অক্টোবরে চালু হবে শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বহুল প্রত্যাশিত তৃতীয় টার্মিনালটি আগামী অক্টোবরে চালু হতে যাচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম জানায়, তৃতীয় টার্মিনালের শতভাগ নির্মাণ কাজ আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে। এরপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টার্মিনালের দায়িত্ব বুঝে নেবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, ক্যালিব্রেশন এবং যন্ত্রপাতির পরীক্ষা করা হয়েছে। টার্মিনালটি অক্টোবরের মধ্যেই ব্যবহারের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হবে।'

গত বছরের ৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় টার্মিনালটি আংশিক ব্যবহারের জন্য খুলে দেন। ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর শুরু হয়েছিল।

তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে শাহজালাল বিমানবন্দরে দুটি টার্মিনালের সঙ্গে আরও ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার স্থান যুক্ত হবে। তিনতলা টার্মিনাল ভবনটিতে থাকবে ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৬টি ডিপারচার ও ৫৯টি অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন ডেস্ক এবং তিনটি ভিআইপি ইমিগ্রেশন ডেস্ক। 

কনসালটেন্সি ফার্ম নিপ্পন কোইয়ের প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, টার্মিনালে অপারেশন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং নিরাপত্তার জন্য ৬ হাজার দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হবে। 
নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য প্রায় ৪ হাজার কর্মীর প্রয়োজন হবে। 

কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু এত লোকবল অক্টোবরের মধ্যে পাওয়া যাবে না, তাই প্রথম কয়েক মাসে টার্মিনালটি পুরোপুরি চালু নাও হতে পারে। শুরুর কয়েক মাস বেবিচক ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস টার্মিনালটি পরিচালনা করবে। আগামী বছরের প্রথম দিকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হবে এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে টার্মিনালটি পুরোপুরি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান বর্তমানে বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা দিয়ে থাকে। তারা গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং, ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমসও পরিচালনা করে। ইতোমধ্যেই সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের অধীনে একটি জাপানি কনসোর্টিয়ামকে তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

সূত্র জানায়, এ বিষয়ে বেবিচক ছয়টি জাপানি কোম্পানির একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। তবে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে প্রায় এক বছর সময় লাগতে পারে। 
একজন 'লেনদেন উপদেষ্টা'কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যিনি একটি প্রতিবেদন তৈরি করছেন। সেটি তিনি এপ্রিল মাসে বেবিচক-কে দেবেন। 

প্রতিবেদনে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগস্টের মধ্যে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা প্রদানে আগ্রহী জাপানি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে একটি চুক্তি সই হবে বলে জানা গেছে। 

কনসোর্টিয়ামটির প্রস্তুত হতে প্রায় ছয় মাস সময় লাগবে। ওই 

জাপানি ফার্ম প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত টার্মিনাল-৩ আংশিকভাবে চালু থাকবে। টার্মিনালের কার্যক্রম সম্পর্কে অক্টোবরে ঘোষণা দেবে বেবিচক।

 জাপানি কনসোর্টিয়াম টার্মিনালের অপারেশন পরিচালনা করবে এবং বেবিচক নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবে।

মফিদুর বলেন, 'আমরা নিজেরাই কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশন পরিচালনা করব। একজন যাত্রী বিমানবন্দরে প্রবেশ করার সময় থেকে বিমানে ওঠার সময় পর্যন্ত প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো নিশ্চিত করে জাপানি কোম্পানি বিমানবন্দরটি পরিচালনা করবে।'

তৃতীয় টার্মিনালটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যাতে যাত্রীদের ভেতরে ঢুকতে ও বের হতে সুবিধা হয়। টার্মিনালটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ভূগর্ভস্থ রেলপথ এবং বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের সাথে একটি টানেলের মাধ্যমে সংযুক্ত হবে। 

এছাড়া হজযাত্রীরা আশকোনা হজ ক্যাম্প থেকে আরেকটি টানেল দিয়ে তৃতীয় টার্মিনালে যেতে পারবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Is the govt backing the wrongdoers?

BNP acting Chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of a scrap trader in front of Mitford hospital due to what he said its silent support for such incidents of mob violence.

6h ago