গণমাধ্যম কর্মী বিল নিরীক্ষায় আরও ৬০ দিন সময় পেল সংসদীয় কমিটি

ফাইল ছবি

বহুল আলোচিত গণমাধ্যম কর্মী বিল-২০২২ (চাকরির শর্তাবলি) নিরীক্ষার জন্য আরও ৬০ দিন সময় পেয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

আজ সোমবার কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু সংসদে সময় চেয়ে আবেদন করলে সর্বসম্মতিক্রমে তা অনুমোদন করা হয়। 

চলতি বছরের ২৮ মার্চ তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বিলটি উত্থাপন করেন এবং প্রস্তাবিত আইনটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

সংসদ সূত্রে জানা গেছে, স্থায়ী কমিটি এখন পর্যন্ত বৈঠকে বসেনি।

বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও মালিক সমিতি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রস্তাবিত আইনের কয়েকটি ধারার বিষয়ে তীব্র বিরোধিতা করেছে।

সম্পাদক পরিষদ জানিয়েছে, প্রস্তাবিত বিল সংসদে পাস হলে স্বাধীন গণমাধ্যমের পথ আরও সংকুচিত হবে।

গত ১৯ এপ্রিল এক বিবৃতিতে সম্পাদক পরিষদ জানায়, 'সংবাদপত্র শিল্প কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এখনো মহামারির প্রভাব থেকে বের হতে পারেনি। দেশ-বিদেশের অনেক দৈনিক সংবাদপত্র হয় তাদের মুদ্রণ সংস্করণ কমাতে শুরু করেছে, অথবা তাদের প্রিন্ট সংস্করণ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।'

প্রস্তাবিত আইনটি পর্যবেক্ষণ করে সম্পাদক পরিষদ জানিয়েছে ৫৪টি ধারার মধ্যে ৩৭টি সাংবাদিকবান্ধব নয়।

সম্পাদক পরিষদ মনে করে, প্রস্তাবিত আইনটির মাধ্যমে গণমাধ্যম শিল্প ও গণমাধ্যম কর্মীদের সুরক্ষার নামে আরও বেশি আমলাতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত আইনটি বাস্তবায়িত হলে সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠানকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করারও আশঙ্কা রয়েছে।

সাংবাদিক, কর্মচারী ও সংবাদকর্মী, সম্প্রচার, অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়া আউটলেটের শিল্পীদের বেতন ও সুবিধাদি প্রস্তাবিত আইনের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে।

বিল অনুযায়ী সাংবাদিকরা গণমাধ্যম পেশাজীবী হিসেবে গণ্য হবেন, কর্মী হিসেবে নয়।

বিল অনুযায়ী প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকসহ সব ধরনের গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও কর্মচারীদের জন্য মজুরি (ওয়েজ) বোর্ড প্রযোজ্য হবে।

বিল অনুযায়ী, গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য ন্যূনতম কর্মঘণ্টা হবে সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা, নৈমিত্তিক ছুটি হবে ১০ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিন এবং অর্জিত ছুটি বার্ষিক ৬০ দিনের পরিবর্তে ১০০ দিন হবে।

যদি কেউ নির্ধারিত সময়ের বেশি কাজ করে তাহলে তিনি অতিরিক্ত সময়ের জন্য বেতন পাওয়ার অধিকারী হবেন।

এ ছাড়া বছরে উৎসব ছুটি হবে ১০ দিন, বিনোদনের ছুটি প্রতি ৩ বছর পর পর ১৫ দিন করে এবং মাতৃত্বকালীন ছুটি ৮ সপ্তাহের পরিবর্তে হবে ৬ মাস।

কেউ বা কোনো সংস্থা বিলের আইন লঙ্ঘন করলে তাকে ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে।

সরকার গণমাধ্যমের লাইসেন্স বা নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে। আইন লঙ্ঘনের জন্য গণমাধ্যমের মালিকদেরও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কেউ বা কোনো সংস্থা বিলের বিধান লঙ্ঘন করলে তাকে আর্থিক জরিমানা বা কারাদণ্ড দেওয়া হবে।

সংসদে নতুন আইন পাস হলে গণমাধ্যম কর্মীদের চাকরি আর শ্রম আইনে নিয়ন্ত্রিত হবে না। বর্তমানে, শ্রম আইনে সাংবাদিক এবং মিডিয়া হাউসের কর্মচারীদের 'শ্রমিক' হিসেবে গণ্য করা হয়। আইনটি পাস হলে তারা গণমাধ্যম পেশাজীবী হিসেবে গণ্য হবেন, কর্মী নয়।

প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য একটি মজুরি বোর্ড গঠন করা হবে।

সরকারি কর্মচারীদের বেতন স্কেলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মজুরি বোর্ড গণমাধ্যম কর্মীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণ করবে এবং এটি সব গণমাধ্যমের মালিকদের জন্য প্রযোজ্য হবে।

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Container service links Ctg to Karachi

Most of the cargo that arrived from Karachi contained industrial raw materials, including soda ash, dolomite, limestone, chemicals, onion, fabrics and potatoes

1h ago