শাহ পরীর দ্বীপ

ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-দোকান মেরামত শুরু, বেশি দামে বাঁশ-টিন বিক্রির অভিযোগ

চলছে মেরামতের কাজ। ছবি: সিফায়াত উল্লাহ/ স্টার

ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-দোকান মেরামত শুরু করেছেন টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপের বাসিন্দারা। তবে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বাঁশ-টিনসহ অন্যান্য মেরামত সামগ্রী বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ তুলেছেন তারা।

আজ সোমবার সকালে শাহ পরীর দ্বীপ ঘুরে লোকজনকে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামতে ব্যস্ত দেখা গেছে।

দ্বীপের জালিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা শফিউল আলমের মুদির দোকান বাতাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২ জন মিস্ত্রি দিয়ে তিনি দোকান মেরামত করছিলেন।

তিনি বলেন, 'স্বাভাবিক সময়ে ১০০টি বাঁশের দাম ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার। কিন্তু এখন দামে বেড়ে ১০০টি বাঁশ ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রশি, টিন, পলিথিনসহ অন্যান্য সামগ্রীর দামও বেড়েছে।'

ক্যাম্পপাড়ার আবদুর রশিদ বলেন, `পলিথিন ও বাঁশ আগের তুলনায় বেশি দামে কিনতে হয়েছে।'

জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা ও চা দোকানি জাফর আলম বলেন, `দাম বেড়ে যাওয়ায় ২০টি বাঁশ কিনতে হয়েছে ১ হাজার টাকায়। দুর্যোগকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সরকার আমাদের মেরামত সামগ্রী দিলে উপকৃত হতাম।'

তবে জেটি ঘাটের বাঁশ ব্যবসায়ী আবুল কালাম দাবি করেন, বাঁশের দাম বাড়ানো হয়নি।

'বাঁশের সংকট দেখা দিয়েছে। মালামাল না থাকায় ক্রেতারা ফেরত যাচ্ছেন', বলেন তিনি।

ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলোতে মিস্ত্রির কাজ করছেন পাড়ার বাসিন্দা নুরুল কবির।

ছবি: সিফায়াত উল্লাহ/ স্টার

তিনি বলেন, 'ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেকেই ঘর ঠিক করতে বলছেন। কিন্তু এখানে মিস্ত্রি কম। তাই অনেক বাসিন্দা নিজের ঘর নিজেই ঠিক করছেন।'

বিদ্যুৎ নেই, সুপেয় পানির সংকট

জালিয়াপাড়ার ৩০০ পরিবারের সুপেয় পানির ভরসা নাফ নদীর পাড়ে স্থাপিত একটি গভীর নলকূপ। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ না থাকায় শনিবার সকাল থেকে বন্ধ নলকূপটি। তাই পানি সংকটে আছে ওই ৩০০ পরিবার।

স্থানীয় বাসিন্দা লায়লা বেগম বলেন, লবণ পানি ফুটিয়ে পান করছেন তারা।

তবে রোববার বিকেলে জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কয়েকটি এনজিও বাসিন্দাদের বোতলজাত সুপেয় পানি সরবরাহ করেছে। পাশাপাশি শুকনো খাবারও বিতরণ করা হয়েছে।

খোলা আকাশের নিচে

ঝড়ো বাতাস উড়িয়ে নিয়ে গেছে আবদুল হকের ঘরের টিন। ঘূর্ণিঝড় শেষ বাড়ি ফিরে দেখেন ঘরটি ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়েছে। আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় মেরামতও করতে পারছেন না তিনি।

আবদুল হক বলেন, 'স্ত্রী-সন্তানদের আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। মালামাল চুরির ভয়ে আমি খোলা আকাশের নিচে আছি।'

শুধু আবদুল হক নন, ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ায় দ্বীপের শতাধিক মানুষ খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। মেরামতের আগ পর্যন্ত তাদেরকে খোলা আকাশের নিচেই থাকতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

8h ago