বজ্রপাতে ৬ জেলায় ৯ জনের মৃত্যু

Lightning
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, সিলেট ও নেত্রকোণায় বজ্রপাতে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

নেত্রকোণার আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উপজেলায় হাওরে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে কৃষক দেলোয়ার মিয়ার (৩৫) মৃত্যু হয়েছে। এদিন সকালে উপজেলার স্বরমুশিয়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।'

দেলোয়ার ওই গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে।

এদিন দুপুরে শরীয়তপুরের জাজিরা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত চারজন।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম লুনা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের পাইনপাড়ার বাসিন্দা আলতু মাঝির মেয়ে আমেনা বেগম (২৬) তার মায়ের খোঁজ করতে ঘরের বাইরে যান। বাড়ির পাশের ফসলের মাঠের মাঝখান দিয়ে হাঁটার সময় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।'

তিনি আরও জানান, বজ্রপাতে উপজেলার কুণ্ডেরচর ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল হান্নান (২৬) মারা গেছেন। তিনি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার তেলিপাড়ায় বাসিন্দা তৌহিবুল হোসেনের ছেলে।

'বজ্রপাতের সময় কোনো কারণে হান্নান বাইরে বের হয়েছিলেন,' বলেন লুনা।

এছাড়া ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার চরসেনসাস ইউনিয়নের বেড়াচাক্কি গ্রামের নেছার উদ্দিন মাঝির স্ত্রী কুলসুম বেগম (৩৮) বজ্রপাতে মারা গেছেন।

চরসেনসাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বি এম আনোয়ার হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কুলসুমের স্বামী সয়াবিন খেতে কাজ করছিলেন। কুলসুম তার স্বামীর জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ ঝড় শুরু হয় এবং বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।'

সূত্র জানিয়েছে, আহত চার নারী সদর উপজেলার আবুল কালামের স্ত্রী সুমি আক্তার (৩০), ডামুড্যা উপজেলার নজরুল বেপারীর স্ত্রী ছালেহা বেগম (৪০), নড়িয়া উপজেলার টিপু আলীর স্ত্রী কেয়া মনি (২৪) ও নড়িয়া উপজেলার তোতামিয়া হাওলাদারের স্ত্রী নাসিমা বেগম (৫০) শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

হাসপাতালে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিমিয়া সাদিয়া বলেন, 'বজ্রপাতে আহত চারজনের মধ্যে একজনের শারীরিক অবস্থা গুরুতর। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।'

মাদারীপুর সদর ও কালকিনি উপজেলায় বজ্রপাতে এক শ্রমিক ও এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার বিকেলে উঠান থেকে গোয়াল ঘরে গরু রাখতে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে জসিম হাওলাদার (৪২) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তিনি কালকিনি উপজেলা কয়ারিয়া ইউনিয়নের মোল্লার হাট রামারপোল গ্রামের হান্নান হাওলাদারের ছেলে।

এর আগে দুপুরে কুমার নদে গোসল করতে নেমে সঞ্জিত বল্লভ (৩৫) মারা যান। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া কলাবাড়ী ইউনিয়নের শিমুলবাড়ি এলাকায়। সঞ্জিতের বাবার নাম নগেন বল্লভ।

সঞ্জিত মাদারীপুরের সদর উপজেলার পুরানবাজার আজমিরি মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে ময়রা হিসেবে কাজ করতেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর পুরাতন বিসিক শিল্পনগর এলাকায় কুমার নদীতে গোসল করছিলেন সঞ্জিত বল্লভ। হঠাৎ নদীতে বজ্রপাত পড়লে পানিতে গোসলরত অবস্থায় অচেতন হয়ে যান তিনি।পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় বজ্রপাতে কৃষক মুরাদ মল্লিকের (৫০) মৃত্যু হয়েছে। এসময় আরও একজন আহত হন। 

সোমবার বিকেল দুপুর ৩টার দিকে উপজেলার কামালদিয়া ইউনিয়নের মীরপাড়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মুরাদ ওই গ্রামের লকাই মল্লিকের ছেলে। আহত কৃষক মো. কামরুজ্জামান (৪৫) ওই ইউনিয়নের মীরের কাপাষহাটিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে কামালদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হাবিবুল বাশার বলেন, কৃষি কাজ করার সময় তারা দুর্ঘটনার শিকার হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুরাদ মল্লিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।'

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক কবির সরদার বলেন, 'মুরাদ মল্লিকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। আহত মো. কামরুজ্জামানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার উজানী ইউনিয়নে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে কৃষি শ্রমিক অমৃত পাণ্ডের (২৩) মৃত্যু হয়েছে। 

সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

উজানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শ্যামল কান্তি ঘোষ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর নেওয়ার পথে ওই যুবকের মৃত্যু হয়।'

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় সুরমা নদীর পাড়ে গরু চড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে মাহতাব উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

এদিন সকাল সাড়ে ১১টা উপজেলার দর্পনগর পশ্চিম গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন চৌধুরী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মাহতাব ওমানে ছিলেন, দেশে চলে এসেছেন।'

Comments