নিজের ডিভোর্স নিয়ে কথা বললেন এস আই টুটুল

এস আই টুটুল ও আকিদুল ইসলাম। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

সঙ্গীতে জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত শিল্পী এস আই টুটুল এখন আমেরিকায়। দেশ থেকে দূরে থাকার কারণেই তানিয়া আহমেদের সঙ্গে তার বিবাহ বিচ্ছেদের পর তাকে ঘিরে ছড়িয়েছে নানা রকম গুঞ্জন। 

তানিয়া বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে কথা বললেও একেবারেই চুপ থেকেছেন টুটুল। তার নীরবতাই ইন্ধন যুগিয়েছে গুঞ্জন রটনায়। 

কোনো কোনো মিডিয়া লিখেছে, আমেরিকার গ্রিনকার্ড পাওয়ার জন্য সে দেশের সিটিজেন এক মেয়েকে বিয়ে করেছেন তিনি। কেউ লিখেছে, তানিয়ার কাছে দুই সন্তান রেখে বিলাসবহুল জীবন কাটাচ্ছেন আমেরিকায়। কোনো খোঁজ নিচ্ছেন না সন্তানদের। বিবাহ বিচ্ছেদের চিঠিও নাকি টুটুলই পাঠিয়েছেন তানিয়াকে। কেউ বলেছেন, তানিয়া আহমেদের তারকাখ্যাতিকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে উপরে উঠেছেন এস আই টুটুল। নিজে খ্যাতি পাবার পর অকৃতজ্ঞ হয়েছেন তিনি। ভুলে গেছেন তানিয়ার অবদান। 

টেলিফোনে আজ টুটুলের সঙ্গে কথা হলো দীর্ঘক্ষণ। আমাদের বন্ধুত্ব প্রায় দুই যুগের। সিডনিতে তিনি যতবার এসেছেন আমার বাড়িই হয়েছে তার প্রথম ঠিকানা। তার অ্যালবামে আমার লেখা গান আছে। ওই গানটি তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিবেশন করে এতটাই জনপ্রিয় করেছেন যে নাট্য নির্দেশক মাহফুজ আহমেদ তার পরিচালিত দুটি নাটকে গানটি ব্যবহার করেছেন। 

আজ ফোনে টুটুল প্রথমেই বললেন, 'আমাকে আপনি চেনেন না! খুব কাছে থেকে আমাকে দেখেননি? আমি কি সংসার ভাঙার মতো মানুষ। অনেক চেষ্টা করেছি সংসারটা টিকিয়ে রাখতে। আমি পারিনি। আমি নই, তানিয়াই আমাকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছে।'

টুটুল এবং তানিয়া দুজনকেই খুব কাছে থেকে দেখেছি আমি। অজস্র আড্ডায় আমরা সন্ধ্যাকে ভোর করেছি। দুজনকে সুখি দেখেছি। একজনের প্রতি আরেকজনের শ্রদ্ধাবোধও আমাকে মুগ্ধ করেছে সব সময়। হঠাৎ করে কেন বিরহের সুর বেজে উঠলো তাদের সংসারে? জানতে চাই টুটুলের কাছে। তিনি জানান, তানিয়া আমার সন্তানদের মা। তাকে নিয়ে কোনো বিরূপ মন্তব্য করতে চাইনি বলেই এতদিন চুপ করে থেকেছি। কিন্তু এখন দেখছি, আমার চুপ থাকাটাকেও ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। সব দোষ চাপানো হচ্ছে আমার ওপর। আমি ছোটবেলা থেকে আমার মা-বোনদের আচার-আচরণ, জীবনযাপন দেখে বড় হয়েছি। তাদেরকে দেখেছি, সংসারের প্রতি কত দায়িত্বশীল। আগে সংসার তারপর অন্য কিছু। কিন্তু তানিয়ার ক্ষেত্রে ছিল সম্পূর্ণ উল্টো। সংসারের চেয়ে বাইরেটাই ছিল তার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বেশি আকর্ষণীয়। তানিয়াই আমাকে বলেছিল, সে স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করতে চায়। সে বলেছিল, যখন যেখানে খুশি বেরিয়ে যাবে। কোথায় যাচ্ছে, কখন ফিরবে এসব কোনো কিছুই আমি জানতেও চাইতে পারব না ইত্যাদি। এক সময় দেখলাম, সে তার ইচ্ছে মতো চলাফেরাও শুরু করেছে। যা আমি মেনে নিতে পারিনি।' 

কিন্তু আমেরিকার যে মেয়েটিকে বিয়ে করেছেন বলে মিডিয়াতে এসেছে, সেটা কি অস্বীকার করবেন। আমি প্রশ্ন করি।  টুটুল বলেন, 'এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই এরকম মিথ্যা গুঞ্জন ছড়ানো হয়েছে।' তাহলে সত্যটা কি? জানতে চাই টুটুলের কাছে। জনপ্রিয় এ শিল্পী বলেন, 'তানিয়ার সঙ্গে আমার বিবাহ বিচ্ছেদের এক বছর পর আমি আমেরিকায় যাই একটি সঙ্গীত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। সেখানে একটি মেয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়, বন্ধুত্ব হয়। কখনোই আমাদের বিয়ে হয়নি।' 

টুটুল দুঃখ করে বলেন, 'আমি নাকি আমার এবং আমার বাচ্চাদের গ্রিনকার্ড করার জন্য আমেরিকান সিটিজেনকে বিয়ে করেছি। অনেক বছর আগেই আমার এবং আমার পরিবারের সবারই গ্রিনকার্ড হয়েছে এবং সেটাও ভিআইপি ক্যাটাগরিতে।'

প্রায় ৪ বছর আলাদা থাকার পর বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে টুটুল-তানিয়ার। 

 

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

 

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

1h ago