ফোন কল ও মেট্রো ভাড়ায় চাপতে পারে করের বোঝা

কর
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

রাজস্ব আয় বাড়াতে সরকার কর বাড়ানোর কথা ভাবছে। আগামী অর্থবছরে মোবাইল ফোন কল ও মেট্রোরেল যাতায়াতসহ অন্যান্য দৈনন্দিন কাজে জনগণকে বেশি টাকা গুণতে হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া অর্থবছরে সংসদ সদস্যরা শুল্ক ছাড়া গাড়ি আমদানির সুযোগ হারাতে পারেন। এটি বাস্তবায়িত হলে তাদেরকে আমদানি শুল্ক হিসেবে গাড়ির দামের প্রায় ৪৪ শতাংশ বাড়তি দিতে হবে।

কয়েকটি নিত্যপণ্য ছাড়া বেশিরভাগ পণ্যে শুল্কমুক্ত আমদানি সুবিধা চালু রাখার সম্ভাবনা নেই।

আরও বিষয় হলো, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো কিছু শর্ত পূরণ করলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কর্পোরেট করের হারে আড়াই শতাংশ পয়েন্ট কমতে পারে। বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মুনাফার ওপর সাড়ে ২৭ শতাংশ হারে কর দিয়ে থাকে।

বেশি আয় করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ আয়কর দিতে হতে পারে। পুঁজিবাজারে বড় বিনিয়োগকারীদের মুনাফার ওপরও কর আরোপ করা হতে পারে।

এটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে।

এটি চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। গত পাঁচ বছরে এনবিআরের গড় বার্ষিক রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ১১ শতাংশকে ছাড়িয়ে গেছে।

গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠকে এনবিআরের কর্মকর্তারা কর পরিকল্পনা তুলে ধরেন। বাজেট বাস্তবায়নে রাজস্ব আদায় বাড়ানো ও ঋণের ওপর নির্ভরতা কমানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া বেশিরভাগ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

করমুক্ত আয়সীমা টানা দ্বিতীয় বছরের মতো বহাল রাখার কথাও ভাবছে এনবিআর।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মূলধনী মুনাফার ওপর পাঁচ থেকে ২৫ শতাংশ কর দিতে হতে পারে।

এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, আগামী অর্থবছরে কোমল পানীয় প্রস্তুতকারকদের মোট লেনদেনের ওপর পাঁচ শতাংশ কর দিতে হতে পারে। বর্তমান এটি তিন শতাংশ।

কেক, বিস্কুট, চকলেট, জ্যাম, জেলি, জুস ও আইসক্রিম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকেও মোট লেনদেনের ওপর পাঁচ শতাংশ ন্যূনতম কর দিতে হতে পারে।

কর কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী অর্থবছরে এনবিআরের লক্ষ্য এক লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা আয়কর আদায় করা। এটি আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।

কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে প্রায় ২০টি পণ্যে কর অব্যাহতি তুলে নেওয়া ও ভ্যাটের আওতা বাড়ানোর সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশ বিশ্বের সর্বনিম্ন কর-জিডিপি অনুপাতের মধ্যে একটি।

মোবাইল ফোন কলের ওপর সম্পূরক শুল্ক বর্তমান ১৫ শতাংশ থেকে বাড়ানোর পাশাপাশি মেট্রোরেলের ভ্রমণ ভাড়ার ওপর ভ্যাট আরোপ করা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা।

চলতি অর্থবছরের সংশোধিত কর আদায় লক্ষ্যমাত্রা ১৭ শতাংশ বাড়িয়ে ভ্যাট থেকে এক লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে পারে এনবিআর।

একইভাবে কাস্টমস ডিউটি ১২ শতাংশ বাড়ানো হলে এ খাত থেকে এক লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকা আদায় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

1,500 dead, nearly 20,000 injured in July uprising: Yunus

He announced plans to demand the extradition of deposed dictator Sheikh Hasina from India

1h ago