‘আর কত অপেক্ষা করব, অন্তত লাশটা দেন’

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-বরগুনাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ অভিযান-১০-এ অগ্নিকাণ্ডের এক মাস পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধান পাননি অনেক পরিবার। স্বজনদের দাবি অন্তত মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে তাদের জানানো হোক।

মেয়ে, মেয়ের জামাই ও নাতির খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন ফরিদা বেগম। বর্তমানে তিনি ঢাকায় রয়েছেন। ফরিদা বেগম দ্য ডেইলি স্টারের বরিশাল প্রতিনিধিকে মোবাইলে বলেন, 'গত ২৩ ডিসেম্বর ঢাকার ভাটারায় বসবাসরত তার মেয়ে পাখি বেগম, নাতি নাসিরুল্লাহ ও মেয়ে জামাই হাকিম শরীফ ওই লঞ্চে বরগুনা যাওয়ার জন্য রওনা দেয়। রাতে কয়েকবার তাদের সঙ্গে কথা হয়েছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার পরে তাদের আর কোনো খোঁজ মেলেনি।'

তিনি আরও বলেন, 'লাশের জন্য ঝালকাঠী, বরগুনা, বরিশাল মেডিকেল সব জায়গায় ঘুরলেও লাশ পাইনি। আমরা আর কত অপেক্ষা করব, অন্তত লাশটা দেন' আকুতি ফরিদা বেগমের।

তবে সিআইডি কতৃপক্ষ বলছে, আগামী মাসের যেকোনো দিন ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট পাওয়া যেতে পারে। 

ছবি: সংগৃহীত

 
এদিকে ঝালকাঠী জেলা প্রশাসন সবশেষ মৃত্যুর সংখ্যা ৪৮ বললেও ও বরগুনা জেলাপ্রশাসন বলছে ৪৬ জন। 

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের ওবায়দুল হক জানান, তার ফুফা বর্তমানে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার পরে ফুফী জাহানারা বেগমকে আর পাওয়া যাচ্ছে না।

সিআইডির ডিএনএ ল্যাবের পরীক্ষক রবিউল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঢাকা থেকে সিআইডির ৬ জনের একটি দল গত ২৭ ডিসেম্বর বরগুনা ও ঝালকাঠী থেকে আলামত ও নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছে।'

তিনি বলেন, 'মোট ৪২টি আলামত ও ৩২ জন নিখোঁজের বিপরীতে ৫২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আগামী মাসের যেকোনো দিন ফলাফল জানানো হবে।'

ঝালকাঠীর জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী জানান, তিনি তদন্ত রিপোর্ট পেয়েছেন, সেখানে ইঞ্জিন ত্রুটির কথা রয়েছে এবং চালক ও স্টাফদের অবহেলা পেয়েছেন। তবে তিনি সবশেষ মৃত্যু ৪৮ ও নিখোঁজ ৩১ বলে উল্লেখ করেছেন।

অন্যদিকে বরগুনার ডিসি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, 'আমরা ঝালকাঠীতে ২ জন ও বরগুনায় ২৩ জন মিলে মোট ২৫ জনকে দাফন করেছি। এখনো ৩০ জনের উপরে নিখোঁজ রয়েছে।'

লঞ্চ দুর্ঘটনায় ঢাকায় চিকিৎসারত মো. সেলিম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, দুর্ঘটনায় তাদের স্বজন নিখোঁজ হয়েছেন। আয় উপার্জনহীন হয়ে তারা পথে বসলেও কোনো জায়গা থেকে আর্থিক সাহায্য মেলেনি। তিনি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে অবিলম্বে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আহবান জানান।

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই হাসপাতালে ৮৪ জন অগ্নি দ্বগ্ধ রোগী ভর্তি হলেও গুরুতর অর্ধেক রোগী ঢাকায় চলে যায়। বর্তমানে একজন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলের। তিনিও অনেকটা সুস্থ হওয়ার পর বাড়ি চলে গেছেন।'

Comments

The Daily Star  | English

US lowers Bangladesh tariff to 35% from 37%

Failure to secure a more favourable bilateral agreement by Aug 1 deadline would be a significant blow to the country's export-oriented economy

7h ago