গ্রিসে ট্রান্সজেন্ডার নারীকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার বাংলাদেশির পরিচয় মিলেছে

আনা ইভানকোভা
আনা ইভানকোভা (৪৬) । ছবি: সংগৃহীত

গ্রিসে এক ট্রান্সজেন্ডার নারীকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার প্রবাসী বাংলাদেশির পরিচয় পাওয়া গেছে। 

গ্রেপ্তার মহিম গাজী (৩৫) ২০১৭ সাল থেকে গ্রিস প্রবাসী। 

দেশটির সংবাদমাধ্যমে গতকাল বৃহস্পতিবার মহিম গাজীর ছবিসহ এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণস্বরূপ একটি ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করা হয়েছে। 

সেখানকার বাংলাদেশি কমিউনিটি সংগঠকরা নিশ্চিত করেছেন যে মহিম গাজী এথেন্সের সক্রাথোস এলাকায় বাঙালি মালিকানাধীন একটি দোকানের কর্মী ছিলেন। 

অনিয়মিত কর্মী মহিম গাজীর বৈধ কাগজপত্র ছিল না। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায়। 

গ্রিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানান, এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তবে সরকারিভাবে এখনো দূতাবাসকে কিছু জানানো হয়নি।

গত ১০ জুলাই রাজধানী এথেন্সের অ্যাজিওস প্যানটেলিমোনাসে এলাকায় নিজ বাসায় খুন হন কিউবান ট্রান্সনারী আনা ইভানকোভা (৪৬)। হত্যার অভিযোগে বুধবার দুপুরে গ্রিক পুলিশ গ্রেপ্তার করে ওই বাংলাদেশি যুবককে।

পুলিশের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তার মহিম গাজী স্বীকার করেছেন যে তিনি ইভানকোভাকে চিনতেন। তবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করছেন তিনি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ, ঘটনাস্থলে তার উপস্থিতির আলামত ও ফিঙ্গার প্রিন্ট, শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত এবং হাতের গয়না হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাংলাদেশি যুবকের সম্পৃক্ততার 'প্রমাণ দেখায়'।  

প্রাথমিক তদন্তে এসব প্রমাণের ভিত্তিতে পুলিশের অ্যাটিকা সিকিউরিটির হোমিসাইড ডিপার্টমেন্টের একটি দল মহিম গাজীকে শনাক্তের পর গ্রেপ্তার করে।

পুলিশের তদন্ত দেখা গেছে, হত্যার দিন ভোরে মহিমকে ওই নারীর বাসায় প্রবেশ করতে এবং কয়েক ঘণ্টা পর জানালা দিয়ে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। 

ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে তাকে ঘটনাস্থল থেকে পালানো, পায়ে হেঁটে এথেন্সের কেন্দ্রে যেতে দেখা যায়। তখন তার হাতে ও মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। 

কয়েক মিনিট হেঁটে তিনি ওমোনিয়ায় নিজ বাসায় পৌঁছান।

প্রাথমিক তদন্তে নিহত আনা ইভানকোভার মাথা, পিঠ, বাম বাহু, পেটসহ সারা শরীরে ১৫টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজের শরীরে আঘাতের বিষয়ে মহিম বলেছেন, কেউ তাকে ছিনতাইয়ের উদ্দেশে জিম্মি করে মারধর করেছিল। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে তার এ দাবি গ্রহণযোগ্য হয়নি।

প্রথমে তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। তখন পুলিশ তার আংটি ও চেইন দেখতে পায় যা ক্যামেরায় ধারণ হওয়া ছবির অপরাধীর সঙ্গে মিলে যায়।

Comments