লোডশেডিংয়ে নাকাল কুলাউড়ার মানুষ
তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার মানুষ। ইতোমধ্যে লোডশেডিং, ভৌতিক বিল ও গ্রাহক হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। তীব্র লোডশেডিং অব্যাহত থাকলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কুলাউড়া অফিস ঘেরাও করা হবে বলে মানববন্ধন থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মৌলভীবাজারের 'কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি' সাধারণ সম্পাদক এম আতিকুর রহমানের মায়ের বয়স আশি। তিনি বলেন, 'আমার মায়ের হাইপ্রেশার, ডায়বেটিকসহ দুইবার স্ট্রোক করেছেন। ফ্যান না থাকলে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু, কুলাউড়া শহরে প্রতিদিন চার-পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না।'
তিনি আরও বলেন, 'লোডশেডিংয়ের কারণ জানতে পিডিবির কার্যালয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন ধরেন না।'
তার মতো একই দাবি করেন স্থানীয়দের।
লোডশেডিং, ভৌতিক বিল ও গ্রাহক হয়রানির প্রতিবাদে গত সোমবার কুলাউড়া উপজেলায় মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। তীব্র লোডশেডিং অব্যাহত থাকলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কুলাউড়া অফিস ঘেরাও করা হবে বলে মানববন্ধনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সরেজমিনে এই প্রতিবেদক দেখেন, সেদিনের প্রতিবাদ সভা শেষ হওয়ার ত্রিশ মিনিট পর একবার লোডশেডিং হয়, তার তিন ঘণ্টা পর আবার লোডশেডিং হয়। এরপর বিকেল ৬টা ৩০ মিনিটে ও রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে আরও দু'বার লোডশেডিং হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, এভাবেই প্রতিদিন বিদ্যুতের ভেলকিবাজি চলে।
পৌর শহরের রেলস্টেশন চৌমোহনা চত্বরে 'কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি' ওই মানববন্ধনের আয়োজন করেছিল।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) কুলাউড়া পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি বদরুজ্জামান এতে সভাপতিত্ব করেন।
কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কিছুদিন আগে আমার পিডিবির কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। এ সময় সেখানে দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে আলোচনা করে বিদ্যুতের সমস্যার প্রতিকার দাবি জানিয়েছি। নির্বাহী প্রকৌশলী আশ্বাস দিলেও অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। এ কারণে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।'
তিনি আরও বলেন, '৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি এবং দাবি আদায়ে জনমত সৃষ্টি করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে। প্রয়োজনে পিডিবির কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।'
পিডিবির কুলাউড়া বিক্রয়, বিতরণ ও সরবরাহ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. উসমান গণি বলেন, 'তাদের কুলাউড়া উপকেন্দ্রটি পুরনো হয়ে গেছে। সেটির সংস্কারকাজ চলছে। কাজ শেষ হলে বিদ্যুৎ–বিভ্রাটের সমস্যা থাকবে না। আর লোকবলের অভাবে বিদ্যুৎ বিলের সমস্যা হচ্ছে।'
গ্রাহক হয়রানির বিষয়ে তিনি বলেন, 'গ্রাহক হয়রানির যে অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments