গল্প না খুঁজে বিনোদনের খোঁজ করতে পারেন

সূর্য (জিৎ) ভারতের মুম্বাই শহরের “ভাই” হিসেবে খ্যাত। তবে রবিনহুড ধরনের ভালো ভাই তিনি। মানুষের জন্য কিছু একটা করতে চান। তাঁর ইচ্ছা সূর্য ফাউন্ডেশন গড়ে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু, এই ফাউন্ডেশন তৈরি করতে লাগবে ৩৫,০০০ হাজার কোটি টাকা...
Boss-2

চলচ্চিত্র: বস টু

পরিচালক: বাবা যাদব ও আব্দুল আজিজ

অভিনয়: জিৎ, শুভশ্রী, নুসরাত ফারিয়া, চিরঞ্জিত, ইন্দ্রনীল, অমিত হাসান

সংগীত: জিৎ গাঙ্গুলী

সময়: ২ ঘণ্টা ২৪ মিনিট

মুক্তির তারিখ: ২৬ জুন

কাহিনী: সূর্য (জিৎ) ভারতের মুম্বাই শহরের “ভাই” হিসেবে খ্যাত। তবে রবিনহুড ধরনের ভালো ভাই তিনি। মানুষের জন্য কিছু একটা করতে চান। তাঁর ইচ্ছা সূর্য ফাউন্ডেশন গড়ে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু, এই ফাউন্ডেশন তৈরি করতে লাগবে ৩৫,০০০ হাজার কোটি টাকা৷ বাংলাদেশের ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ (অমিত হাসান) প্রথমে ৫,০০০ কোটি টাকা দিতে চান। কিন্তু, সেই রাজ্যের মন্ত্রী খুন হওয়ার পর হঠাৎ আড়ালে চলে যান ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ। দিশেহারা হয়ে পড়েন সূর্য। অবশেষে, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় এতোগুলো টাকা। তবে, সেই টাকা নিয়ে পালিয়ে যান সূর্যের সঙ্গে থাকা কাছের কয়েকজন। সব দোষ এসে পড়ে সূর্যের উপর। টাকা দেওয়া মানুষগুলো খেপে ওঠেন।

নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে লড়াইয়ে নামেন সূর্য। সে কী পারবে সূর্য ফাউন্ডেশন গড়তে? এর উত্তর খুঁজতে হলে বাকিটা দেখতে হবে পর্দায়। জিৎ মানে সিনেমার সূর্য সবই পারেন পর্দায়। কী পারেন না সেটার একটি তালিকা করা যেতে পারে। ছবির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পর্দা জুড়েই ছিলো তাঁর সরব উপস্থিতি। জিৎ জানেন তাঁকে দেখতেই দর্শক হলে আসবেন। তাই যতোটুকু চমক নিয়ে হাজির হওয়া যায় ঠিক ততোটুকুই হয়েছেন। তিনি যখন অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয় করেন, নায়িকাকে নিয়ে দুর্ধর্ষভাবে বাইক ও কার চালান, হেলিকপ্টারে ঝুলে থাকেন। এই দৃশ্যগুলোতে দর্শকদের তালি প্রমাণ করে সচেতনভাবে এইগুলো করা হয়েছে শুধু বিনোদন দেওয়ার জন্য।

সংলাপ রচনাতেও রয়েছে দর্শকদের খুশি করার একটি প্রয়াস। পুলিশ কমিশনারকে (চিরঞ্জিত) যখন জিৎ বলেন, “সূর্য না চাইলে সারা ভারতবর্ষে কোন পুলিশের ক্ষমতা নেই তাঁকে ধরার।”’ কিংবা যখন মাঝেমাঝেই উচ্চারণ করেন, “আমি একবার বলি বা একশোবার বলি, তাতে মানেটা একইরকম থাকে।” তখন হলভর্তি দর্শকের চিৎকার ও শিস বলে দেয় এমন সংলাপ কেন রাখা হয়েছে।

এ ছবিতে অভিনয় খুব একটা খারাপ করেননি জিৎ। মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে চরিত্রে ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত অভিনয় করেছেন। সিনেমার গল্পে প্রথমে সহজ-সরল হয়ে প্রবেশ করলেও পরে আবিষ্কার করা যাবে তিনি আসলে খলনায়ক। দুটি চরিত্রেই বেশ ভালো মানিয়েছে তাঁকে। তবে তাঁর চরিত্রটি আরেকটু দীর্ঘ হলে ভালো লাগতো।

বাংলাদেশের ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ চরিত্রে অমিত হাসানের গেটআপ সুন্দর ছিলো, তবে তিনি আজব “বাঙ্গাল” ভাষায় সংলাপ বলেছেন। এটা কোথাকার ভাষা ঠিক বোঝা গেলো না। যিনি সংলাপ লিখেছেন তিনি না জানলেও অমিত হাসান এটা ঠিক করে দিতে পারতেন। নায়িকা হিসেবে রয়েছেন শুভশ্রী। তবে ছবিতে তাঁর অভিনয় করার সুযোগ খুব কম ছিলো। কয়েকটি সিকোয়েন্স আর গান ছাড়া কিছুই করার ছিলো না তাঁর। তবে অনেক বেশী গ্লামারাস লেগেছে তাঁকে। জিতের সঙ্গে শুভশ্রীর বরাবরই একটা ভালো রসায়ন রয়েছে।

বিরতির পর পর্দায় পাওয়া যাবে ছবির অন্য নায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে। আলোচিত-সমালোচিত “ইয়ারা মেহেরবান” গান দিয়ে তাঁর গল্পে ঢুকে যাওয়া। গানটিতে তিনি নিজের শরীরের অনেক বাঁক দেখিয়েছেন অবলীলায়। এমন সাহসী উপস্থাপনার জন্য একটা ধন্যবাদ তিনি পেতে পারেন। তবে নাচের আরও মুদ্রা শেখা উচিত তাঁর। যতোটুকু সময় পর্দায় ছিলেন ভালো করার চেষ্টা ছিলো তাঁর মধ্যে। তবে পর্দায় তাঁর উপস্থিতি অনেক কম।

“উড়েছে মন” গানটিতে জিৎ-শুভশ্রীর রসায়ন খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছেন দর্শকরা। তবে “বস টু” শিরোনাম গানটি ঠিক তেমন জমেনি।

ছবিটির গল্পে এমন কিছু নেই, যার রেশ আপনার মধ্যে থাকবে সিনেমা হল থেকে বের হওয়ার পর। ছবির শুরু থেকে গল্পের অনেক কিছু আপনি নিজে নিজে বুঝে নিতে পারবেন। তবে হলে যতক্ষণ থাকবেন ভালো বিনোদন পাবেন এটা বলা যায়।

Comments

The Daily Star  | English

Wage growth still below inflation

Unskilled workers wage grew 8.01% in September this year when inflation was 9.92%

2h ago