যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

যুক্তরাজ্যে গাড়ির জ্বালানি, খাদ্য, আসবাবপত্রসহ আরও অসংখ্য পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাবে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতি মার্চে গত তিন দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার ফেব্রুয়ারি মাসের ৬ দশমিক ২ শতাংশ থেকে বেড়ে মার্চে ৭ শতাংশ হয়েছে। দেশটিতে ১৯৯২ সালের মার্চের পর এটাই সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির হার।

এর ফলে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও অর্থমন্ত্রী রিশি সুনাকের ওপর দৈনন্দিন জীবনযাপনের খরচ কমানোর চাপ এসেছে।

সংবাদসংস্থা রয়টার্স দেশটির অর্থনীতিবিদদের মধ্যে একটি সমীক্ষা চালিয়েছে। সমীক্ষার ফল অনুযায়ী, বেশিরভাগ অর্থনীতিবিদের জানিয়েছেন, এই হার অপ্রত্যাশিত ও নজিরবিহীন। 

বিশ্লেষকদের মতে, গাড়ির জ্বালানি, খাদ্য, আসবাবপত্রসহ আরও অসংখ্য পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রভাবে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে।

যুক্তরাজ্যের বাজেট পূর্বাভাষ সংস্থাগুলোর মতে, ১৯৫০ সালের পর এবারই প্রথম যুক্তরাজ্যের বাসিন্দারা দৈনন্দিন জীবন যাপনের খরচ মেটাতে এতটা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। তারা আরও জানান, মূল্যস্ফীতির উচ্চ হার সরকারের জন্য অশনি সংকেত।

২০২০ সালে করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ চলাকালীন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে জন্মদিনের উৎসব পালনের জন্য গত মঙ্গলবার জনসন ও সুনাককে জরিমানা করেছে পুলিশ। তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এই দুই মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন।

বরিস জনসনের মেয়াদ শেষে এই পদের পরবর্তী দাবিদার হিসেবে সুনাকের নাম শোনা গেলেও বর্তমানে তার জনপ্রিয়তা অনেকাংশেই কমে গেছে।

মার্চে সুনাকের পেশ করা বাজেটে জীবনযাপনের খরচ কমানোর তেমন কোনো উদ্যোগ না থাকার অভিযোগ এসেছে।

মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশের পর সুনাক বলেন, 'আমি জানি অনেক পরিবার এখন উদ্বেগের মাঝে রয়েছে। সে কারণে আমরা মানুষের ওপর থাকা চাপ কমানোর জন্য বর্তমান অর্থবছরে ২২ বিলিয়ন পাউন্ড (২৯ বিলিয়ন ডলার) সহায়তা দেব।'

ব্রিটেনের মূল্যস্ফীতির হার গত এক বছর ধরেই নজিরবিহীনভাবে বেড়েছে। মূলত জ্বালানি খরচ বেড়ে যাওয়া ও মহামারীর সময় সাপ্লাই চেইন সংক্রান্ত জটিলতার কারণে যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বেশিরভাগ উন্নত দেশের অর্থনীতিকে একই ধারায় চলতে দেখা গেছে।

২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করার পর জ্বালানির খরচ আরও অনেক বেড়েছে। গত মাসে ব্রিটেনের বাজেটের দায়িত্বে থাকা সরকারি দপ্তর পূর্বাভাষ দিয়েছে, ২০২২ এর শেষ প্রান্তিকে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৮ দশমিক ৭ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা হবে গত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

মূল্যস্ফীতির চাপ আরও বেড়ে যাওয়ার পূর্বলক্ষণ হিসেবে উৎপাদকরা তাদের পণ্যের দাম গত ১২ মাসে (মার্চ পর্যন্ত) ১১ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়িয়েছেন। এর আগে সর্বশেষ এরকম ঘটনা ঘটেছে ২০০৮ এর সেপ্টেম্বরে।

একই সময়ে, উৎপাদকদের ব্যবহৃত কাঁচামালের খরচ ১৯ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। ১৯৯৭ সাল থেকে এ সংক্রান্ত নথি সংরক্ষণের পর এটাই সর্বোচ্চ বৃদ্ধি।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

2h ago