বাস্তবে আমি ঝগড়া করতে পারি না: হিমি
টেলিভিশন নাটকে জান্নাতুল সুমাইয়া হিমির ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। অবশ্য নাটক প্রচারের দিক থেকেও এগিয়ে আছেন নতুন প্রজন্মের এই অভিনয়শিল্পী। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে তার অভিনীত নাটক প্রায়ই দেখা যায়। শোবিজের চেনা মুখ হিমি।
খুব ছোটবেলায় অভিনয় শুরু করেন শিশুশিল্পী হিসেবে। অনুপ্রেরণা হিসেবে ছিলেন মা; তাকে নিয়ে যেতেন রামপুরায়, টেলিভিশন সেন্টারে। এ ছাড়া বাবার সাপোর্টও পেয়েছেন খুব। শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন বেশকিছু নাটকে।
ছোটবেলায় কখনো কখনো অভিনয়টাকে খুব পরিশ্রমের ও কষ্টের কাজ মনে হতো তার।
হিমি বলেন, 'তখন যেতে চাইতাম না। মা চকোলেট ও আইসক্রিম কিনে দিতেন। তারপর যেতাম।'
কিন্তু নায়িকা হিসেবে হিমির এখন বেশ পরিচিতি। নিজেকে একজন অভিনয়শিল্পী মনে করেন। এখন তার মা ভীষণ খুশি। মেয়ের সাফল্য মাকেও আনন্দ দেয়। হিমি বলেন, 'মা আমার জন্য অনেক করেছেন। বাবার সমর্থনও ছিল। এখনো মা সবকিছু করে দেন।'
হাসতে হাসতে হিমি বলেন, 'আমার নাটক প্রচারিত হলে সবার আগে মা দেখেন। মা এখন বড় ফ্যান।'
গত ঈদে হিমি অভিনীত বেশ কয়েকটি নাটক প্রচার হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- 'মেজবানি ভালোবাসা', 'ফ্রামিলি ট্রাবল', 'কোটি টাকার ডিপোজিট', 'লাভ ইউ ম্যাডাম', 'আফ্রিকান গেস্ট', 'জামাই-শ্বশুরের কোরবানি'।
চলতি সময়ে প্রায় প্রতিদিন শুটিংয়ে সময় কাটছে তার। গতকাল রাজধানীর একটি বস্তিতে শুটিং করেছেন নতুন নাটকের। তার বিপরীতে ছিলেন নিলয় আলমগীর। পরিচালনা করেছেন জোবায়ের ইবনে বকর। কমেডি ঘরাণার নাটক এটি।
বস্তিতে শুটিং করার অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে বলেন, 'ওই বস্তিতে আগেও শুটিং করেছি। ওখানকার মানুষের কাছে আমি খুব চেনা জানা।'
অভিনয় ক্যারিয়ারে হিমিকে প্রচুর বউয়ের চরিত্রে দেখা গেছে। এ ছাড়া প্রেমিকা তো আছেই। বস্তির মেয়ে থেকে ধনীর মেয়ে-সব রকম চরিত্রে অভিনয় করেছেন। অনেক নাটকে ঝগড়াটে মেয়ের চরিত্রে দেখা গেছে। বাস্তবে কতটা ঝগড়াটে আপনি? হাসতে হাসতে তিনি বলেন, বাস্তবে আমি ঝগড়া করতে পারি না, নাটকে পারি। আমি খুব ঠান্ডা মানুষ।
নাটক ও মডেলিংয়ের বাইরে যৌথ প্রযোজনার একটি সিনেমাও করেছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হঠাৎ দেখা কবিতা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে সেটি। তাও কয়েক বছর আগে। পরিচালনা করেছেন কলকাতার রেশমি মিত্র।
সিনেমার বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমার তো ইচ্ছে আছে সিনেমায় অভিনয় করার। যেরকম চরিত্রে ও গল্পে অভিনয় করতে চাই, সেরকম হলে অবশ্যই করব। সিনেমার প্রস্তাব পাচ্ছি।'
এখন পর্যন্ত অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন। দর্শকপ্রিয়তাও পেয়েছেন। ক্যারিয়ারের শুরুতে 'মোহর আলী' ধারাবাহিকটি তাকে বেশ পরিচিতি এনে দেয়। ওই সময়ে 'অনাকাঙিক্ষত শত্রু' নামের এক ঘণ্টার একটি নাটকও তাকে বেশ পরিচিত করে তোলে।
ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট কোন নাটকগুলো দিয়ে? এমন প্রশ্নের জবাবে হিমি বলেন, 'এককভাবে কোনো নাটক নয়। ধীরে ধীরে আমার নাটকগুলো ক্যরিয়ারে টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।'
হিমি যেমন দর্শকদের প্রিয়, তেমনি ঢাকাই সিনেমায় তার সবচেয়ে প্রিয় নায়িকা শাবানা। ছোটবেলায় শাবানার অসংখ্য সিনেমা দেখেছেন। এ ছাড়া জয়া আহসানকে খুব ভালো লাগে। পাশাপাশি তিশাকেও ভীষণ পছন্দ তার।
অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও নিজের নাটক দেখার চেষ্টা করেন একটু অবসর পেলেই। কেমন লাগে তখন? হিমি বলেন, 'আমার নাটক দেখি ভুল ধরার জন্য। ঠিকমতো হেসেছি কি না, কেঁদেছি কি না, সংলাপ ঠিক বলেছি কি না, সবকিছু চোখে পড়ে।'
প্রতিদিন শুটিং করতে হয় এই প্রজন্মের অভিনেত্রী হিমিকে। নানা রকম চরিত্রে রূপদান করতে করতে হয়? প্রতিদিন শুটিং করেন একঘেয়েমি লাগে না? জবাবে তিনি বলেন, 'অভিনয় কখনো একঘেয়েমি লাগে না। এটা আমার ভালোবাসা। দেখুন, ক্যারিয়ারের শুরুতে ৫-৬টা নাটক করেছি, যেখানে আমার অল্প উপস্থিতি ছিল। তখন ভাবতাম কবে আমিও পুরোদমে শুটিং করব। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।'
অভিনয়ের পাশাপাশি পড়ালেখাও করছেন। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ বছর মার্কেটিংয়ে স্নাতক করেছেন।
তার স্বপ্ন, ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করা, প্রতিনিয়ত নিজেকে ভাঙা।
Comments