‘সিনেমাকে গায়েব করে দেওয়ার অর্থ হলো সেই সময় ও এর নির্মাতাকে গুম করে দেওয়া’

'২০২২ সালে "অন্যদিন…" নিয়ে আমি বিশ্বের বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে ঘুরেছি। এরপরে আমি এটি সেন্সরে জমা দিই। এক বছরের বেশি হলো সিনেমাটি সেন্সর ছাড়পত্র পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।'
জুরিখ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে কামার আহমাদ সাইমন। ছবি: জুরিখ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সৌজন্যে

সম্প্রতি এশিয়ার বৃহত্তম চলচ্চিত্র উৎসব সাংহাইয়ের 'গোল্ডেন গবলেট' এর মূল প্রতিযোগিতায় মনোনীত হয়েছে কামার আহমাদ সাইমনের প্রতীক্ষিত ছবি 'শিকলবাহা'। গুণী এই নির্মাতার সবকটি সিনেমাই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি, সম্মাননা পেয়েছে। তবে 'শুনতে কি পাও!' এর পর এই নির্মাতার জলত্রয়ীর (ওয়াটার ট্রিলজি) দ্বিতীয় ছবি 'অন্যদিন...' এক বছর ধরে সেন্সরের অপেক্ষায়।

জলত্রয়ী, চলচ্চিত্র নির্মাণ কৌশল ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে সম্প্রতি দ্য ডেইলি সঙ্গে কথা বলেন কামার আহমাদ সাইমন।  

জলত্রয়ী নির্মাণের পেছনের অনুপ্রেরণা কী ছিল? এই তিনটি সিনেমা নির্মাণের জার্নিটা বলুন।  

কামার: 'শুনতে কি পাও', 'অন্যদিন', 'আরও কিছু জীবন' এই তিন সিনেমা নিয়েই জলত্রয়ী। ২০১২ সালে 'শুনতে কি পাও' মুক্তি পায়। এর পরপরই আমি 'অন্যদিন' এর কাজ শুরু করি। আমার ইচ্ছা ছিল, ২০২১ সালে এই জনপদের স্বাধীন রাজনৈতিক পরিচয়ের ৫০ বছরে তৃতীয় সিনেমাটি মুক্তি দেব। কিন্তু নানান জটিলতায় সেটি হয়নি। ২০১৩ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত 'অন্যদিন' এর শুটিং হয়েছে। শুটিংয়ের মাঝখানেই ২০১৮ সাল থেকে আমি পোস্ট প্রডাকশনের কাজ শুরু হয়েছিল। প্রায় দুই বছর ধরে এডিট হয়। ২০২১ এর শেষে ইন্টারন্যাশনাল ডকুমেন্টারি ফিল্মফেস্টিভ্যাল আমস্টারডামের (ইডফা) আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে 'অন্যদিন' নির্বাচিত হয়। এর আগেই ইডফা আর সানড্যান্স থেকে ছবিটি প্রতিযোগতামূলক গ্রান্ট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিল। এরপর লোকার্নোতে ওপেন ডোর্স এওয়ার্ড, আর্তে ইন্টারন্যশনাল প্রাইজও পেয়েছিলাম এর স্ক্রিপ্টের জন্য। ২০২২ সালে আমি সিনেমাটি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে ঘুরেছি — জুরিখে গোল্ডেন আই নমিনেশন পেয়েছিল, ক্যামডেনে হ্যারেল এওয়ার্ড পেয়েছিল ছবিটা।

যেহেতু আমার সিনেমায় কোনো স্টার নেই তাই আমি চেষ্টা করেছি আমার সিনেমাটাকেই স্টার বানাতে। আমাদের দেশে দর্শক এখনো প্রথমে ছবির পোস্টারে স্টার খোঁজেন, তারপর দেখতে গিয়ে ছবির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন।

'অন্যদিন' সিনেমার পোস্টার। ছবি: কামার আহমাদ সাইমনের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

আপনার সিনেমা অনেকে 'ডকুমেন্টরি' বলতে চায়। আপনি এগুলোকে বলেন 'ফিকশন-নন ফিকশন' বলেন। এটা যদি একটু ব্যাখ্যা করতেন?

