নড়াইলে হিন্দু বাড়ি-মন্দিরে হামলার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার তদন্ত চায় মানবাধিকার কমিশন

নড়াইলের লোহাগড়ায় সম্প্রতি হিন্দুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট ঠেকাতে পুলিশের ভূমিকা কী ছিল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তা তদন্ত করতে বলেছে মানবাধিকার কমিশন।

নড়াইলের লোহাগড়ায় সম্প্রতি হিন্দুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট ঠেকাতে পুলিশের ভূমিকা কী ছিল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তা তদন্ত করতে বলেছে মানবাধিকার কমিশন।

এছাড়াও এ হামলা ও লুটপাটের পরিস্থিতি এড়ানোর ক্ষেত্রে কারো গাফিলতি আছে কি না, তা তদন্ত করে মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে আগামী ১৭ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে কমিশন।

আজ রোববার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগমের সই করা এক চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত 'মহানবীকে কটূক্তির অভিযোগে লোহাগড়ায় হিন্দুদের দোকানপাট ভাঙচুর, মন্দিরে অগ্নিসংযোগ সংক্রান্ত সংবাদের প্রতি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, নড়াইলের লোহাগড়ায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে উত্তেজিত জনতা স্থানীয় একটি বাজারের ৬টি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট এবং একটি মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে মর্মে প্রকাশিত সংবাদ মারফত জানা গেছে। এছাড়া ৪টি বাড়িঘর ও এর আসবাবপত্র ভাঙচুর করে নগদ টাকাসহ স্বর্ণের গহনা লুট করার অভিযোগ উঠেছে।

কমিশন জানায়, স্থানীয়দের অভিযোগ দিঘলিয়া গ্রামের সাহাপাড়ার অশোক সাহার ছেলে আকাশ সাহা ফেসবুকে মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি করে। বিষয়টি জানাজানি হলে শুক্রবার সন্ধ্যায় এলাকাবাসী আকাশকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করে।

'পরে উত্তেজিত জনতা দিঘলিয়া বাজারের নিত্য দুলাল সাহা, অনুপ সাহা, অশোক সাহা, সনজিদ সাহার মুদি দোকান এবং গোবিন্দ কুণ্ডু ও গৌতম কুণ্ডুর মিষ্টির দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ ছাড়া সাহাপাড়ার গৌরসাহা, চায়না রানী সাহা, বিপ্লব সাহার বাড়িঘর ও আসবাবপত্র ভাঙচুরসহ এবং স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে যায়। তারা নাড়ু গোপালের বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাট করে। উত্তেজিত জনতা রাত ৯টার দিকে আখড়াবাড়ি সার্বজনীন পূজামণ্ডপে আগুন ধরিয়ে দেয়,' চিঠিতে বলা হয়।

'বাংলাদেশের মতো একটি অসাম্প্রদায়িক দেশে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়' উল্লেখ করে মানবাধিকার কমিশন জানায়, মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে কোনো ধর্মকে অবমাননা করার অধিকার যেমন কারো নেই, তেমনি আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করার অধিকারও কাউকে দেওয়া হয়নি।

চিঠিতে বলা হয়, 'কমিশন মনে করে, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে এ ধরণের ঘৃণ্য অপরাধ বারবার সংঘটিত হচ্ছে। কেউ ধর্মকে অবমাননা করলে তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া উচিৎ।'

এ অবস্থায় ওই ঘটনায় মহানবী (সা.) কে কটূক্তির দায়ে অভিযুক্তকে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার করে অনাকাঙ্ক্ষিত হামলা ও লুটপাটের পরিস্থিতি এড়ানোর ক্ষেত্রে কারো গাফিলতি ছিল কি না, এবং হিন্দু মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা-অগ্নিসংযোগ-লুটপাট ঠেকাতে পুলিশের যথাযথ ভূমিকা ছিল কী না, তা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে চিঠিতে।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-president Badruddoza Chowdhury passes away

He breathed his last at 3:15am today while undergoing treatment at the Uttara Women’s Medical College

1h ago