ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় ফিরছেন মানুষ

সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাকে উঠেছেন ঢাকামুখী কর্মজীবী মানুষ। ছবি: স্টার

ঈদের ছুটি শেষে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ।

আজ শুক্রবার সকালে বঙ্গবন্ধু সেতুর উভয় সংযোগ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বাড়লেও যানজট দেখা যায়নি।

তবে কিছু কিছু পয়েন্টে ধীরগতিতে গাড়ি চলাচল করছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ।

আজ সকাল সোয়া্‌ ১১টায় বঙ্গবন্ধু সেতুর ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম সূত্র ডেইলি স্টারকে জানায়, সকাল থেকেই সেতুর উভয় প্রান্তে ঢাকামুখী যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। পূর্ব প্রান্তের সংযোগ সড়কের আনালিয়াবাড়ি থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার সড়কে যানজট রয়েছে। তবে, সেতুর ওপর যানচলাচল স্বাভাবিক।

ছবি: স্টার

এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতাউর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যানবাহনের চাপ থাকলেও কোথাও যানজট নেই। আগামীকাল শনিবার এই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ আরও বাড়তে পারে।'

টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপ্রান্ত ও এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড এবং পশ্চিমপ্রান্তে সিরাজগঞ্জ জেলার রাজগঞ্জ উপজেলার হাটিকুমরুল গোলচত্বর, কড্ডার মোড় ও সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

অনেককে দীর্ঘপথ হেঁটে এই মহাসড়কে আসতে দেখা গেছে। পণ্যবাহী ট্রাক, মাইক্রোবাস, ভাড়ায়চালিত মোটর সাইকেল, পিকআপ ভ্যান, ছোট যানবাহনসহ যে যেভাবে পারছেন সেভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছেন।

স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দেড় বা ২ গুণ অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন।

এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষমান অনেক যাত্রীর মধ্যে একজন ঢাকায় বেসরকারি চাকরিজীবী জুয়েল রানা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রায় ২ ঘণ্টা হয়ে গেলেও ঢাকা যাওয়ার বাস পাইনি। গাড়ি এখানে থামছেই না। ২/৪টা যাও থেমেছে ব্যাগ-মালপত্র নিয়ে ওঠতে পারিনি।'

'এখানে কয়েকজন একটি মাইক্রোবাসে উঠছিলেন। ঢাকা পৌঁছে দিতে জনপ্রতি ৮০০ টাকা ভাড়া চাওয়ায় উঠিনি। স্বাভাবিক সময়ে এখান থেকে ঢাকার বাস ভাড়া ২০০ টাকার বেশি নয়,' যোগ করেন তিনি।

সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড়ে বাস না পেয়ে অনেকের সঙ্গে সাভার যেতে ৪০০ টাকা ভাড়ার শর্তে একটি ছোট ট্রাকে ওঠেছেন পোশাক শ্রমিক রোজিনা আক্তার।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'টাকা নিয়া ভাবতাছি না। কারখানা খোলা। আমার যাইতেই হইবো। রইদের কষ্টও কষ্ট মনে করতাছি না। ছোট ট্রাকে ধরার জায়গা নাই। ভয় পাইতেছি পইড়া যাই কি না।'

শুধু জুয়েল বা রোজিনা নয়, একই অবস্থা প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা হাজারো মানুষের।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উত্তরাঞ্চল থেকে মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ঢাকা পৌঁছতে পারেন সেজন্য বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।'

ঈদের আগের টানা ৩ দিন এই মহাসড়কে দুঃসহ যানজটে সীমাহীন ভোগান্তি সয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর লাখো মানুষ।

Comments

The Daily Star  | English

No scope to avoid fundamental reforms: Yunus

Conveys optimism commission will be able to formulate July charter within expected timeframe

3h ago