কামার: আমি যদি 'অন্যদিন' সিনেমাটি দিয়ে উদাহরণ দেই। মিউজিয়াম অব দ্য মুভিং ইমেজ-এ (মমি) যে যখন এটির প্রদর্শনী হলো সে বছর সারা পৃথিবী থেকে ১৮টা ফিচার সিনেমাকে তারা ইনভাইট করেছিল। সে ১৮টা ফিচার সিলেকশনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ওরা ওদের ওয়েবসাইটে যেটা লিখেছিল 'মাস্টারপিসেস দ্যাট ইজ চেঞ্জিং দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ অব সিনেমা অর রিইনভেন্টিং দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ অব সিনেমা' সেখানে কিন্তু প্রচলিত অর্থে যেটাকে 'ফিকশন' বলা হয় সেই ছবিও ছিল, যেটাকে 'নন ফিকশন' বলা হয় সেই ছবিও ছিল, আবার 'অন্যদিন...'কে যে আমি হাইব্রিড বলছি সেই রকম আরও হাইব্রিড ছবি ছিল। 'ডকুমেন্টরি' বা 'প্রামাণ্য' বা 'তথ্যচিত্র' বলতে প্রচলিত অর্থে যা বোঝায়, সেরকম একটাও ছিল না।

আমি আরেকটা রেফারেন্স দিই। কানের ওয়েবসাইটে গিয়ে 'বাংলাদেশ' লিখে সার্চ দিলে 'অফিশিয়াল সিলেকশন' লেখা তিনটি সিনেমার নাম আসবে। 'জাগো হুয়া সাভেরা' (কান ক্লাসিক), 'অন্যদিন...' (লা'এতেলিয়ার ২০১৭) ও 'রেহানা মরিয়ম নূর' (আঁ সার্তে রিগা ২০২১)। ২০১৭ সালে  'অন্যদিন...' যে লা'এতেলিয়ারে  ছিল ওই ক্যাটাগরিতে মোট ১৬টি সিনেমা আছে যেগুলো একটাও ডকুমেন্টরি না। লোকার্নোর পিয়াৎজা গ্রান্দায় ওপেন ডোর্স কম্পিটিশনে 'অন্যদিন...' সিনেমাটি (ছবিটা তখনো শেষ হয় নাই) যেখানে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পায়, সেই প্রতিযোগিতায় মোট আটটা প্রজেক্ট সিনেমা ছিল তার একটাও 'ডকুমেন্টরি' না। কানের লা'এতেলিয়ার বা লোকার্নোর ওপেন ডোর্স, কোনটাই কিন্তু ডকুমেন্টরির জন্য না। 

আপনার সিনেমার ভাষার আলাদা একটা বিশেষত্ব আছে; স্বতন্ত্র একটা সিনেমার ভাষা। এই কারণেও অনেকে 'ডকুমেন্টরি' বলতে চায়। সিনেমার এই ল্যাঙ্গুয়েজটা কি আপনার নিজস্ব, নাকি কারো কাজ থেকে অনুপ্রাণিত?

কামার: 'তিতাস একটি নদীর নাম' উপন্যাস পড়ে আপনার মনে হবে না যে এটা কাল্পনিক। অদ্বৈত মল্লবর্মণ জেলেপাড়ায় যে মানুষ দেখতে পেয়েছে সেটা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই লিখেছে। সেটাকে তো আপনি নন ফিকশন বলছেন না। সাহিত্য হিসেবেই প্রশংসা করছেন।

মানুষ মূলত সাবকনশাসলি সারাক্ষণই কোনো কিছু থেকে মোটিভেটেড হয়, অনুপ্রেরণা পায়, প্রভাবিত হয়। আমার অনুপ্রেরণার মূল উৎস হচ্ছে বাংলা সাহিত্য। আমি ছেলেবেলায় পুরোপুরি একজন বাংলা সাহিত্যের ছাত্র ছিলাম। ক্লাস সেভেন থেকে যখন উপন্যাস পড়া শিখেছি সেই থেকে যতদিন পর্যন্ত উপন্যাস পড়েছি, আমি অনুপ্রেরণা পেয়েছি। এর বাইরে কোনোকিছু যদি আমাকে নাড়া দিয়ে থাকে সেটা হচ্ছে এসএম সুলতানের পেইন্টিং। আমি যখন বুয়েটে পড়ি তখন একটা গ্যালারিতে এসএম সুলতানের পেইন্টিংয়ের প্রদর্শনী হয়েছিল। সুলতানের ৩০ ফিটের ক্যানভাসের সামনে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। ওটা এমন এক অভিজ্ঞতা যেটা বলে বোঝানো কঠিন। তারপর থেকে সুলতানকে জানার চেষ্টা করেছি,  বোঝার চেষ্টা করেছি। তার ক্যানভাস আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। যেমন 'শুনতে কি পাও!' সিনেমার ট্রিগার পয়েন্ট ছিল ডেইলি স্টার প্রকাশিত একটি ছবি, ফ্রন্ট পেইজে ছাপা হয়েছিল। হাজার হাজার মানুষ খালি হাতে একটা ভেঙে যাওয়া বাঁধ আটকাচ্ছে—এমন একটা ছবি দেখে আমার সুলতানের আঁকা একটা ছবির মতো মনে হচ্ছিল। তারপরের জার্নি কিন্তু অনেক লম্বা। কিন্তু ওটাই ট্রিগার পয়েন্ট ছিল।

