মানিকগঞ্জে ডেঙ্গুতে স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু

মানিকগঞ্জ
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মানিকগঞ্জের ঘিওরের এক স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

মৃত কৌশিক চুনুকার (১৩) ঘিওর উপজেলার বড়টিয়া ইউনিয়নের শ্রীবাড়ী গ্রামের চন্দন চুনুকারের ছেলে। সে শিবালয়ের কেন্দ্রীয় আব্দুল গণি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।

পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, কৌশিকের প্রথমে প্রচণ্ড জ্বর আসে। তখন স্থানীয় ফার্মেসি থেকে জ্বরের ওষুধ কিনে খাওয়ানো হয়। এতে জ্বর সেরে গেলেও প্রচণ্ড মাথাব্যথার কথা জানায় কৌশিক। 

পরে গত ১৫ অক্টোবর কৌশিকের রক্ত পরীক্ষা করলে তার ডেঙ্গু ধরা পরে। এরপর তাকে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে মানিকগঞ্জের মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অবস্থা আরও খারাপ হলে কৌশিককে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয় এবং রাতে তার মৃত্যু হয়।

তার বাবা চন্দন চুনুকার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, দুই সন্তানের মধ্যে কৌশিক বড় ছিল।

তিনি বলেন, 'চোখের সামনে ডেঙ্গুতে ছেলে মারা গেল। ছেলেকে বাঁচাতে কত জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করলাম, টাকা-পয়সা খরচ করলাম। তাও ছেলেকে বাঁচাতে পারলাম না।'

ছেলের মৃত্যুর কথা শুনে মা অচেতন হয়ে গেছে বলে জানান তিনি। বলেন, 'ছেলের মা কৌশিক কৌশিক বলে চিৎকার করে কান্না করছে। ছেলেকে নিয়ে অনেক আশা ছিল। সব আশা শেষ হয়ে গেল।'

কৌশিকের স্কুলশিক্ষক মো. রমজান আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পড়াশোনার পাশাপাশি স্কুলের বিভিন্ন কাজে অংশ নেওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৌশিকের অনেক পরিচিতি ছিল। তার মৃত্যুর খবর আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।'

যোগাযোগ করা হলে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী ডেইলি স্টারকে জানান, সম্প্রতি এ জেলায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। চলতি মাসের ২০ দিনে জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩ হাজার ৪০৬ জন। সেপ্টেম্বর মাসে ভর্তি হয়েছিল ৩ হাজার ৭০০ জন। আগস্ট মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ৬৭৪ জন।

তিনি বলেন, 'প্রতিমাসে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। হাসপাতালে ভর্তি ছাড়াও অনেক ডেঙ্গু আক্রান্ত বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ কারণে জেলার ডেঙ্গু আক্রান্তের মোট সংখ্যা দেওয়া সম্ভব নয়।'

তিনি আরও বলেন, 'হাসপাতালের বেডের তুলনায় রোগী বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ডের মেঝেতে, বারান্দায় এমনকি লিফটের সামনের ফাঁকা জায়গায় মেঝেতে রোগী রেখে  চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।'

সিভিল সার্জন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ১৮৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে মোট চিকিৎসাধীন আছেন ৫৮৯ ডেঙ্গু রোগী। জেলায় এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯ জন। 

 

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

8h ago