হাতিরঝিলে বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ, ওয়াটার বাস বন্ধের পরামর্শ

হাতিরঝিল। স্টার ফাইল ফটো

হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পকে 'জনগণের জাতীয় সম্পত্তি' ঘোষণা দিয়ে এর বৈশিষ্ট্য, সৌন্দর্য এবং জলভূমি রক্ষার নির্দেশনা জারি করেছেন হাইকোর্ট।

সম্প্রতি হাইকোর্ট এক পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ সংক্রান্ত ৪টি নির্দেশনা ও ৯টি সুপারিশ জারি করেছেন।

রায়ে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, 'হাতিরঝিলের পানি ও এর নান্দনিক সৌন্দর্য অমূল্য সম্পদ, যা কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না।'

৫৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ এ রায়ে আদালত ৬০ দিনের মধ্যে প্রকল্পের মধ্যে স্থাপন করা হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং দোকানসহ সব ধরনের ব্যবসায়িক কাঠামো উচ্ছেদ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে গত বছরের ৩০ জুন একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেঞ্চ এ বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দেন।

হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পের নির্মাণ কাজের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে আইনজীবী রিপন বাড়ইয়ের ওই রিট আবেদন করেছিলেন।

প্রকল্পের লে-আউট প্ল্যানের বাইরে নির্মাণ হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ রায়ে হাইকোর্ট প্রকল্পের মধ্যে হোটেল, রেস্তোরাঁ ও দোকানসহ সব ব্যবসায়িক কাঠামো বরাদ্দ ও নির্মাণ অবৈধ ঘোষণা করেন।

হাইকোর্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে 'হাতিরঝিল লেক সুরক্ষা, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ' গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন।

এ প্রকল্পের স্থায়ী পরামর্শক হিসেবে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রকৌশল বিভাগ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪তম ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডকে নিয়োগের সুপারিশ দেন হাইকোর্ট।

অন্যান্য সুপারিশের মধ্যে আছে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য ভূগর্ভস্থ আন্তর্জাতিক মানের টয়লেট স্থাপন, সবার জন্য নির্দিষ্ট দূরত্বে বিনা খরচে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা, বাইসাইকেল ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য হাঁটার পথ এবং পৃথক লেন নির্মাণ, ওয়াটার ট্যাক্সি নিষিদ্ধ করা।

এছাড়া হাতিরঝিলকে মাছের অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তোলা এবং বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে প্রকল্পের নামকরণ এবং এর নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য রাজস্ব বাজেট থেকে অর্থ বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছে রায়ে।

আবেদনের শুনানিকালে আবেদনকারীদের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ হাইকোর্টকে বলেন, 'প্রকল্প এলাকায় অবৈধভাবে রেস্টুরেন্টসহ কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে, যা ওই এলাকার মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে এবং প্রকল্পের সৌন্দর্য নষ্ট করছে।'

লে-আউট প্ল্যানের বাইরে স্থাপনা নির্মাণের কারণে হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পের নান্দনিকতা নষ্ট হচ্ছে বলেও তিনি যুক্তি দেন।

আবেদনের শুনানির সময় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পক্ষে আইনজীবী ইমাম হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Next nat'l polls: BNP urges CA, CEC to disclose what they discussed

Ensuring free and fair polls is now the main responsibility of EC and govt, he says

27m ago