বিলাসবহুল নৌযানগুলোতেও নেই পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা

স্টার ফাইল ছবি

প্রতিদিন অসংখ্য বিলাসবহুল লঞ্চে করে যাতায়াত করেন দেশের শত শত যাত্রী। তবে বেশিরভাগ লঞ্চেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই বলে জানিয়েছেন এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

কিছু নৌযানে এক তলা থেকে অন্য তলায় যাওয়ার জন্য রয়েছে লিফট, সুন্দর সুন্দর আসবাবপত্রে সজ্জিত কক্ষ, পানির গভীরতা মাপার জন্য বিশেষায়িত যন্ত্র, দিকনির্দেশক রাডার, ওয়াইফাই সুবিধা, রেডিও যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অন্যান্য অত্যাধুনিক গ্যাজেট। তবে অগ্নিনিরাপত্তা সরঞ্জাম কেনার পেছনে কোনো বিনিয়োগ করেন না মালিকরা।

সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাস্টার মুজিবুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই নৌযানগুলোতে একাধিক বড় ইঞ্জিনসহ বেশকিছু উপকরণ রয়েছে যেগুলো বিদ্যুতে চলে। কিন্তু আমাদের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। সব সময়ই অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে।'

তিনি বলেন, 'লঞ্চের প্রত্যেক তলায় বড় আকারের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ও পানি সরবরাহ করার পাইপ থাকা উচিৎ। এ ছাড়া কর্মচারীদের প্রতি মাসে অগ্নিনির্বাপণের প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিৎ।'

দমকল বাহিনীর বরিশাল বিভাগের উপপরিচালক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, ১০ অথবা তার চেয়ে বেশি তলার যেকোনো দালান নির্মাণের জন্য দমকল বাহিনীর কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হয়।

কিন্তু এসব নৌযান শত শত মানুষ বহন করলেও তাদের মালিকদের দমকল বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করার বাধ্যবাধকতা নেই।

লঞ্চ মালিক ও ক্রু সদস্যরা অগ্নিনিরাপত্তা প্রশিক্ষণের ব্যাপারে আগ্রহী নন বলে জানান কামাল। এ ছাড়া গত ৪ বছরে ক্রু সদস্যরা কোন ধরনের অগ্নি মহড়ায় অংশ নেননি, যোগ করেন তিনি।

বরিশাল নদী বন্দরের কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা লঞ্চের সংকেত ব্যবস্থা ও যাত্রী তালিকা যাচাই করি। কিন্তু অগ্নিনিরাপত্তা পরিস্থিতি যাচাই করা আমাদের দায়িত্ব না।'

সুন্দরবন-১১ লঞ্চের মাস্টার মোস্তফা মিয়া শুক্রবারের ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনার পর এমভি অভিযান-১০ সরেজমিনে পরিদর্শনকারী তদন্ত কমিটির সঙ্গে ছিলেন। তিনি বলেন, 'আমি এমভি অভিযান-১০-এর ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখতে পেয়েছি, যার কারণে আগুন লেগে থাকতে পারে। বেশিরভাগ লঞ্চে ক্রুদের মধ্যে কোনো মেকানিক থাকে না।'

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের নৌপরিদর্শক নুরুল করিম স্বীকার করেন, অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়টি সব সময় উপেক্ষা করা হয়।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, বরিশালের বিভাগীয় সমন্বয়কারী রফিকুল আলম জানান, সরকার ও লঞ্চ মালিকদের অবশ্যই অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিতে হবে।

বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, 'নৌপরিবহন অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের কাছে অগ্নিনিরাপত্তা সরঞ্জাম রয়েছে। আমরা সরকারি আইনের বাইরে যেয়ে কিছু করতে পারি না।'

এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা যাত্রীদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

সুন্দরবন নেভিগেশন গ্রুপ বরিশালের একজন কর্মকর্তা জানান, যাত্রীর সংখ্যা অনেক কমে গেছে।

 

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

 

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Discrimination Students Movement

Students to launch political party by next February

Anti-Discrimination Student Movement and Jatiya Nagorik Committee will jointly lead the process

9h ago