অপসারণের আদেশ প্রত্যাহার করে চাকরিতে পুনর্বহালে দুদকে শরীফের আবেদন

acc_sharif.jpg
শরীফ উদ্দিন

অপসারণের আদেশ প্রত্যাহার ও চাকরিতে পুনর্বহাল করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছেন সংস্থাটির অপসারিত উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন। আজ রোববার সকালে দুদকের (চাকরি) বিধিমামলা, ২০০৮ এর ৪৮ বিধি অনুযায়ী অপসারণের আদেশ পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়ে তিনি লিখিত আবেদন করেন।

আবেদনপত্রে তিনি বলেন, আমি ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কমিশনে সততা, বিশ্বস্থতা, অধ্যবসায় ও সর্বোচ্চ ন্যায় নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। এই সময়ে আমি আমার সর্বোচ্চ দক্ষতার সঙ্গে ৭০ এর বেশি গুরুত্বপূর্ণ মামলা সুপারিশ/রুজু/সিএস জমা দিয়ে দেশের স্বার্থ সংরক্ষণের চেষ্টা করেছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মামলাগুলো হলো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে অবৈধভাবে পাসপোর্ট ও এনআইডি প্রদান (২০টি মামলা), কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা, পেট্রোবাংলা, বাংলাদেশ রেলওয়ের ৮৬৩ জন খালাসী নিয়োগের দুর্নীতির মামলা ও সম্পদের অনুসন্ধান, শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সাইফুল করিম ও মো. আমিনের বিরুদ্ধে মামলা, স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে মামলা, কেজিডিসিএল-এর শিল্প গ্রাহক আবুল খায়ের গ্রুপ, ক্রাউন স্টিল, বায়েজিদ স্টিলস লিমিটেড, ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস লিমিটেড, আর. এফ বিল্ডার্সসহ বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা রুজু ও সুপারিশ করেছি।

তিনি আরও বলেন, ময়মনসিংহ সজেকায় কর্মকালীন ভালুকা ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমে সরকারি সম্পদ জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের দায়ে মামলার পর ২ জনকে গ্রেপ্তার, ভূমি অফিসের নাজিরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় গ্রেপ্তারসহ আরও অনেক প্রশংসনীয় কাজ করেছি। এ ছাড়া. চট্টগ্রাম-২ এ কর্মরত থাকাকালে আমার কাছে প্রায় ৭০টি অভিযোগের অনুসন্ধান ও ৪২টি মামলার তদন্তভার ছিল। এর বাইরেও প্রধান কার্যালয়ের রোহিঙ্গাদের এনআইডি ও পাসপোর্ট প্রদান বিষয়ক ৬টি অভিযোগের অনুসন্ধান টিমের সদস্য, মাহিনী ট্রান্সপোর্ট লিমিটেড অভিযোগের অনুসন্ধানকারী টিমের সদস্য, ১৫৭ প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাঁকখালী নদী দখল, চট্টগ্রাম এল. এ শাখার দুর্নীতির বিপরীতে মামলা করার সুপারিশ, মানিলন্ডারিং অনুসন্ধান, মহেশখালীর ২৭ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগের অনুসন্ধান টিমের সদস্য হিসেবে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। অনুসন্ধান/মামলাগুলো অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ এবং কিছু আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাদের যোগসাজশ পাওয়া যায়।

কমিশনের কর্মকর্তা হিসেবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দুর্নীতি ও সংশ্লিষ্ট অনিয়মকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় সপরিবারে প্রাণনাশের হুমকির সম্মুখীন হয়েছি। তবু আমার ও আমার পরিবারের আর্থিক, সামাজিক ও জানমালের নিরাপত্তার দিকগুলো ন্যূনতম বিবেচনায় না নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (চাকরি) বিধিমালা, ২০০৮ এর ৫৪(২) বিধি অনুযায়ী গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর সুযোগ না দিয়ে আমাকে অপসারণ করা হয়। আমাকে চাকরি থেকে অপসারণের আদেশটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অমানবিকভাবে করা হয়েছে। এই আদেশ দেওয়ার আগে আমাকে কোনো ধরনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়নি, যা কি না সংবিধানের ১৩৫ (২) অনুচ্ছেদ এবং মৌলিক অধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন বলে উল্লেখ করেন শরীফ উদ্দিন।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করে দুদক। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, 'দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪ (২)-তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মো. শরীফ উদ্দিন (উপসহকারী পরিচালক) দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যক্রম, পটুয়াখালীকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো। তিনি বিধি মোতাবেক ৯০ দিনের বেতন এবং প্রযোজ্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন।'

Comments

The Daily Star  | English
remittance earning of Bangladesh

Remittance rises 30% in July

Migrants sent home $2.47 billion in the first month of the current fiscal year

5h ago