ইউক্রেনে যা গণহত্যা, গাজায় কেন তা নয়

বিশ্বের দুই প্রান্তের যুদ্ধে ইউক্রেনীয়রা গণহত্যার শিকার হচ্ছে বলে দাবি জানানো হলেও, গাজায় গণহত্যার অভিযোগকে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র।
ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মরদেহের সামনে শোক প্রকাশ করছেন আত্মীয় পরিজন। ছবি: এএফপি

সদ্য বিদায় নেওয়া ২০২৩ সাল ছিল যুদ্ধের বছর। সাম্প্রতিক ইতিহাসে একইসঙ্গে বিশ্বের দুই প্রান্তে দুটি বড় আকারের যুদ্ধের নজির নেই। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসন, যা এখনো চলছে। অন্যদিকে গত বছরের অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্যে গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে দুই দেশের প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর মধ্যে অপেক্ষাকৃত দুর্বল ইউক্রেনের শক্তির যে ঘাটতি, তা পূরণে এগিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র দেশগুলো।

বিপরীতে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে হামাসের যে কথিত যুদ্ধ তার মূল্য দিতে হচ্ছে গাজার নিরীহ, নিরপরাধ ও বেসামরিক বাসিন্দাদের। এক্ষেত্রে অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি সরকার, আরব লীগ বা অন্য কোনো দেশ গাজার বাসিন্দাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না কিংবা রাখছে না। এদিকে আগ্রাসী ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য মিত্রদের বড় আকারের সামরিক সহায়তা দেওয়ার কাজ থেমে নেই।

বিশ্লেষকদের অভিমত, ইউক্রেন বছরের পর বছর রাশিয়ার হামলা ঠেকাতে সক্ষম। কিন্তু গাজার ২৩ লাখ মানুষের বেশিরভাগই ক্ষুধার্ত, আহত, অসুস্থ ও নিহত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। ইতোমধ্যে এই জনগোষ্ঠীর ৮০ শতাংশের বেশি বাস্তুচ্যুত হয়ে অনিশ্চিত জীবনযাপন করছেন। গাজার বেশিরভাগ দালান মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি ট্যাংক ও বিমান।

এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের দুই প্রান্তের যুদ্ধে ইউক্রেনীয়রা গণহত্যার শিকার হচ্ছে বলে দাবি জানানো হলেও, গাজায় গণহত্যার অভিযোগকে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র।

এটি মানবাধিকার প্রশ্নে দ্বিমুখী পশ্চিমা নীতির আরেকটি অকাট্য প্রমাণ হিসেবে হাজির করছেন বিশ্লেষকরা।

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা

৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় নিহত হন প্রায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নাগরিক, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক ব্যক্তি। এরপর পরবর্তী তিন মাসে অল্প কয়েকজন জিম্মি ছাড়া আর কোন ইসরায়েলি বেসামরিক ব্যক্তি নিহতের খবর পাওয়া যায়নি।

আল জাজিরা জানিয়েছে, হামাসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হামলা শুরুর পর ইসরায়েল তার ১৭২ সেনা হারিয়েছে। অপরদিকে, ডিসেম্বরে ইসরায়েলের সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, যুদ্ধে প্রতি দুই জন বেসামরিক ব্যক্তির বিপরীতে একজন করে হামাস যোদ্ধা নিহত হচ্ছে। এই সূত্র মতে, এই যুদ্ধে অন্তত সাত হাজার হামাস যোদ্ধা প্রাণ হারিয়েছেন বলে ধরে নেওয়া যায়। সেসময় নিহত বেসামরিক ফিলিস্তিনির সংখ্যা ছিল প্রায় ১৫ হাজারের মতো।

গাজা সীমান্তে ইসরায়েলি ট্যাংক। ছবি: এএফপি

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ২৩ হাজার ২১০ ফিলিস্তিনি। গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য প্রকাশ করেছে।

মন্ত্রণালয় তাদের বিবৃতিতে জানায়, আরও ৫৯ হাজার ১০০ জন আহত হয়েছেন। হতাহতের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।

ইসরায়েলের দাবি, হামাস যোদ্ধারা গাজার বেসামরিক ব্যক্তিদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা বেসামরিক ব্যক্তিদের মাঝে ও বেসামরিক স্থাপনায় লুকিয়ে থাকে। যে কারণে হাসপাতাল, মসজিদ, গির্জা ও স্কুলের মতো স্থাপনাও ইসরায়েলি হামলা থেকে রেহাই পায়নি।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা

নভেম্বরে জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে নিহত হয়েছেন ইউক্রেনের দশ হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। রাশিয়া তাদের বেসামরিক ব্যক্তি নিহতের কোন তথ্য প্রকাশ করেনি।

২০২২ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই যুদ্ধে ৫৬০ জনেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে আর ১৮ হাজার ৫০০ মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইউক্রেনে জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ মিশন।

