ভারত-পাকিস্তান সংঘাত: অস্ট্রেলিয়ার সামাজিক বিভাজন বৃদ্ধির আশঙ্কা

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার দুটি প্রবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার পাকিস্তানের 'সন্ত্রাসী অবকাঠামো' লক্ষ্য করে ভারতের বিমান হামলা শুরুর পর দুই দেশ কয়েকদিন ধরে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সংগঠকরা মনে করছেন, চলমান সংঘাত—যেটিকে কয়েক দশকের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের সবচেয়ে খারাপ বলে মনে করা হয়—অস্ট্রেলিয়ার সামাজিক সংহতিকে প্রভাবিত করতে পারে।
তারা লক্ষ্য করেছেন, ইতোমধ্যে কিছু উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধও প্রবাসী দুই সম্প্রদায়কে মুখোমুখি করেছে। ২০২৪ সালের আগস্টে অস্ট্রেলিয়ান সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স অর্গানাইজেশনের মহাপরিচালক মাইক বার্গেস বলেছিলেন, 'গাজার যুদ্ধ অস্ট্রেলিয়ায় সামাজিক সংহতিকে ক্ষুণ্ণ করেছে।'
যদিও অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ এশীয় সম্প্রদায় ঐতিহ্যগতভাবে একে অপরের প্রতি অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক—তারপরও যুদ্ধ স্থায়ী হলে সংশ্লিষ্ট দুটি সম্প্রদায়কে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার বহুসংস্কৃতি সম্প্রদায়ের একটি বিশাল অংশ ভারত ও পাকিস্তানে জন্মগ্রহণকারীরা। ২০২১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার অধিবাসী আছেন যাদের জন্ম ভারতে এবং প্রায় ৯০ হাজার আছেন যাদের জন্ম পাকিস্তানে।
ভারতীয় ও পাকিস্তানী সম্প্রদায়ের নেতারা অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী সদস্যদের সামাজিক সংহতি রক্ষার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।
তারা বলছেন, 'বিদ্বেষ প্রচার করার পরিবর্তে আসুন আমরা একত্রিত হই এবং বলি, এখন শত্রুতা বন্ধ করার সময় এসেছে। এখন আমাদের সব সম্প্রদায়কে একত্রে কাজ করতে হবে। বিদেশি বিষয়গুলো অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে নিয়ে আসা উচিত নয়, কারণ এটি এমন একটি দেশ যেখানে আমরা সবাই ভালো আছি।'
নিউসাউথ ওয়েলস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র ইয়াদু সিং এসবিএস নিউজকে বলেছেন, 'ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা যদি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে পরিণত হয়, তাহলে অস্ট্রেলিয়ায় পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে।'
'বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে যে বিশ্বের সেই অংশের সেই উত্তেজনা এখানে এসে শেষ হতে পারে,' তিনি যোগ করেন।
দুটি দেশের সংঘর্ষের বিষয়ে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় কোনো বড় প্রতিবাদ না হলেও অনলাইনে উত্তেজনা দৃশ্যমান হয়েছে।
অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের 'শত্রুদের উৎপাদিত' পণ্য বয়কটের অনুরোধ করেছেন।
আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক
Comments