মাছ চাষে নদী ইজারা: বেলার আইনি নোটিশ

পাবনার চন্দ্রাবতী নদী। শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি না থাকলেও বর্ষায় নদীতে পানি থাকে বলছেন স্থানীয়রা। ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/ স্টার

পাবনার জেলা প্রশাসন বড়াল নদীর ভাঙ্গুরা উপজেলার দুটি অংশ জলমহাল হিসেবে ঘোষণা দিয়ে ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ স্থগিত করার দাবি জানিয়ে  নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে বেলার রাজশাহী বিভাগের সমন্বয়ক তন্ময় কুমার স্যানাল দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, 'আজকে ডাক যোগে নোটিশটি পাঠানো। সংশ্লিষ্ট ১২ জনকে সাত দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।'

ভূমি মন্ত্রণালয়; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়; মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ; কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব; জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক; পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক; পাবনার জেলা প্রশাসক; পাবনার পুলিশ সুপার; পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক এবং পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে—নোটিশ পাঠানোর সাত দিনের মধ্যে অবহিত করা না হলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়। 

বেলার আইনজীবী জাকিয়া সুলতানা স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, জলমহাল নীতিমালা ও ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল অনুযায়ী, দেশে দুই ধরনের জলমহাল রয়েছে। বদ্ধ জলমহাল ও উন্মুক্ত জলমহাল। নদী ও খাল উন্মুক্ত জলমহাল হিসেবে চিহ্নিত।

দেশের দরিদ্র জেলে সম্প্রদায়ের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং তাদের জীবিকা নির্বাহের পথ সুগম করতে ১৯৯৫ সালে স্মারকের মাধ্যমে নদী, খাল ও উন্মুক্ত শ্রেণির সব জলমহালের ইজারা প্রদান প্রথা বিলুপ্ত করা হয়।

এছাড়া, ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি এবং ওই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি আদালত রিট নিষ্পত্তি করে দেশের সব নদীকে লিগ্যাল পারসন/লিগ্যাল এনটিটি/লিভিং এনটিটি ঘোষণা করেন। একই রায়ে আদালত নদ-নদীসহ উন্মুক্ত সব জলাভূমিকে জনগণের ন্যাস (জনগণের) সম্পত্তি উল্লেখ করেছেন।
 
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, নদী ও খালকে বদ্ধ জলমহালে রূপান্তর করার বা বদ্ধ জলমহাল হিসেবে ব্যবহার করার কোনো সুযোগ নেই।

নদী, খাল ও উন্মুক্ত শ্রেণির জলমহালের ইজারা প্রদান প্রথা বিলুপ্ত করা সত্ত্বেও রাজস্ব আদায়ে নদী ও খালকে বদ্ধ জলমহাল দেখিয়ে ইজারা দেওয়ার কোনো এখতিয়ার জেলা প্রশাসনের নেই। তাছাড়া জনগণের সম্পত্তি ইজারা দেওয়া হলে নদীর ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর অধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হবে এবং নদীতে অবাধ প্রবেশাধিকার বাধাগ্রস্ত হবে।

এটি দেশের প্রচলিত আইন ও আদালতের আদেশের পরিপন্থি বলেও উল্লেখ করা হয় নোটিশে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) গত ১৪ জানুয়ারি প্রকাশিত সরকারি জলমহাল ইজারা বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা স্থগিতের জোরাল দাবি জানাচ্ছে, উল্লেখ করা হয় নোটিশে।

Comments

The Daily Star  | English

US cuts tariffs on Bangladesh to 20% after talks

The deal for Dhaka was secured just hours before a midnight deadline set by President Donald Trump

2h ago