‘আটা-ময়দার দাম প্রতিদিনই বাড়ছে’
ঈদুল ফিতরের পর থেকে নারায়ণগঞ্জে আবারও আটা-ময়দার চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। চাহিদার সঙ্গে বাড়ছে আটা-ময়দার দাম। গমের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে আটা-ময়দা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ থেকে গম আমদানি বন্ধ থাকায় আটা-ময়দার দাম বাড়ছে।
আজ সোমবার সকালে শহরের অন্যতম খুচর বাজার দিগুবাবুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজি প্রতি আটার দাম বেড়েছে ৮-১০ টাকা এবং ময়দার ৫-৬ টাকা। প্রতি কেজি আটা ৪৮-৫০ টাকা এবং ময়দা ৫৮-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি আটা বিক্রি হয়েছে ৩৬-৩৮ টাকা এবং ময়দা ৪৮-৫০ টাকা।
মেসার্স নিউ শীতল ফ্লাওয়ার মিলসের মালিক আসাদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আটা-ময়দার দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। গম সংকট থাকায় গমের দাম বাড়ছে। গমের দাম বাড়ায় আমাদের আটা ও ময়দার বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ৯০০ টাকার গমের দাম বেড়ে এখন হয়েছে ১ হাজার ৬০০ টাকা মণ। গম থেকেই আটা হয় সেজন্য আটার দাম আরও বাড়বে। মানভেদে প্রতি ৫০ কেজি আটার বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ১৫০ টাকায়। একটু ভালো মানের আটা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ২৫০ টাকা।'
তিনি বলেন, 'রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গমের দাম বাড়ছে। তবে, রমযানে চাহিদা কম থাকায় দাম তেমন বাড়েনি। এ ছাড়াও, ভারত থেকে গম আসছিল। এখন ভারত থেকে দাম বাড়নো হচ্ছে এবং আমদানি বন্ধ আছে বলে দাম বেড়ে চলেছে।'
মেসার্স মোস্তফা অ্যান্ড সন্স পাইকারি আটা-ময়দা দোকানের বিক্রেতা ওমর ফারুক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ময়দা মানভেদে ২ হাজার ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা একদিন আগেও ২ হাজার ৪৮০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।'
নারায়ণগঞ্জ আটা-ময়দা মিল মালিক সমিতির অফিস সচিব রাফায়েত আহমেদ বলেন, 'আটা-ময়দার দাম বাড়ছে গমের জন্য। মিল মালিকরা ৬ মাস আগেও ৫০ কেজি গমের বস্তা কিনেছে ৯০০ থেকে ৯৪০ টাকায়। এখন সেই বস্তার দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এখন মান ভেদে ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'গম ব্যবসায়ীরা বলছেন রাশিয়া-ইউক্রেনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে গম আসছে না। ভারতের গমের মান তাদের মতো না। তারপরও ভারত থেকে গম কিনছিল মিল মালিকরা। কিন্তু, গত ২ দিন আগে সেই গমটাও দিচ্ছে না। এখন বাজারে ক্রাইসিস দেখা দিয়েছে। তাই বেশি দামে গম বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে আটা-ময়দার দাম বাড়ছে।'
নিতাইগঞ্জ আটা-ময়দা-গম ব্যবসায়ী সমিতির আহবায়ক জসিম উদ্দিন মৃধা বলেন, 'কোনো দেশ থেকেই গম আসছে না। তাই গমের বাড়ছে। সবশেষ ভারত থেকে গম আসছিল, সেটাও গত কয়েকদিন আগে বন্ধ করে দিয়েছে। ২ মাস আগে যখন গম ছিল ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা মণ এখন সেই গম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। আগামীতে আরও বাড়বে।'
তিনি বলেন, 'নিতাইগঞ্জে কেউ বিদেশ থেকে গম আমদানি করে না। দেশের বিভিন্ন বড় বড় গ্রুপগুলো গম আমদানি করে। তাদের কাছ থেকে এনে আমাদের গম বিক্রি করতে হয়। সেক্ষেত্রে তারা যে দামে আমদানি করে তার থেকে বেশি দামে আমাদের কাছে দেয়। আমরা সেটা কিনে বিক্রি করি।'
Comments