শ্যামলীর ‘আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল’ থেকে বের করে দেওয়া শিশুটি এখন সুস্থ
বিলের পুরো টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ঢাকার শ্যামলীর 'আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল' থেকে বের করে দেওয়া যমজ দুই শিশুর একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুস্থ হয়ে উঠেছে। আজ সোমবার বিকেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশু আব্দুল্লাহকে ছাড়পত্র দিয়েছে।
গত ৬ জানুয়ারি শ্যামলীর ওই হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার পর আব্দুল্লাহর যমজ ভাই আহমদ মারা যায়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আব্দুল্লাহকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় শিশুদের মা আয়েশা বেগমের মামলায় হাসপাতালের মালিক গোলাম সরোয়ারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
শিশু আব্দুল্লাহ ছাড়পত্র পাওয়ার পর আজ বিকেলে হাসপাতাল চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করেন র্যাব-৩ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. জুলকার নায়েন প্রিন্স।
তিনি জানান, বিল দিতে না পারায় 'আমার বাংলাদেশ হাসপাতাল' কর্তৃপক্ষ জমজ দুই শিশুকে বের করে দিয়েছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পথে মারা যায় আহমদ। মুমূর্ষু অবস্থায় আব্দুল্লাহকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সুস্থ হয়ে ওঠায় চিকিৎসক ছাড়পত্র দিয়েছেন। তাকে ৩০ দিন পর আবার ফলোআপে আনতে বলেছে।'
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় শিশুটির মা আয়েশা বেগম বলেন, আমার আব্দুল্লাহ এখন সুস্থ আছে। কিন্তু আরেক সন্তান্তকে হারিয়েছি। তাকেও আজ সুস্থ করে বাড়ি নিতে পারতাম, যদি 'আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে' না নিয়ে যেতাম।
আয়েশা বেগম আরও বলেন, হাসপাতাল থেকে বের করে দিয়ে আমার সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জানান, শিশুটি ভর্তির পরপরই আমাদের চিকিৎসকরা সর্বাত্মক চিকিৎসা দিয়েছেন। সব সময় আমি খবর নিয়েছি। ওষুধপত্র থেকে শুরু করে সব রকম সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।
আয়েশা বেগম জানান, তাদের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায়। এখন তারা সাভার রেডিও কলোনী এলাকায় থাকেন। তার স্বামী মো. জামাল সৌদি আরব প্রবাসী।
তিনি আরও জানান, জ্বর নিয়ে আব্দুল্লাহ ও আহমেদকে গত ৩১ ডিসেম্বর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন। সেখানে তাদের অবস্থার তেমন উন্নতি না হওয়ায় দুই দিন পর হাসপাতালের সামনে থেকে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে বাসায় ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। অ্যাম্বুলেন্স চালকের প্ররোচনায় শিশু দুটিকে শ্যামলীতে 'আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে' নিয়ে যান।
আয়েশা বেগম জানান, তিন দিন পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা বিল পরিশোধের জন্য চাপ দেয়। এক দিন পরই দেড় লাখ টাকা বিল দাবি করে। পরে আমি ৫৫ হাজার টাকা পরিশোধ করি। তারা পুরো বিল দেওয়ার জন্য আমাকে চাপ দিতে থাকে। এক পর্যায়ে শিশু দুটিকে হাসপাতাল থেকে বের করে আমার কাছে দিয়ে দেয়। অসুস্থ অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে আহমেদ মারা যায়।
Comments