‘মোটরসাইকেল বন্ধের সুযোগে গণপরিবহনে ভাড়া ডাকাতি চলছে’

ছবি: সংগৃহীত

ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল বন্ধের সুযোগ কাজে লাগিয়ে গণপরিবহন সংকটকে পুঁজি করে সড়ক, রেল, নৌ-পথে ভাড়া ডাকাতি ও ইচ্ছেমতো যাত্রী হয়রানি চলছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

আজ শুক্রবার দেওয়া বিবৃতিতে সংগঠনটি চলমান পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে ভাড়া নৈরাজ্য ও পথে যাত্রী হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গতকাল সন্ধ্যা থেকে রাজধানীর সিটি সার্ভিসের বাসের ভাড়া কোনো কোনো পথে ৫ থেকে ৬ গুণ পর্যন্ত বাড়তি আদায় করা হচ্ছে। উত্তরা থেকে সায়দাবাদে ৫০ টাকার বাস ভাড়া ৩০০ টাকা নিতে দেখা গেছে। শ্যামলী থেকে গুলিস্তানে ৩০ টাকার বাস ভাড়া ২০০ টাকা আদায় করতে দেখা গেছে। ধানমন্ডি থেকে সদরঘাট ২৫ টাকার বাস ভাড়া ২০০ টাকা আদায় করতে দেখা গেছে। টার্মিনাল কেন্দ্রিক নয়, এমন পথে যাত্রীপ্রতি ওঠা-নামা ভাড়া কোনো কোনো বাসে ৫০ টাকা, আবার কোনো কোনো বাসে ১০০ টাকা আদায়ের নৈরাজ্য এখনো চলছে।

নগরীর প্রতিটি লেগুনা সার্ভিসের ভাড়া কোথাও দ্বিগুণ, আবার কোথাও ৩ গুণ আদায় করা হচ্ছে। কেরানীগঞ্জের কদমতলী ও সদরঘাট থেকে গুলিস্তান পথে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরত্বে লেগুনা ভাড়া ১৫ টাকা আদায় করা হলেও এখন কখনো ৩০ টাকা, কখনো ৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। একই চিত্র নগরীর সব লেগুনা রুটে দেখা যাচ্ছে।

রিকশা ভাড়া ৩ থেকে ৪ গুণ বাড়তি আদায় করা হচ্ছে। সিএনজিচালিত অটোরিকশা গুলশান, বনানী, বারিধারা থেকে স্বাভাবিক সময়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল বা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাতায়াত করা গেলেও গতকাল থেকে এই পথে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে।

সংগঠনটি আরও জানায়, দূরপাল্লার যাত্রাপথে ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-রাজশাহী, নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর উত্তরাঞ্চলের প্রতিটি রুটে বিদ্যমান ভাড়া থেকে গন্তব্য-ভেদে ৩০০ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। অনুরূপভাবে ঢাকা-কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি প্রতিটি রুটেই ভাড়া নৈরাজ্য চলছে। দেশের এক জেলা থেকে অপর জেলায় চলাচলকারী গণপরিবহনগুলোতেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের এই চিত্র অব্যাহত আছে।

পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াতকারী প্রতিটি রুটে বিভিন্ন নন-ব্র্যান্ডের বাসে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চলছে। এ ছাড়াও খ্যাতনামা ব্র্যান্ডের বাসগুলো বিদ্যমান ভাড়ায় যাত্রী বহন করলেও কোনো কোনো পথে যাত্রী সাধারণকে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের ক্ষেত্রে বেশির দূরত্বের টিকিট কিনতে বাধ্য করছে। এতে করে নিম্ন আয়ের মানুষ পণ্যবাহী ট্রাক-পিকআপে স্বল্প ভাড়ায় যাতায়াতে বাধ্য হচ্ছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যাত্রী সংকটের কারণে ঢাকা-বরিশালের বিভিন্ন নৌপথের ভাড়া আকর্ষণীয় হারে কমানো হলেও এখন এই পথেও ভাড়া নৈরাজ্য চলছে। রেলে টিকিট কালোবাজারি, অনলাইনে টিকিট পেতে বিড়ম্বনাসহ নানা কারণে যাত্রী সাধারণের হাতে টিকিট পৌঁছাতে নির্ধারিত মূল্যের ৩ গুণ পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে আকাশ পথেও ভাড়া নৈরাজ্যের কারণে যাত্রী সাধারণ এখন দিশেহারা।

চলমান পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

Comments

The Daily Star  | English

Pathways to the downfall of a regime

The erosion in the credibility of the Sheikh Hasina regime did not begin in July 2024.

9h ago