অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নোটিশ, তোয়াক্কা নেই দখলদারদের

বংশী নদীর তীরবর্তী সাভারের নয়ারহাট এলাকায় এখনো নদীর জায়গায় অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা বহাল তবিয়তে আছে। ছবি: স্টার

দীর্ঘদিন পর বংশী নদীর তীরবর্তী সাভারের নামাবাজার এলাকায় নদীর জমি দখল করে গড়ে তোলা কয়েকশ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন। তবে বংশী নদীর তীরবর্তী সাভারের নয়ারহাট এলাকায় এখনো নদীর জায়গায় অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা বহাল তবিয়তে আছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে নয়ারহাট এলাকায় অবৈধ স্থাপনা গত ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সারিয়ে নেওয়ার নোটিশ দেওয়া হলেও দখলদাররা এসব স্থাপনা সরিয়ে নিতে কোনো উদ্যোগই গ্রহণ করেননি।

উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, বংশী নদীর নয়ারহাট এলাকায় নদীর যায়গায় মোট ৪৪ জন অবৈধ দখলদার আছেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ানের নাম ওই তালিকায় আছে। তবে স্থানীয়দের তথ্য মতে, নয়ারহাট এলাকায় নদীপাড়ে অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনার পাশাপাশি অন্তত ১০টি অবৈধ বালু মহল আছে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে নয়ারহাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নদীর পূর্বপাড়ে নদীরকূল ঘেঁষে সারি সারি পাকা দোকান পাঠ। কিছু দোকানপাট বন্ধ থাকলেও অধিকাংশ দোকানে ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া বালু বহলগুলোতে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর আগে জনস্বার্থে নদীর পাড় দিয়ে নদীর যায়গা দখল করে রাস্তা নির্মাণ করেন স্থানীয় পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান। ওই সময়ই চেয়ারম্যানের যোগসাজশে দখলদাররা পর্যায়ক্রমে রাস্তার উভয় পাশে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, অধিকাংশ দোকান তারা মাসিক ভাড়ায় দখলদারদের কাছ থেকে নিয়েছেন। এই মুহূর্তে দোকান উচ্ছেদ করা হলে তাদের মোটা অংকের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

এদিকে নদীপাড়ের খাস জমিতে অবৈধ স্থাপনার মধ্যে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ানের স্থাপনা রয়েছে। তিনি স্থাপনাটি বর্তমানে ব্যক্তিগত কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন। তিনিও প্রশাসনের নোটিশের কোন তোয়াক্কা করছেন না।

জানতে চাইলে পারভেজ দেওয়ান বলেন, জনগণের স্বার্থে নদীর পাড় দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছিল। আর রাস্তা রক্ষার জন্য পাকা দোকানগুলো নির্মাণ করা হয়। প্রশাসন এখন স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করতে চাচ্ছেন।

প্রশাসন আপনাদের স্থাপনাগুলো সরিয়ে নিতে নোটিশ দিয়েছে। ওই নোটিশের নির্ধারিত সময় শেষ হলেও এখনো অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিচ্ছেন না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইসমাইল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত ২৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৪ দিন বংশী নদীর নামাবাজার এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ওই সময় নয়ারহাট এলাকায় অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে দখলদারদের নোটিশ দেওয়া হয়। এছাড়া মাইকিংও করা হয়৷ সময় স্বল্পতার কারণে নয়ারহাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা যায়নি। তবে খুব দ্রুত নয়ারহাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।

সাভার নদী ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি কৃষিবিদ ড. রফিকুল ইসলাম ঠান্ডু মোল্লা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমরা চাই নদী তার প্রাণ ফিরে পাক, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হোক। নামাবাজার এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। নয়ারহাট এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান কতদিন নাগাদ শুরু হয় এটাই দেখার বিষয়।

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

29m ago