আমার সিনেমার ল্যাঙ্গুয়েজের পেছনে আমার নিজস্ব একটা চাহিদা ছিল। আমি চেয়েছি, যে দর্শক সিনেমা দেখতে বসবে তাকে আমি ভুলিয়ে দেবো যে এটা একটা সিনেমা। কীভাবে দর্শককে ভোলানো যায় এর কিছু কৌশল অবশ্যই আছে। যেমন- 'শুনতে কি পাও!' শ্যুট করতে গিয়ে আমি নিজের হাতে ক্যামেরা তুলে নেওয়ার আগে একাধিক ক্যামেরাম্যান নিয়ে চেষ্টা করেছি। আমি এমন ফ্রেম চাই যেটা হন্টিং, ডিস্টার্বিং, শেইকি। আমি চাই দর্শককে এক ধরনের আনফিল্টারড, যেটাতে তার এক্সেস নেই কিন্তু আমি এক্সেস করে দিচ্ছি এমন একটা অনুভূতি দিতে। কিন্তু দেখুন, আমার প্রতিটা চরিত্রই এখানে অভিনয় করছে, 'অন্যদিন...'এর প্রায় প্রতিটা চরিত্র এমনকি লেপেলও মাইকও পড়া।

আপনার সিনেমায় চরিত্ররা নিজের নামেই সিনেমায় থাকে, অনেকটা বাস্তব চরিত্রকে পর্দায় তুলে আনা। 'শুনতে কি পাও!' সিনেমায় যেমন নিজের ঘরেই মা তার বাচ্চাকে পড়াচ্ছে এমন দৃশ্য আছে। ক্যামেরা দেখলে তো সাধারণ মানুষ মাত্রই মোটামুটি সচেতন হয়ে যায়। সুতারখালীর মতো একটা অঞ্চলের মানুষকে ক্যামেরার সামনে আপনি অভ্যস্ত করালেন কী করে, কত সময় লাগল, কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল?

কামার: আমি যে দৃশ্যপটের সিনেমা বানাতে চাই, সেটা আমি বাইরে থেকে অভিনয়শিল্পী নিয়ে এসে তাদেরকে তৈরি করে, সেট ডিজাইন করে শ্যুট করার চাইতে সরাসরি ওই স্থানে গিয়ে সেখানে যারা আছেন, থাকছেন তাদের নিয়েই কাজটা করতে চেয়েছি। 'শুনতে কি পাও!' সাড়ে তিন বছরের লম্বা একটা সফর ছিল। অনেক জায়গা ঘুরে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে সুতারখালীতে শ্যুট করব। এরপর আমার প্রায় ছয় মাস লেগেছে সেখানকার মানুষজনকে ক্যামেরায় অভ্যস্ত করতে। অনেকবার যাওয়া আসা করতে হয়েছে।

'শুনতে কী পাও!' সিনেমার পোস্টার ও অর্জন। ছবি: কামার আহমাদ সাইমনের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

প্রথমবার যখন যাই তখন সবাই সেজেগুজে তৈরি হয়ে ছিল যেহেতু সিনেমা হবে। কিন্তু আমি ক্যামেরা বন্ধ করে ওদের সাথে গল্প করি। শ্যুটিং আর করি না। এরকম কয়েকবার যখন হলো ওরা ধরেই নিল যে "এই লোক খামাখাই সিনেমার কথা বলে, বানায় না"। যখন ওরা নিজেদের ছেড়ে দিল তখনই আমি শ্যুট শুরু করলাম। এর জন্য অনেক ধৈর্য লাগে, কিছু কৌশল লাগে, নিজেকেও অনেক শিখতে হয়, প্রস্তুত করতে হয়। এটা এক ধরনের চর্চা। আমার সিনেমায় আমি ব্রেখটের ফোর্থ ওয়াল ব্রেক করতে পছন্দ করি। দর্শককে ধাক্কা দিতে চাই, চমকে দিতে চাই — যাতে সে ভুলে না যায় যে এইটা একটা সিনেমা।

