চট্টগ্রামের সেই নালার পাশের ফুটপাতে দেয়াল নির্মাণ করল কারা?
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে নালায় পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সেহেরিন মাহবুব সাদিয়ার মৃত্যুর পর নালার পাশের ফুটপাতের ওপর দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) বলছে এই দেয়াল তারা নির্মাণ করেনি।
গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এই দেয়াল নির্মাণ করা হয় বলে জানান স্থানীয়রা।
আব্দুর রহিম নামে একজন দোকানদার বলেন, 'বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ট্রাকে করে ইট, বালি, সিমেন্ট নিয়ে এসে খুব তাড়াহুড়ো করে কিছু শ্রমিক দেয়ালটি নির্মাণ করেন।'
তবে পথচারীরা বলছেন, সমস্যার সমাধান না করে ফুটপাতে দেয়াল তুলে দিয়ে আরেকটি সমস্যা তৈরি করা হয়েছে।
আলমগীর নামে একজন বলেন, 'নালায় পড়ে একজন শিক্ষার্থী মারা গেলেন। আর সেখানে ফুটপাতের উপর দেয়াল তুলে দেওয়া হলো। যেই এটা করুক তারা সমস্যার সমাধান না করে সাধারণ নাগরিকদের জীবনের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিলেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, 'আমরা সেখানে দেয়াল নির্মাণ করিনি। তবে আমরা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রকল্প পরিচালক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমানকে নালায় পড়ে শিক্ষার্থী মারা যাওয়া এলাকায় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম।'
মেয়র বলেন, 'নাগরিকদের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে ফুটপাতের উপর এভাবে দেয়াল তুলে দেয়াতে আমরা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে একটা আপত্তিপত্র দিয়েছি। কিন্তু এখন শুনছি তারা নাকি দেয়ালটি নির্মাণ করেননি।'
চউক-এর প্রকল্প পরিচালক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, 'ফুটপাতের উপর দেয়ালটি আমরা নির্মাণ করিনি। এই ব্যাপারে সিটি করপোরেশন ভালো বলতে পারবেন। তবে যারাই দেয়ালটি নির্মাণ করুক অনেক ভালো একটি কাজ করেছেন।'
'চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সমন্বয় থাকলে চট্টগ্রামে নালা কিংবা খালে পড়ে সাধারণ নাগরিকদের এমন করুণ মৃত্যু হতো না,' বলেন প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের মাজার গেট এলাকায় চশমা কিনে বাসায় ফেরার সময় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সেহেরিন মাহবুব সাদিয়া (২০) নালায় পড়ে নিখোঁজের প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর তার মরদেহ উদ্ধার হয়।
অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ হয়ে পড়া চট্টগ্রাম নগরে গত ২৫ আগস্ট মুরাদপুর এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় চশমা খালে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হন সবজি বিক্রেতা ছালেহ আহমেদ। যার খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। মাত্র ৩ মাসের ব্যবধানে ড্রেনে পড়ে চট্টগ্রামে অন্তত ৪ জন মারা গেছেন।
Comments