সিরাজগঞ্জে বিসিক শিল্পপার্ক

৪ বছরের প্রকল্পের কাজ গড়াল ১৪ বছরে

সিরাজগঞ্জে বিসিক শিল্প পার্ক

জমি অধিগ্রহণে দেরি ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না পাওয়ায় সিরাজগঞ্জে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) ৪ বছর মেয়াদি শিল্পপার্ক প্রকল্পের নির্মাণ কাজ পা দিয়েছে ১৪ বছরে।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) খরচ না বাড়িয়ে চতুর্থবারের মতো প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছে। এর আগে, সংশোধনের সময় প্রকল্পের খরচ ৩ গুন বেড়েছে।

তবে, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) ২০২৪ সালের মধ্যে বাকি কাজ শেষ করতে বলার পাশাপাশি প্রকল্পের সময় আর না বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।

উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোয় এক লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ানো ও দারিদ্র্য দূর করার লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় ২০১৪ সালে ৩৭৯ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি হাতে নেয়।

পরে প্রথমবারের মতো সংশোধন করে প্রকল্পটির খরচ বাড়িয়ে ৪৮৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা করা হয়। সময় বাড়ানো হয় ২০১৫ সাল পর্যন্ত।

প্রকল্পটি আরও দুইবার সংশোধন করা হয়। খরচ বাড়িয়ে প্রথমে ৬২৮ কোটি ১০ লাখ টাকা ও পরে ৭১৯ কোটি ২১ লাখ টাকা করা হয়। প্রকল্পের সময় একবার ২০১৯ সালের জুন ও পরে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত আরও তিনবার সময় বাড়ানো হলেও প্রকল্পটির খরচ বাড়ানো হয়নি।

শিল্পপার্কটি সিরাজগঞ্জের সায়েদাবাদ ও কালিয়া হরিপুরে ৪০০ একর জায়গায় নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে ৮০১টির মতো প্লট থাকবে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, এই শিল্পপার্কে ৫৭০টি রপ্তানিমুখী ও আমদানি করা হয় এমন পণ্যের কারখানা করা হবে।

প্রকল্প পরিচালক জাফর বায়েজিদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রকল্পের ৮৪ শতাংশ ভৌত কাজ শেষ হয়েছে। আইএমইডির সুপারিশ মেনে বাকি কাজ শেষ করা হবে বলে আশা করছি।'

তিনি জানান, পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ এখনো বাকি। রাস্তার কাজ বাকি আছে ৬০ শতাংশ।

জমি অধিগ্রহণ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেতে দেরি হওয়ায় প্রকল্পের কাজে অতিরিক্ত সময় লেগেছে দাবি করে প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, '২০১৪ সালে জমি হস্তান্তর করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন না পাওয়ায় কাজ শুরু করতে পারিনি।'

তার ভাষ্য, 'পরিবেশগত ছাড়পত্র, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র ও অন্যান্য দাপ্তরিক কাগজ পাওয়ার পর ২০১৯ সালে প্রকল্পটির ভূমি উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। খরচগুলো সেই সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ধরা হয়েছিল।'

গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় ১৮ হাজার ৬৬ কোটি টাকার ১৯ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।

এগুলোর মধ্যে ৪ হাজার ২৮২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা খরচে মোংলা বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদিত হয়। এর মধ্যে ৩ হাজার ৭৮২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা চীন সরকার ঋণ হিসেবে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাকি ৫০০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা দেবে বাংলাদেশ সরকার। প্রকল্পের সময় ধরা হয়েছে ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত।

এ ছাড়াও, একনেক সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ অবকাঠামো উন্নয়ন ও গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।

অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে আছে ৩৬৩ কোটি টাকায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন, ৮২৭ কোটি টাকায় 'চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ ও পুনর্বাসন' এবং ২ হাজার ৬৮১ কোটি টাকায় '২০২২ সালে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ এলাকার জন্য সড়ক, সেতু, কালভার্ট নির্মাণ ও পুনর্বাসন' প্রকল্প।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka cannot engage with non-state actors: foreign adviser

Md Touhid Hossain also emphasised that peace and stability in the region would remain elusive without a resolution to the Rohingya crisis

20m ago