'অন্যদিন…' সিনেমাটি এখনো সেন্সরের ছাড়পত্র পায়নি। এটি নিয়ে আপনার ভাবনা জানতে চাই।

কামার: ২০২২ সালে 'অন্যদিন…' নিয়ে আমি বিশ্বের বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে ঘুরেছি। এরপরে আমি এটি সেন্সরে জমা দিই। এক বছরের বেশি হলো সিনেমাটি সেন্সর ছাড়পত্র পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।

'অন্যদিন' সিনেমার দৃশ্য। ছবি: ইডফার সৌজন্যে

অনেক নির্মাতা আছেন যারা সেন্সর জটিলতা বা দীর্ঘ অপেক্ষার কারণে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিনেমা মুক্তি দেন…

কামার: 'শুনতে কি পাও' বা 'অন্যদিন' এই সিনেমাগুলো আমি বড় পর্দার জন্যই নির্মাণ করেছি। ছোট পর্দায় দেখলে দর্শক যা দেখবে সেটা কিন্তু আমি বানাইনি। আমি বড় পর্দায়ই সিনেমা দেখাতে চাই। সেজন্য আমি সেন্সরের অপেক্ষা করি। আর নির্মাতাদের সেন্সর জটিলতার ক্ষেত্রে আমার মনে হয়, চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রতি রাষ্ট্রের আরও শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। আমি নিজের কথা বলছি না। সব নির্মাতার কথা বলছি। একটা সময়ের ন্যারেটিভ থেকে একটা সিনেমাকে গায়েব করে দেওয়ার অর্থ হলো ওই সময়টাকেই গুম করে দেওয়া, সাথে নির্মাতাকে গুম করে দেওয়া।

আমাদের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা বা তরুণ নির্মাতারা কি ফেস্টিভ্যালমুখী হয়ে যাচ্ছে?

কামার: দেখুন, আপনি তখনই বাইরে যাবেন যখন আপনি দেখবেন আপনার লোকাল অডিয়েন্স আপনার ট্যালেন্টকে জাস্টিফাই করছে না বা আপনি যা বলতে চাচ্ছেন সেটাকে রিচ করছে না। কেউ কিছু বলতে চাচ্ছে, একটা সিনেমা দেখাতে চাচ্ছে কিন্তু পারছে না তখন সে খোঁজে যে কীভাবে সেটা করা যায়। হয়তো আমি ইডফার মতো কম্পিটিশনে যাই বলেই গণমাধ্যম আমাকে রিচ করেছে। এটা আমাদের কালচারের সমস্যা, একটা কলোনিয়াল লিগেসি। বিশ্বের সবচেয়ে সমাদৃত প্ল্যাটফর্মে যখন বাংলাদেশের কোনো ছবি যায় তখন সেটা বাংলাদেশকেও রিপ্রেজেন্ট করে।

পৃথিবী তো আসলে ইউরোসেন্ট্রিক। আমরা যারা পোস্ট কলোনিয়াল দেশ থেকে যাই, যদিও আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আমরা খুবই কলোনাইজড একটা পৃথিবীতে আছি। কারণ এই বড় বড় থিয়েটারে যাওয়া, নিজের সিনেমার প্রদর্শনী করার মাধ্যমে আমার দেশের ভেতরের দর্শকের কাছে পৌঁছানো যায়। কারণ আমার অডিয়েন্স এখনো আমার এই ইন্টারন্যাশনাল রিচটাকেই এপ্রিশিয়েট করে। আপনি যখনই রিকনিশন পাবেন, একনলেজড হবেন তখন আপনি আর কোথাও যাবেন না।

তবে এর সমালোচনাও আমার আছে। আমি কী সিনেমা বানালাম, কেন বানালাম, কী দেখানোর চেষ্টা করলাম এদিকে নির্মাতাদের এখন মনোযোগ কমে যাচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে কখনোই মনে হয় না পৃথিবীর কোনো আর্টই ফর দ্য সেইক অফ আর্ট কখনো ছিল বা থাকবে। আমি মনে করি এটার একটা গন্তব্য থাকে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago