শিল্পকলার মঞ্চে প্রাচ্যনাট স্কুলের ‘রক্তকরবী’
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী নাটক 'রক্তকরবী'র শতবর্ষ উদযাপনে প্রাচ্যনাট স্কুল অব অ্যাক্টিং অ্যান্ড ডিজাইন নিয়ে আসছে নতুন প্রযোজনা।
আগামী সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় আসছে 'রক্তকরবী' নাটকটি মঞ্চস্থ হবে। নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন মো. শওকত হোসেন সজীব। প্রাচ্যনাট তাদের স্কুলের ষান্মাসিক প্রযোজনার অংশ হিসেবে ধ্রুপদী এই নাটকটি মঞ্চস্থ করতে যাচ্ছে।
প্রাচ্যনাট অ্যাক্টিং অ্যান্ড ডিজাইন স্কুলের ৪৫তম আবর্তনের ৩০ জনের বেশি শিক্ষার্থী এই উদ্যোগে অংশ নিচ্ছে।
তাদের প্রশিক্ষণে ছিলেন দেশের প্রখ্যাত কয়েকজন সংস্কৃতিকর্মী। তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব আজাদ আবুল কালাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক আশিকুর রহমান লিয়ন, নাট্যকলার শিক্ষক শহীদুল মামুন, গবেষক এবং নাট্যকার প্রফেসর রতন সিদ্দিকী, সেট ও লাইট ডিজাইনার মো. সাইফুল ইসলাম, সঙ্গীতশিল্পী রাহুল আনন্দ এবং ডিজাইনার সব্যসাচী হাজরা।
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ নাটকের মধ্যে অন্যতম 'রক্তকরবী'। প্রাচ্যনাট স্কুলের ষান্মাসিক প্রযোজনা হিসেবে 'রক্তকরবী' বেছে নেওয়ার বিষয়ে নির্দেশক শওকত হোসেন সজীব বলেন, 'নাটকটি মঞ্চস্থ করার লক্ষ্য নিয়ে আমি আসলে বেশ কয়েক বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রযোজনার জন্য তরুণ নাট্যকর্মীদের এত বড় একটি দলকে পাওয়া নির্দেশক হিসেবে আমাকে আরও অনেকখানি শক্তি দিয়েছে।
'নিজ সময়ের চেয়ে এগিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সবসময়ই নতুন চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষে ছিলেন। এই বিশ্বাস মাথায় রেখে আমরা নাটকের মূল বক্তব্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সমসাময়িক বিভিন্ন উপাদান যোগ করেছি। নাটকের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য এবং মূলবার্তা আমাদের প্রযোজনায় ফুটিয়ে তুলতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, বাকিটা অবশ্যই দর্শকের হাতে। নাটকটি দর্শকের পছন্দ হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস,' বলেন তিনি।
প্রাচ্যনাটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা প্রখ্যাত নাট্যজন আজাদ আবুল কালাম বলেন, "রক্তকরবী" রবীন্দ্রনাথের এমন একটি জটিল এক্সপ্রেশনিস্ট নাটক যা তার জীবদ্দশায় কখনো প্রদর্শিত হয়নি, কারণ অনেক বিখ্যাত নির্দেশকেরও নাটকটিকে আপাতদৃষ্টিতে 'অপ্রদর্শনীয়' বলে মনে হয়েছিল। প্রাচ্যনাট স্কুলের নির্দেশনা পর্ষদ এরকম একটি জটিল নাটকে পোস্ট-মডার্নিস্ট উপাদান মিশিয়ে একটি আপাত অসম্ভব কাজ সম্পন্ন করেছে, যা নাটকটিকে আরো চমৎকার এবং সময়োপযোগী করবে বলে আমার বিশ্বাস।'
এ সম্পর্কে প্রাচ্যনাট স্কুল অব অ্যাক্টিং অ্যান্ড ডিজাইনের অ্যাকাডেমিক ডিরেক্টর শহীদুল মামুন বলেন, 'প্রাচ্যনাট স্কুলের "রক্তকরবী" নাটকের মহড়া দেখার সময় অভিনয়শিল্পীদের সামর্থ ও সাহস দেখে বিমোহিত হয়েছি, যেটা কেবলমাত্র শক্তিমান একটা দল আর দক্ষ টেকনিশিয়ানদের কাছ থেকেই আশা করা যায়।'
প্রাচ্যনাট স্কুল অব অ্যাক্টিং অ্যান্ড ডিজাইনের ৪৫ তম আবর্তনের এ নাটকে অংশ নিয়েছে লাবণ্য, জোবায়ের, রকি, হাসি, মীম, বাপ্পী, ওরিশা, ইব্রাহিম, সুপ্রিয়, হিমেল, রাফা, জেসিকা, দোয়েল, অপু, বিপ্লব, প্রজ্ঞা, বিশাখা, সৌরভ, নয়ন, শাখরুখ, আদিল, রাহুল, নাহিদ, রাফি, ফাইয়াজ, রাতুলসহ আরও অনেকে।
রক্তকরবীর সহকারী নির্দেশক আরিফ রেজা খান, নাটকের সঙ্গীতভাবনা এবি সিদ্দিকী এবং কোরিওগ্রাফি প্রদ্যুৎ কুমার ঘোষের৷ নাটকটির মঞ্চসজ্জা করেছেন তানজি কুন। আলোক প্রক্ষেপনে রয়েছেন মোখলেছুর রহমান, দ্রব্যসামগ্রী তৈরিতে স্বাতী ভদ্র এবং পোশাক পরিকল্পনায় পারভীন পারু। ভিডিওগ্রাফি করেছেন ফয়সাল ইবনে মিজান।
Comments