ডিপোতে রাসায়নিকের মজুত সম্পর্কে জানত না বিস্ফোরক পরিদপ্তর
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে যে 'হাইড্রোজেন পারক্সাইড' নামের বিপুল পরিমাণ দাহ্য রাসায়নিকের মজুত রয়েছে, তা জানত না সরকারের বিস্ফোরক পরিদপ্তর।
পরিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই রাসায়নিক মজুতের জন্য কোনো লাইসেন্স নেয়নি ডিপো কর্তৃপক্ষ। এমনকি এ বিষয়ে পরিদপ্তরকে কোনো কিছু অবহিতও করা হয়নি।
হাইড্রোজেন পারক্সাইড একটি রাসায়নিক যৌগ। এটি যদি উত্তপ্ত করা হয়, তাহলে তাপীয় বিয়োজনে হাইড্রোজেন পারক্সাইড বিস্ফোরক হিসেবে আচরণ করে।
হাইড্রোজেন পারক্সাইডসহ বিপজ্জনক পণ্যগুলি কীভাবে নিরাপদে সংরক্ষণ এবং পরিবহন করা যায় সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট গাইডলাইন রয়েছে।
ডিপোটিতে গতকাল শনিবার রাতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের পর ডিপোতে আগুন ধরে যায়। এই আগুন আজ রোববার সকালেও জ্বলছে। কিছুক্ষণ পরপর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। এ ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, ডিপোতে মজুত রাসায়নিকের বিষয়ে তাদেরও কিছু জানানো হয়নি। জানলে আগুন নেভানোর জন্য সে হিসেবে তারা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতেন।
চট্টগ্রাম বিস্ফোরক পরিদপ্তরের পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ধরনের জায়গায় এত বেশি দাহ্য বা বিপজ্জনক পণ্য মজুদ করার কোনো সুযোগ নেই। এই ধরনের পণ্য সংরক্ষণ করার জন্য, বিশেষ অবকাঠামোর দরকার হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের জানানো হয়নি যে সেখানে রাসায়নিক সংরক্ষণ করা হয়। তারা আমাদের কাছ থেকে কোনো লাইসেন্স বা অনুমোদন নেয়নি। লোকালয় বেষ্টিত এই জাতীয় জায়গায় বিপজ্জনক পণ্য মজুত করার কোনো আইনি সুযোগ নেই।'
তার ভাষ্য, এ ধরনের রাসায়নিক সংরক্ষণের জন্য বিশেষ অবকাঠামোর দরকার হয়। যেখানে প্রয়োজন মতো তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আর অবশ্যই এটা নিশ্চিত করার বিষয় থাকে যে, এর আশপাশে কোনো লোকালয় নেই।
অবশ্য বিএম কনটেইনার ডিপোর মালিক মুজিবুর রহমান দাবি করেন, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের কাছ থেকে তিনি প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিয়েছেন।
তিনি বলছেন অতিরিক্ত গরমের কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
Comments