রাজধানীর মার্কেট-শপিং মলে ভিড় বেড়েছে, বিক্রি বাড়েনি

ফুটপাতের বাজারে ক্রেতাদের দীর্ঘ সময় ধরে দরদাম করতে দেখা গেছে। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে গতকাল থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত কঠোর লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। করোনাকালে ব্যবসায়ীদের জীবিকার কথা ভেবে শর্ত সাপেক্ষে মার্কেট-শপিং মল খুলে দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি শপিংমল ঘুরে রাত নয়টা পর্যন্ত যথেষ্ট ভিড় দেখা গেছে। প্রায় সবার মুখে মাস্ক থাকলেও সামাজিক দূরত্ব না মেনে কেনাকাটা করছিলেন সবাই।

দুপুরের পর থেকে ঢাকার নিউমার্কেট এলাকা, মিরপুর ১ নম্বরে মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, কোঅপারেটিভ মার্কেট, মিরপুর ১০ নম্বরে শাহ আলী শপিং সেন্টার ঘুরে দেখা গেছে, দুপুরের পর থেকেই ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। বিকেল হতেই এসব এলাকার ফুটপাতে ঠেলাঠেলি করে কেনাকাটা করতে দেখা যায়। ফুটপাতে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা হাতে, পলিথিন মাথায় দিয়ে চলছিল ঈদের কেনাকাটা।

ছবিটি রাত সাড়ে নয়টায় মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট থেকে তোলা। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়লেও বিক্রি বাড়েনি। ফুটপাতের বাজারে ক্রেতাদের দীর্ঘ সময় ধরে দরদাম করতে দেখা গেছে।

মিরপুর ১০ নম্বরের ফুটপাতে প্যান্ট বিক্রি করেন মনির হোসেন। দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, ‘লকডাউনের কারণে এই ঈদে ব্যবসা করতে পারব এটা বুঝতে পারিনি। এতো মানুষ মার্কেট করতে আসবে এটা আশা করিনি। কিন্তু ক্রেতাদের যে আনাগোনা দেখা যাচ্ছে সে তুলনায় বিক্রি কম হয়েছে।’

ছবিটি রাত সাড়ে নয়টায় মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট এলাকা থেকে তোলা। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

লকডাউনের কারণে দোকানে প্রয়োজনীয় মালামাল তুলতে পারেননি বলে জানিয়েছেন অনেক বিক্রেতা। ঈদের আগে শপিং মল খুলবে কিনা এই ব্যাপারে আগে থেকে নিশ্চিত না হওয়ায় অনেকে বিক্রেতা প্রস্তুতি নিতে পারেননি।

রাজধানীর কচুক্ষেতে রজনীগন্ধা সুপার মার্কেটের প্রাইম সুজের বিক্রেতা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যতটা আশা করেছিলাম তার চেয়ে অনেক বেশি ক্রেতা এসেছে। কিন্তু, টানা লোকসানের কারণে এবার বেশি মালামাল আনার ভরসা পায়নি। ঈদের আগে দোকান খুলতে পারব কিনা সেটাও অনিশ্চিত ছিল। সরবরাহ না থাকায় বিক্রি কম হচ্ছে। অনেক ক্রেতা আসছেন, জুতা পছন্দ করছেন কিন্তু সাইজ না থাকায় বিক্রি করতে পারছি না।’

ছবিটি রাত সাড়ে নয়টায় মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট থেকে তোলা। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘অনেক ক্রেতা আসছেন। কিন্তু, বেশিরভাগ দোকানদার খুব বেশি মালামাল তোলেনি। বিশেষ করে শাড়ি, থ্রিপিসসহ অন্যান্য পোশাক বিক্রেতারা নতুন ডিজাইনের পোশাক আনতে পারেনি। সাইজ না মেলায় অনেক ক্রেতা ফিরে যাচ্ছেন।’

ক্রেতাদের মধ্যে অনেকে জানান,  ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা নয়, প্রয়োজনের তাগিদেই পোশাক ও অন্যান্য জিনিস কিনতে এসেছেন তারা।

ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়লেও বিক্রি বাড়েনি। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

ফুটপাতে জিনসের প্যান্ট নিয়ে দরদাম করছিলেন মিরপুরের বাসিন্দা সালাউদ্দিন। মিরপুরে তিনি ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ করেন। দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার তিনটা শার্ট, তিনটা প্যান্ট। একটা শার্ট কাজ করতে গিয়ে ছিঁড়ে গেছে। তাই ঈদের আগে শার্ট, লুঙ্গি কিনতে এসেছি। বাজেট কম তাই ফুটপাতেই কেনাকাটা করতে হচ্ছে।’

রজনীগন্ধা সুপার মার্কেটে দুই সন্তান নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা এক নারী বলেন, ‘কোরবানি দিতে পারছি না। সন্তানদের খুশি রাখতে পোশাক কিনে দিচ্ছি।’

Comments

The Daily Star  | English

You have crushed fascism, now strengthen democracy and press freedom

The Daily Star Editor Mahfuz Anam's appeal to the ‘new generation leaders’

11h ago