বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার-২০২০ পাচ্ছেন ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। স্টার ফাইল ছবি

অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের জন্য 'বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার-২০২০' পাচ্ছেন অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

আজ বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দেশের অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে 'বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার-২০২০' দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আরও বলা হয়েছে, আগামী ২৩ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদের হাতে সম্মাননা তুলে দেবেন।

এর আগে ২০০০ সালে অধ্যাপক রেহমান সোবহান, ২০০৯ সালে ড. নুরুল ইসলাম, ২০১১ সালে প্রফেসর ড. মুশররফ হোসেন, ২০১৩ সালে অধ্যাপক ড. মোজাফ্ফর আহমদ (মরণোত্তর) ও ড. স্বদেশ রঞ্জন বোস (মরণোত্তর) এবং ২০১৭ সালে ড. আজিজুর রহমান খান ও ড. মাহবুব হোসেনকে (মরণোত্তর) 'বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার' দেওয়া হয়।

পুরস্কারের সম্মাননা হিসেবে তাকে একটি স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেস্ট এবং ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি উল্লিখিত পুরস্কারের জন্য তাকে মনোনীত করেছে।

অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ১৯৪৮ সালের ১ জুলাই নোয়াখালী জেলায় জন্ম নেন। তার বাবা আলী আহমেদ চৌধুরী ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা এবং মা সালেহা খাতুন গৃহিনী।

তিনি ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে অর্থনীতিতে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৯ সালে ইসলামাবাদের কায়েদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে রেকর্ড নম্বর পেয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এমএসসি পাস করেন। এরপর ১৯৭৭ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। এর আগে ১৯৬৩ ও ১৯৬৫ সালে ড. মাহমুদ রেকর্ড নম্বর পেয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেন।

ড. মাহমুদ ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনা শুরু করেন; ১৯৮৪ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান এবং ২০১১ সালে অবসর নেন। তিনি বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টারের সিনিয়র কান্ট্রি উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের 'রূপকল্প ২০৪১' সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করছেন।

তিনি ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে পলিসি প্রণয়নে বিভিন্ন সময়ে তিনি ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৯৩-২০০৯ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৬ বছর বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালক পর্ষদের সম্মানিত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) একজন সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং পরবর্তীতে চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন। বাংলাদেশের চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১৫-২০৩০) সম্পাদনে তিনি অর্থনীতিবিদ প্যানেলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।

অধ্যাপনা পেশার পাশাপাশি ড. মাহমুদ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০০৯ -২০১৫ মেয়াদে ইউএন কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির সদস্য এবং ২০০৯-২০১৮ মেয়াদে সাউথ এশিয়া নেটওয়ার্ক অব ইকোনমিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসএএনইআই) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডিএস, ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং বিশ্বব্যাংকসহ স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও গবেষক হিসেবে কাজ করেছেন।

পেশাগত জীবনে অধ্যাপক ড. মাহমুদ মৌলিক অর্থনীতি বিষয়ে অর্ধশতাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা ও গবেষণাপত্র রচনা করেছেন।  

Comments

The Daily Star  | English

25 children among 27 killed in Milestone jet crash

Twenty bodies have so far been handed over to their respective families

3h ago