আ. লীগ লুটপাটের পথ বন্ধ করে দেশে এনার্জি সিকিউরিটি নিশ্চিত করেছে: কাদের

ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ লুটপাটের পথ বন্ধ করে দেশে এনার্জি সিকিউরিটি নিশ্চিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে বিএনপি যে অব্যাহত অপপ্রচার আর মিথ্যাচার করছে, তা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার অপপ্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়।

আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা সহজেই তাদের অতীত ভুলে যেতে চাইলেও জনগণ ঠিকই তা মনে রেখেছে। তাদের শাসন আমলে দেশে দিনে ১৩-১৪ ঘন্টা লোডশেডিং চলতো। তাদের সময়ে দেশ ছিল অন্ধকারে নিমজ্জিত। ক্ষমতায় আসার জন্য তারা দেশের মূল্যবান খনিজ সম্পদ বিদেশি প্রভুদের হাতে তুলে দিয়েছিল। বিদ্যুৎ সরবরাহের নামে শুধুমাত্র খাম্বা স্থাপন করে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। বিকল্প ক্ষমতা কেন্দ্র হাওয়া ভবন আর খোয়াব ভবন আলোকিত রাখতে গিয়ে সারা দেশকে অন্ধকারে রেখেছিল বিএনপি।

তিনি বলেন, সেই অন্ধকারময় সময় পেছনে ফেলে শেখ হাসিনা দেশবাসীকে আলোকিত বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক সব ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্যের স্মারক রেখেছেন। যা বিশ্ব সভায় প্রশংসিত হয়েছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে শেখ হাসিনা সরকার বৈপ্লবিক সাফল্য দেখিয়েছে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের মধ্য দিয়ে যখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হয় তখন দেশে মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ২২০ কিলোওয়াট, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৫৬০ কিলোওয়াটে। ২০০৯ সালের শুরুতে দেশে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতাভুক্ত ছিল মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪৭ শতাংশ। বঙ্গবন্ধ কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে, বলেন কাদের।

পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০০৯ সালের শুরুতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ৩ হাজার ২৬৭ মেগাওয়াট। বর্তমানে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষমতা ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। শুধু তাই নয়, ২০০৯ সালের শুরুতে দেশে বিদ্যুৎ গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৮ লাখ। ২০২২ সালের এপ্রিলে এসে গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ২৭ লাখে। সরকারের এ সাফল্যে বিএনপি ঈর্ষান্বিত হয়ে বরাবরের মতো নির্লজ্জ মিথ্যাচার ও অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।

কাদের বলেন, বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি নিয়ে যারা কথা বলেন প্রকৃতপক্ষে তারাই দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষক। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের সুষ্ঠু নীতি ও সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা না থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াটে উন্নীত করা সম্ভব হতো না। শিল্পায়নের বিকাশ ঘটতো না। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধি ঘটতো না। বরং শেখ হাসিনা সরকার বিএনপির বেসামাল দুর্নীতি ও লুটপাটের পথ বন্ধ করে দেশের জন্য এনার্জি সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছেন। দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন বিদ্যুতের আলো।

করোনা মহামারি পরবর্তী অর্থনীতির পুনরুদ্ধারকালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থমকে দিয়েছে সারা বিশ্বকে। বিশ্ব বাজারে জ্বালানির মূল্য অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক দেশ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ করেছে। ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার আশঙ্কা কাটাতে আগাম ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশকেও কিছু সতর্কতামূলক উদ্যোগ নিতে হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহে রেশনিং করা হচ্ছে। এটি একটি সাময়িক উদ্যোগ, বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, একটি মতলবি মহল ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির ভুয়া জিকির তুলছেন। প্রকৃতপক্ষে, ভারত থেকে দেশে আমদানিকৃত বিদ্যুতের পরিমাণ মোটের ওপর মাত্র ১০ শতাংশ। আবার কেউ কেউ বলছেন, দেশে নাকি ১৩ দিনের অকটেন এবং ১৭ দিনের পেট্রোলের রিজার্ভ আছে। অথচ প্রকৃত সত্য হলো, সামান্য পরিমাণে বুস্টার ছাড়া দেশে অকটেন ও পেট্রোল আমদানি করা হয় না। প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্রের কনডেনসেট থেকে রিফাইন করে পেট্রোল ও অকটেন তৈরি করা হয়। আবার কেউ কেউ বলছেন, দেশে জ্বালানি তেল মজুদ আছে ৩৭ দিনের। তারা এ কথা বলছেন জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, দেশে তেল মজুদ রয়েছে ৪০ দিনের। এছাড়া তেলবাহী জাহাজ বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় আছে।

Comments

The Daily Star  | English

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

1h ago