তবে এই যুদ্ধে নিহত ও আহত সেনার সংখ্যা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। ডিসেম্বরে মার্কিন গোয়েন্দা বাহিনীর এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, এই যুদ্ধে তিন লাখ ১৫ হাজার সেনা হারিয়েছে রাশিয়া। যুদ্ধ শুরুর আগে তাদের নিয়মিত সেনার সংখ্যা ছিল তিন লাখ ৬০ হাজার। অর্থাৎ দুই বছরের যুদ্ধে ৮৭ শতাংশ সেনা হারিয়েছে রাশিয়া। তবে এই সংখ্যায় আহত ও নিহত উভয়ই অন্তর্ভুক্ত।

ইসরায়েল-গাজা সীমান্তে ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র। ছবি: এএফপি

নভেম্বরে ইউক্রেনের এক নাগরিক সমাজ সংগঠনের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, এই যুদ্ধে ৩০ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। আগস্টে নিউ ইয়র্ক টাইমস মার্কিন সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছিল, সংখ্যাটি প্রায় ৭০ হাজার। একই প্রতিবেদনে নিহত রুশ সেনার সংখ্যা এক লাখ ২০ জন বলে দাবি করা হয়।

সব মিলিয়ে বলা যায়, এই যুদ্ধে নিহত বেসামরিক বাসিন্দাদের সংখ্যা নিহত সেনাদের তুলনায় খুবই নগণ্য।

গণহত্যা প্রসঙ্গে

১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিশ্বব্যাপী গণহত্যা বন্ধে 'জেনোসাইড কনভেনশন' চুক্তি উপস্থাপন করা হয়। ২০২২ সাল নাগাদ ১৫২টি সদস্য দেশ এতে সাক্ষর করেছে, যার মধ্যে আছে ইউক্রেন, রাশিয়া, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন। স্বাক্ষরকারী সব দেশ এই চুক্তির শর্ত মানতে বাধ্য।

এই চুক্তিতে উল্লেখ করা গণহত্যার সংজ্ঞা হল, 'কোনো জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের সদস্যদের আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংসের অভিপ্রায়ে সংঘটিত কার্যক্রম'।

২০২ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) রাশিয়ার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনে ইউক্রেন। অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা হিসেবে আন্তর্জাতিক আদালত রাশিয়াকে তাৎক্ষণিকভাবে এই অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেয়।

রাশিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে। এই অভিযোগ ও আপিল নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়নি আইসিজে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে একাধিকবার বিষয়টিকে 'গণহত্যা' বা 'যুদ্ধাপরাধ' বলে অভিহিত করলেও গণহত্যার বিষয়টি এখনো প্রমাণিত নয়।

টাইম ম্যাগাজিন মার্চে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পূর্ব ইউরোপ ও সেন্ট্রাল এশিয়া কার্যালয়ের প্রধান ডেনিস ক্রিভোশিভের বরাত দিয়ে জানায়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ প্রমাণের স্বপক্ষে এখনো যথেষ্ঠ প্রমাণ নেই।

'এ ধরনের অভিযোগ অনেক গুরুতর এবং এই শব্দটি ব্যবহারের আগে সবগুলো বিষয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে', যোগ করেন তিনি।

অপরদিকে, ডিসেম্বরে গাজায় 'গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডে' জড়িত থাকার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, 'ইসরায়েল গাজায় আন্তর্জাতিক অপরাধ, যেমন—মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ, এর পাশাপাশি গণহত্যা বা এ সম্পর্কিত অপরাধের সীমারেখা লঙ্ঘন করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।'

গণহত্যার অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন' দাবি করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, 'ইসরায়েল ঘৃণাভরে দক্ষিণ আফ্রিকার এই অপবাদ প্রত্যাখ্যান করছে।'

এর প্রেক্ষাপটে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার গতকাল বুধবার মন্তব্য করেন, গাজায় এ ধরনের কার্যক্রম হচ্ছে বলে মনে করে না যুক্তরাষ্ট্র।

মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মিলার বলেন, 'এ ধরনের অভিযোগকে হালকা ভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে আমরা এমন কোনো কর্মকাণ্ড দেখিনি যাকে গণহত্যা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায়। এটাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণ।'

দুই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা

উভয় যুদ্ধেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের অবস্থানগত কারণে কূটনৈতিক ভাষাতেও রয়েছে আকাশ-পাতাল পার্থক্য।

মূলত ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও সামরিক স্থাপনার বিরুদ্ধে রাশিয়ার হামলাকে, 'সহিংস, বর্বর, যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা'—এ ধরনের সব বিশেষণেই বিশেষায়িত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

অপরদিকে, গাজার নিরীহ ও নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর সর্বাত্মক হামলার ক্ষেত্রে দেশটি বলছে, 'গণহত্যা হচ্ছে না' বা তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ২২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হলেও তারা বলছে, 'ইসরায়েল এমন কিছু করেনি যাকে গণহত্যা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যায়'।

বারবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, রাশিয়াকে বিরত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক বিধিনিষেধ আরোপ করে যাচ্ছে। ইউক্রেনকে সরবরাহ করছে অত্যাধুনিক অস্ত্র, সরঞ্জাম ও অর্থ। তাদের দাবি, ইউক্রেনকে সুরক্ষা দিতে এ সব অস্ত্র দেওয়া হচ্ছে।

বিপরীতে নির্যাতিত ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর ওপর ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার রসদ যোগাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের জন্য স্বাভাবিক সময়েই প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের সুনির্দিষ্ট সামরিক বাজেট রয়েছে। এখন যুদ্ধকালীন সময়ে তা কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই সর্বাত্মক হামলার বিরুদ্ধে নিন্দা জানালেও যুক্তরাষ্ট্র এখনো ইসরায়েলের প্রতি অন্ধ সমর্থন বজায় রেখেছে।

২০২২ এর ডিসেম্বরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হোয়াইট হাউসে এসে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফাইল ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের এই দ্বৈত ভূমিকা অস্বাভাবিক মনে হলেও অপ্রত্যাশিত নয়। আগ্রাসী ইসরায়েলের প্রধান মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র। অপরদিকে, রাশিয়াকে সেই স্নায়ুযুদ্ধের আমল থেকেই বড় শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে দেশটি।

দুই যুদ্ধের শুরু যেভাবে

ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণের পাশাপাশি দেশটি থেকে উগ্র জাতীয়তাবাদ দূর করার উদ্দেশ্যে রাশিয়া তাদের 'বিশেষ সামরিক অভিযান' চালাচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

রাশিয়া আরও দাবি করে, তারা বেসামরিক ব্যক্তি বা অবস্থানে হামলা চালাচ্ছে না। এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ আরও বেশ কিছু মিত্র দেশ। মূলত দুই পক্ষের সেনাদের মধ্যেই যুদ্ধক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ রয়েছে এই যুদ্ধ। এ ক্ষেত্রে দুইটি দেশের জাতীয় সেনাবাহিনী একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ছে।

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করে। হামাসের হাতে জিম্মি হয় ২৫০ জন।

এ ঘটনার পর হামাসকে নির্মূলের অঙ্গীকার করে ইসরায়েল এবং শুরু হয় গাজা উপত্যকায় নির্বিচার ও সর্বাত্মক হামলা। শুরুতে শুধু বিমানহামলা হলেও পরবর্তীতে এতে যোগ দেয় স্থলবাহিনী।

'বেসামরিক স্থাপনায় হামাসের যোদ্ধারা লুকিয়ে আছে', এই যুক্তি দিয়ে এ ধরনের হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। মাঝে কাতারের মধ্যস্থতায় ও বন্দি বিনিময়ের শর্তে সাত দিন যুদ্ধও বন্ধ ছিল। এ সময় উভয় পক্ষের বেশ কিছু আটক মানুষ মুক্তি পান।

কিন্তু ডিসেম্বরের ১ তারিখ যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষে হামলার তীব্রতা বাড়িয়ে দেয় ইসরায়েল। তাদের হামলা খৃস্ট ধর্মাবলম্বীদের উৎসব বড়দিন বা ইংরেজি নববর্ষেও থামেনি।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের শুনানি

আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুসারে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে ১১ ও ১২ জানুয়ারি। ইসরায়েল ইতোমধ্যে এই অভিযোগের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে।

কিন্তু এই বিচারিক প্রক্রিয়ায় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ২০১৯ সালে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ আনে গাম্বিয়া। সেই অভিযোগের আইনি প্রক্রিয়া এখনো চলছে।

তবে দক্ষিণ আফ্রিকা অভিযোগ দায়ের করার সময় দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া অবলম্বনের অনুরোধ জানায়। ইউক্রেনও রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার সময় একই ধরনের অনুরোধ জানিয়েছিল।

প্রতিবেদন অনুসারে, আইসিজের সিদ্ধান্তে যুদ্ধের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়বে না। তবে যদি দক্ষিণ আফ্রিকা ও ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কোনো সিদ্ধান্ত আসে, তাহলে তা ইসরায়েলের প্রধান মিত্র, অস্ত্রের যোগানদাতা ও পৃষ্ঠপোষক—মার্কিন সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে পারে।

হয়তো ফিলিস্তিনিদের জন্য এটাই শেষ ভরসা। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন হারালে ইসরায়েলি কামান নীরব হতে বাধ্য।

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Japanese atomic bomb survivor group Nihon Hidankyo wins Nobel Peace Prize

Japanese organisation Nihon Hidankyo, a grassroots movement of atomic bomb survivors from Hiroshima and Nagasaki, won the Nobel Peace Prize

40m ago