এবার নিজ দলের নেতাদের পেটালেন বদি
মাদক ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে আলোচিত কক্সবাজার-৪ আসনের (উখিয়া-টেকনাফ) সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের ২ নেতাকে মারধর করে আবার আলোচনায় এসেছেন।
এই কাজে বদির সঙ্গে যুক্ত হন তার আপন ছোটভাই আবদুল শুক্কুর।
গতকাল শুক্রবার টেকনাফ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সংঘটিত এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
টেকনাফ উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, গতকাল উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা চলার সময় এই ঘটনা ঘটে। এ সময় সেখানে বদির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের কক্সবাজার জেলা কমিটির সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
ওই সভায় উপস্থিত দলের একাধিক নেতা-কর্মীর ভাষ্য, সভা চলাকালে টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ ইউসুফ মনু দলের ভেতরের নানা অনিয়ম নিয়ে কথা বলতে শুরু করলে বদি মঞ্চ থেকে নেমে এসে তাকে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন। তখন মিলনায়নজুড়ে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়।
তারা বলেন, বদি মনুকে পেটাতে শুরু করলে তাকে রক্ষা করতে আসেন টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদব মো. ইউসুফ ভুট্টো। এ সময় বদির ছোটভাই আবদুল শুক্কুর কয়েকজন অনুসারী নিয়ে ভুট্টোর ওপর চড়াও হন। পরে জেলা কমিটির নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাবেদ ইকবাল চৌধুরীর ভাষ্য, বদির ভাই আবদুল শুক্কুর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করা একজন ইয়াবা কারবারি। তিনি দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। বর্তমানে তিনি টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পদে আছেন। তিনি এলাকায় 'সিআইপি শুক্কুর' নামে পরিচিত।
গতকালের মারধরের ঘটনার বিষয়ে জাবেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, 'বর্ধিত সভায় কি ঘটেছে, তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে সবাই দেখেছেন। এখানে নতুন করে বলার কিছু নেই। সভায় জেলার সাংগঠনিক টিমের দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারাই ঘটনার বিষয়ে সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন।'
এ ব্যাপারে মারধরের শিকার মোহাম্মদ ইউসুফ মনু বলেন, 'জেলা কমিটির নেতাদের অনুমতি নিয়ে বক্তৃতা শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই আবদুর রহমান বদি আমাকে মারতে শুরু করেন। আমি ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক হয়ে যাই। পরে আমার ওপর তার ভাই আবদুল শুক্কুর ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা হামলে পড়েন। আমি এর কোনো প্রতিকার চাই না।'
অবশ্য দলের কক্সবাজার জেলা কমিটির সহসভাপতি শাহ আলম চৌধুরীর বক্তব্য, 'আওয়ামী লীগ লাখো-কোটি কর্মীর বিশাল সংগঠন। এর একটি ইউনিটের সভায় সামান্য যে বিশৃঙ্খলা হয়েছে, তা হতেই পারে। আমরা সাংগঠনিকভাবে এটি ঠিক করে ফেলবো। কোনো সমস্যা হবেনা।'
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য আবদুর রহমান বদির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এদিকে মারধরের ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত আবদুল শুক্কুরের দাবি, সভায় মারধরের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তিনি বলেন, 'আমি পৌর শাখার একজন নেতা হিসাবে সভায় উপস্থিত ছিলাম। সেখানে কিছুটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে আমি কয়েকজন কর্মী নিয়ে পরিবেশ শান্ত করার চেষ্টা করেছি। কাউকে মারধর করার প্রশ্নই আসে না।'
Comments