসোর্ট। ফাইল ছবি: রয়টার্স

টার্বুলেন্সের সময় সিট বেল্ট বেঁধে রাখার সতর্কতাসূচক বার্তা দেখানো হচ্ছিল। যার ফলে যাত্রীদের বেশিরভাগই নিজ নিজ সিটে ছিলেন এবং কেউ আহত হননি।

ইজিজেটের মুখপাত্র বিবৃতিতে জানান, '১৯ আগস্ট করফু থেকে লন্ডনগামী ফ্লাইট ইজেডওয়াই৮১২০ টার্বুলেন্সের মধ্য দিয়ে যায়। যার ফলে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে দুই কেবিন ক্রু সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি বিচারে ফ্লাইট ক্যাপ্টেন রোমে উড়োজাহাজ জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন। অবতরণের পর ক্রু সদস্যদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।'

যাত্রীদের অনেকে গ্রীসের করফু শহরে গ্রীষ্মের ছুটি কাটিয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরছিলেন।

এয়ারবাস এ৩২০ মডেলের উড়োজাহাজটি ৭৫ মিনিটের এই ফ্লাইট সর্বোচ্চ ৩১ হাজার ফুট উচ্চতায় ওঠে এবং এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৫০০ নট (ঘণ্টায় ৫৭৫ মাইল)।

ইতালির জাতীয় উড্ডয়ন নিরাপত্তা সংস্থা অ্যাজেনজিয়া নাজিওন্যাল পের লা সিকুরেজ্জা দেল ভোলো (এএনএসভি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইতালির আকাশসীমায় উড়োজাহাজটি টার্বুলেন্সের শিকার হয়।

সংস্থাটি জানায়, 'ক্রুদের আঘাতের মাত্রার বিচারে এএনএসভি এ ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং ঘটনার বিস্তারিত জানতে একটি নিরাপত্তা তদন্ত প্রক্রিয়া চালু করেছে।'

এ সপ্তাহে দক্ষিণ ইতালিতে ঝড়ো আবহাওয়া বিরাজ করছে।

উড়োজাহাজটি টার্বুলেন্সের শিকার হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই সিসিলিতে একটি ইয়ট ডুবে যায়। টর্নেডোর আঘাতে ইয়টডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অপর এক যাত্রী এখনো নিখোঁজ আছেন।

ইজিজেটের উড়োজাহাজটি এখনো রোমের ফিউমিচিনো বিমানবন্দরে রয়েছে এবং এটি এখনো উড্ডয়নের জন্য প্রস্তুত নয় বলে জানিয়েছে ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইট রাডার ২৪।

উড়োজাহাজের যাত্রী ও ত্রু হতাহতের সবচেয়ে বড় কারণের মধ্যে বিধ্বস্ত হওয়ার পরেই টার্বুলেন্সের স্থান। এই তথ্য জানিয়েছে  যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় উড়োজাহাজ চলাচল প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ডের মতে, টার্বুলেন্স এখন খুবই সাধারণ ঘটনা। বিভিন্ন ফ্লাইটে এটি নিয়মিত ঘটছে।

মার্কিন জাতীয় আবহাওয়া গবেষণাকেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর টার্বুলেন্সের কারণে যাত্রী ও ক্রু আহত হচ্ছে, ফ্লাইট বিলম্বিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রতি বছর এ বাবদ ক্ষতির পরিমাণ ৫০ কোটি ডলার বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের এই ফ্লাইটে ২০২৪ সালের মে মাসে টার্বুলেন্সে একজনের প্রাণহানি হয়। ফাইল ছবি: রয়টার্স
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের এই ফ্লাইটে ২০২৪ সালের মে মাসে টার্বুলেন্সে একজনের প্রাণহানি হয়। ফাইল ছবি: রয়টার্স

বিশেষজ্ঞরা হুশিয়ারি দিয়েছেন, জলবায়ু সংকট ঘনীভূত হওয়ার পাশাপাশি টার্বুলেন্সের সংখ্যা ও মাত্রাও বাড়বে।

ইতোমধ্যে এ বছর টার্বুলেন্সের একাধিক ঘটনা সম্পর্কে জানা গেছে।

জুলাইতে ৩০ যাত্রী মাদ্রিদ থেকে উরুগুয়ের মন্টিভিডিও অভিমুখী এয়ার ইউরোপার ফ্লাইটে টার্বুলেন্সের জেরে ৩০ জন আহত হন।

মে মাসে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের এসজি৩২১ ফ্লাইটে টার্বুলেন্সে এক ব্রিটিশ যাত্রী নিহত ও ৭০ জন আহত হলে এটি ব্যাংককে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ফ্লাইটে টার্বুলেন্সজনিত কারণে আঘাত থেকে নিজে সুরক্ষিত রাখার সবচেয়ে ভালো উপায় হল সর্বক্ষণ সিটবেল্ট বেঁধে রাখা। সৌভাগ্যজনকভাবে ইজিজেটের ঐ ফ্লাইটের যাত্রীরা তা করেছিলেন।

 

Comments

The Daily Star  | English
Overall situation of foreign direct investment

Net foreign direct investment hits six-year low

The flow of foreign direct investment (FDI) in Bangladesh fell to $104.33 million in the July-September quarter of fiscal year 2024-25, the lowest in at least six years, as foreign investors stayed away from Bangladesh amid deadly political unrest, labour agitation, and a persistent economic crisis.

13h ago