‘বালিহাঁস দিয়ে আজকের আয়োজন হাকালুকি হাওরে’

পরিযায়ী পাখি ভোজনের অভিযোগে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বালিহাঁস (পরিযায়ী পাখি) দিয়ে বনভোজন করার পোস্ট। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

বালিহাঁস (পরিযায়ী পাখি) দিয়ে বনভোজন করে ফেসবুকে জানিয়েছেন নিজেরাই। মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সম্প্রতি এ ঘটনা ঘটেছে। পরিযায়ী পাখি ভোজনের এমন ফেসবুক পোস্টের নিন্দা জানিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। পরিযায়ী পাখি ভোজনের অভিযোগে আজ রোববার ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণী বিভাগ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরের পর নিজের ফেসবুক ওয়ালে কুলাউড়া মিলি প্লাজার মনাফ টেলিকমের পরিচালক মাহবুব আহমেদ সুমন ও ভুকশিমুল এলাকার বাসিন্দা আহনাফ শাহরিয়ারসহ ৯ জন হাকালুকি হাওরে পরিযায়ী পাখি বালিহাঁস খেয়ে বনভোজন করেন। 

পরে তারা সেই বনভোজনের ছবি, ভিডিও নিজেদের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন।

বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হলে তারা হাঁসের মাংস খেয়েছেন বলে দাবি করেন এবং পোস্টটি এডিট করে 'বালিহাঁসের' পরিবর্তে 'হাস' লিখে দেন।

এ প্রসঙ্গে মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা বিষয়টি জেনেছি। পরিবেশকর্মীরা প্রতিবাদ না করলে বিষয়টি সামনে আসত না।'

বন্যপ্রাণী বিভাগ এ ঘটনায় আজ রোববার রাতে কুলাউড়া থানায় একটি মামলা করেছে বলে জানান তিনি।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জানুয়ারি কুলাউড়া উপজেলার ৯-১০ জন যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি প্রকাশ করে 'বালি হাঁস দিয়ে আজকের আয়োজন হাকালুকি হাওরে' লিখেছেন।

পরে বন্যপ্রাণী বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করেন এবং বন্যপ্রাণী বিভাগ মৌলভীবাজারের রেঞ্জ কর্মকর্তা গোলাম ছারওয়ার বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা অভিযোগ দায়ের করেন।

জানতে চাইলে কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুছ ছালেক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যপ্রাণী বিভাগের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

এদিকে রোববার মৌলভীবাজার জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও পরিযায়ী পাখি দিয়ে বনভোজনের বিষয়টি উত্থাপন হয়। সভায় জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহমদ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

তবে যোগাযোগ করা হলে ফেসবুকে 'বালিহাঁস' খাওয়ার ছবি পোস্ট দেওয়া অভিযুক্ত আহনাফ শাহরিয়ার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অভিযোগটি সত্য নয়। আমরা একটি সাধারণ হাঁস বাজার থেকে কিনে রান্না করে নিয়ে গিয়েছিলাম। পরে হাওরে গিয়ে খেয়েছি। আমাদের সঙ্গের একজন মজা করে বালিহাঁস খেয়েছি লিখে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিল।'

Comments

The Daily Star  | English

Nahid urges govt to release accurate information

Calls for impartial probe into Milestone crash, demands transparency

1h ago