রাজকে অফিসিয়ালি ডিভোর্স দিয়েছি: পরীমনি
চিত্রনায়িকা পরীমনি স্বামী শরীফুল রাজকে ডিভোর্স দিয়েছেন আগেই একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছিল। সূত্র জানায়, ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে ডিভোর্স পেপারে সই করেন পরীমনি। ব্যক্তিগত সমস্যার জেরে দীর্ঘদিন আলাদা থাকছিলেন তারা।
আজ বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরীমনি।
পরীমনি তার ফেসবুকে পুরোনো একটা স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট শেয়ার করে লিখেছেন, 'নিশ্চয়ই এই স্ট্যাটাসের কথা মনে আছে অনেকেরই! সেবারও রাজ ৫ দিনের মাথায় বাসায় ফিরে আমার ফেসবুক থেকে এটা ডিলিট করে দিয়েছিল। তারপর এসব ঘটনার সে পুনরাবৃত্তি করেছে বারবার। স্যরি বলা, না খেয়ে থাকা, পা ধরে মাফ করে দাও আর হবে হবে না, এমনকি সুইসাইডের মতো হুমকিতেও ব্ল্যাকমেইলের শিকার হতে হয়েছে আমাকে! একই রকম ভুলের ক্ষমা কতবার করা যায় আমি জানি না। আমি শুধু সব ভুলে সুন্দর স্বাভাবিক একটা পারিবারিক সম্পর্ক চেয়েছিলাম। কিন্তু সে কখনোই এই সম্পর্কটাকে ওউন করেনি। সবার সামনে আমার বউ, আমার বাচ্চা করে বেড়ানো ভয়ংকর মানুষ একজন; যে কি না এই সম্পর্কটাকে শুধু নিজের স্বার্থে ইউজই করে গেল প্রতিনিয়ত!
আমি এমন ভয়ংকর একজন মানুষকে বারবার সুযোগ দিয়েছি। সেও সুযোগ পেত। কারণ আইনগতভাবে তার সঙ্গে আমার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি। এসবে বারবার আমি অসম্মানিত হয়েছি আপনাদের কাছেও। আমাকে ক্ষমা করবেন।
আমি তাকে অফিসিয়ালি ডিভোর্স দিয়েছি। খুবই স্বাভাবিক ওয়েতে। এটাও তাকে আমার এক প্রকার ক্ষমা করে দেওয়া। না হয় আমার সঙ্গে যে অন্যায়গুলো করেছে তাতে তার জেল হওয়ার কথা।
বিঃদ্রঃ আমার ছেলের যাবতীয় খরচ মানে ভরণপোষণ থেকে আগামীতে পড়াশোনা যা কিছু আছে সব আমি বহন করব, এতদিন যেভাবে করেছি। বাচ্চার ফুল গার্ডিয়ানশিপ এখন তার মার। এ বিষয়ে যা কিছু বলার আমার আইনজীবীরা বলবেন।'
২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর বিয়ে করেন চিত্রনায়িকা পরীমনি ও চিত্রনায়ক শরীফুল রাজ। তবে পারিবারিকভাবে ২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি ঘরোয়াভাবে আবার তাদের বিয়ে হয়। ২০২২ সালের ১০ আগস্ট তাদের ছেলে শাহীম মুহাম্মদ রাজ্যের জন্ম হয়।
পরীমনি যে পুরোনো স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন, সেটিতে লেখা ছিল, 'একটা সম্পর্কে পুরোপুরি সিরিয়াস বা খুব করে না চাইলে একটা মেয়ে বাচ্চা নেওয়ার মাতা এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে না কখনোই। আমার জীবনের সবটুকু চেষ্টা যখন এই সম্পর্কটাকে ঠিকঠাক টিকিয়ে রাখা তখনই আমাকে পেয়ে বসা হলো। যেন শত কোটি বার যা ইচ্ছে তাই করলেও সব শেষে ওই যে আমি মানিয়ে নিই এটা রীতিমতো দারুণ এক সাংসারিক সূত্র হয়ে দাঁড়াল। আমি জোর দিয়ে বলতে পারি, আমাদের এই সম্পর্ক এতদিন আমার এফোর্টে টিকে ছিল শুধু।
কিন্তু বারবার গায়ে হাত তোলা পর্যায়ে পৌঁছালে কোনো সম্পর্কই আর সম্পর্ক থাকে না। স্রেফ বিষ্ঠা হয়ে যায়। রাজ্যের দিকে তাকিয়ে বারবার সব ভুলে যাই। সব ঠিক করার জন্যে পড়ে থাকি। কিন্তু তাতে কি আসলেই আমার বাচ্চা ভালো থাকবে! না। একটা অসুস্থ সম্পর্ক এত কাছে থেকে দেখে দেখে ও বড় হতে পারে না। তাই আমি, রাজ্য এবং রাজের মঙ্গলের জন্যই আলাদা হয়ে গেলাম। রাজ এখন শুধু আমার প্রাক্তনই না,আমার ছেলের বাবাও।
তাই রাজ্যের বাবার সম্মান রাখতে পাবলিকলি আর বাকি কিছু বলছি না আমি। তবে আমার ওপর তার আর তার পরিবারের কোন অসুস্থ আচরণ বা হার্মফুল কিছু করার চেষ্টা করলে আমি কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব। সম্মানিত গণমাধ্যমকর্মী যারা রয়েছেন আপনারা নিশ্চয়ই আমার মানসিক অবস্থা বুঝতে পারবেন আশা করছি। আমাকে একটু সময় দিন। শারীরিকভাবেও আমি বিধ্বস্ত।
রাজ্য তার বাবা-মাকে একসঙ্গে নিয়ে বড় হতে পারল না এর থেকে কষ্টের আর কী হতে পারে আমার কাছে.....!'
Comments