১২ বছর ধরে অবহেলিত, খুলনায় বাইপাস সড়ক সংস্কার করছেন স্থানীয়রা

শেখ আবু নাসের বাইপাস সড়কটি সংস্কারে কাজ করছেন স্থানীয়রা। ছবি: সংগৃহীত

খুলনা শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ১২ বছর ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চলাচলে অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে আছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও কোনো লাভ হয়নি।

এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা যা করেছেন, সেটাকে অসম্ভব বলে মনে করতে পারেন অনেকেই। তারা নিজেরাই রাস্তা সংস্কার করা শুরু করেছেন।

খুলনার বাস্তুহারা মোড় থেকে সিটি বাইপাস পর্যন্ত শেখ আবু নাসের বাইপাস সংযোগ সড়কটি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী। ২ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার সড়কের ইটগুলো উঠে গেছে, ফলে তৈরি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। শুকনো মৌসুমে ধুলো আর বর্ষায় কাদা এই পথের নিত্যসঙ্গী হয়ে ওঠে।

খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ২০০৩-০৪ অর্থবছরে শুরু হয়ে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হয় এই সড়কটি। তারপর থেকে, আর কোনো রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি।

গত ১৫ মে থেকে স্থানীয় ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা নিজেরাই শুরু করেন এই সড়ক সংস্কারের কাজ।

মদিনাবাগ জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত নৌ কর্মকর্তা মো. হেমায়েত হোসেন বলেন, 'এই বাইপাস সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার মানুষ চলাচল করেন। রাস্তার ২ পাশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫০টিরও বেশি। তবে নেই কোনো ফুটপাত।'

তিনি বলেন, 'রাস্তাটি মেরামত করা জরুরি হলেও তা করা হচ্ছে না। তাই আমরা স্বেচ্ছায় এখানে কাজ করছি। কিছু বাড়ির মালিক ইট ও বালি দিয়েছেন।'

স্থানীয় বাসিন্দা ও সমাজকর্মী রেশমা বলেন, 'আমরা বছরের পর বছর ধরে এই সমস্যা সমাধানের জন্য বলে আসলেও খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ), খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি), জেলা প্রশাসন কেউই রাস্তাটি মেরামত করেনি।'

খালিশপুর, দৌলতপুর ও বয়রা এলাকার বাসিন্দারা এই সড়কের বহাল দশার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

কেডিএ নির্বাহী প্রকৌশলী (রক্ষণাবেক্ষণ) মুন্তাসির মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, কেডিএ সাধারণত রাস্তা নির্মাণ করে। কিন্তু প্রকল্পগুলোর জন্য বাজেট বরাদ্দ না থাকায় সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে না।

বাইপাস সড়কটি সম্পর্কে তিনি বলেন, 'সড়কের এক কিলোমিটার কেসিসির এখতিয়ারে এবং বাকিটা এলজিইডির এখতিয়ারে। সড়ক সংস্কারের জন্য আমরা ২০১০ সালের ২৮ মার্চ ও ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তাদের চিঠি পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।'

কেসিসির ভূ-সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা  মো. নুরুজ্জামান তালুকদার জানান, কেডিএ থেকে যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল সেখানে সড়কটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ সম্পর্কে কিছু লেখা ছিল না।

ডুমুরিয়ার এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, 'এলজিইডির প্রকল্পের ধরনের সঙ্গে এটি মেলে না বলে আমরা এখনো দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।'

Comments

The Daily Star  | English

5 dead bodies recovered from launch in Meghna

The incident had occurred on the Meghna river under Chandpur Sadar upazila in an area adjacent to Shariatpur

21m ago