নওয়াজ-ইমরানের পাল্টাপাল্টি বিজয়ের ভাষণ, সরকার গঠন করবে কারা

ইমরান খান ও নওয়াজ শরীফ। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে বিজয় দাবি করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান। তার দল পিটিআই দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে না পারলেও এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়ে এগিয়ে রয়েছেন পিটিআই–সমর্থিত প্রার্থীরা।

অন্যদিকে, আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিততে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন। 

পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ২৬৫ আসনের মধ্যে ২৪৪ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ৯৬ আসনে জয় নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। অন্যদিকে, একক দল হিসেবে সবথেকে বেশি আসন পেয়েছে নওয়াজের দল, পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। ২৪৪ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে দলটি ৭০ আসনে জয় পেয়েছে।

যেহেতু ইমরান খানের দল পিটিআই এবার একক দল হিসেবে ভোটে লড়েনি, তাই সমর্থিত প্রার্থীরা এগিয়ে থাকলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে ধরা যাচ্ছে না তাদের। এদিকে, নওয়াজ শরিফ বিজয়ের ঘোষণা করলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠন করতে পারবে না তার দল। তাই জোট গঠনের জন্য ইতোমধ্যেই অন্যান্য রাজনৈতিক দলের শরণাপন্ন হচ্ছেন তিনি। 

শুক্রবার লাহোর শহরে তার দলের কার্যালয়ের বাইরে সমর্থকদের উদ্দেশে এক বক্তৃতায় নওয়াজ শরীফ স্বীকার করেছেন যে তার দল পিএমএল-এন এককভাবে সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় আসনে জয়ী হতে পারেনি। তিনি অন্য প্রার্থীদের তার সাথে জোটে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। 

জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো দল এককভাবে সরকার গড়তে প্রয়োজনীয় আসন পাচ্ছে না, এটা প্রায় নিশ্চিত। এ পরিস্থিতিতে জোট সরকার গড়তে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। 

এর আগে ২০২২ সালে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পিপিপি ও পিএমএল-এন একসঙ্গে জোট গড়েছিল।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার কারাবন্দি থাকায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে বানানো এক ভিডিও বার্তা ইমরান খানের ভেরিফায়েড এক্স হ্যান্ডলে (টুইটার) পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে তিনি বলেন, 'এখন কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না। আপনারা চিন্তা করবেন না, উদযাপন করুন এবং আল্লাহর শুকরিয়া করুন। দুই বছরের নিপীড়ন ও অবিচারের পরও আমরা দুই–তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচনে জিতেছি।'

ডন-এর খবরে বলা হয়েছে, ভোটে পিটিআইয়ের সাফল্যের পরও বেশ কিছু প্রতিকূলতা রয়েছে দলটির। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক দলটির প্রতীক কেড়ে নেওয়া এবং শীর্ষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের নেতাদের কারাগারে পাঠানো ও মামলা রয়েছে। 

তবে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন দলটির নির্বাচনি প্রতীক কেড়ে নিলেও পিটিআইয়ের নিবন্ধন বাতিল করেনি। আইনত পিটিআই এখনো একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিদ্যমান।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যদি পার্লামেন্টের বৃহত্তম গোষ্ঠী হয়ে যান তাহলে তাদেরকে একটি বিদ্যমান রাজনৈতিক দলে যোগদান করতে হবে। শোনা যাচ্ছে, মজলিশ ওয়াহদাত-ই-মুসলিমিন (এমডব্লিউএম) দলের সঙ্গে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যোগ দিতে পারেন। এই দলে যোগ দিলে তারা সংরক্ষিত আসনের ভাগও পেয়ে যাবেন। এরপর তারা পার্লামেন্টের নেতা হওয়ার জন্য নিজেদের একজন প্রার্থী দিতে পারবেন।

তবে শুক্রবার বিবিসিকে ইমরান খানের সাবেক বিশেষ সহকারী জুলিফকার বুখারি বলেন, 'ইমরান খানকে যতদূর জানি এবং আমাদের রাজনৈতিক দল পিটিআই-এর নীতি সম্পর্কে যতদূর জানি, আমার মনে হয় না আমরা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোয়ালিশনে যাব।'

 

Comments

The Daily Star  | English
eid-ul-azha emergency cases at pongu hospital

An Eid evening at Pongu Hospital: overflowing emergency, lingering waits

The hospital, formally known as NITOR, is a 1,000-bed tertiary medical facility that receives referral patients from all over the country

3h ago