শ্রমিকনেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার অভিযোগপত্র বাতিল

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

রাজশাহীর শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্ত পরিচালনার ক্ষেত্রে এফআইআরে (প্রাথমিক তথ্য বিবরণী) পরিবর্তন ও আগের নির্দেশনা অমান্য করে দ্রুত অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শামীম আক্তারকে ভর্ৎসনা করেছেন হাইকোর্ট।

আজ রোববার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই অভিযোগপত্র বাতিল করে পুনরায় তদন্তসাপেক্ষে নতুন অভিযোগপত্র তৈরি করে তা বিচারিক আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেন।

একইসঙ্গে পরিদর্শক শামীম আক্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন বিচারপতিরা।

তদন্ত কর্মকর্তা শামীম আক্তারকে ভর্ৎসনা করে বলা হয়, মামলার মূল আসামিকে বাঁচাতে অসৎ উদ্দেশ্য থেকে তিনি নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্ত পরিচালনা করেছেন।

নিহত নুরুল ইসলামের মেয়ে নিগার সুলতানার আইনজীবী আবু বকর সিদ্দিক রাজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য করে তদন্ত কর্মকর্তা শামীম আক্তার দ্রুত মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন।

হাইকোর্ট এর আগে নিগার সুলতানার জমা দেওয়া মূল এজাহার ও বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটির দেওয়া নথির ভিত্তিতে নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্ত পরিচালনার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা শামীম আক্তারকে নির্দেশ দেন।

কিন্তু পিবিআই রাজশাহী ব্যুরোর পরিদর্শক শামীম ওই নির্দেশনা অমান্য করে নকল এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করেন ও মামলার আসামিদের বাঁচানোর অসৎ উদ্দেশ্য থেকে বিচারিক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

শামীম আক্তারকে আদালতে হাজির হওয়ার সমন জারি করা হলেও তিনি এদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।

মেয়ে নিগার সুলতানার দায়ের করা এক রিট আবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত পুঠিয়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে নুরুল সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

পরের দিন নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায়, আব্দুর রহমান পটলকে শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে নুরুল ৯ জুন রাজশাহীর একটি আদালতে মামলা দায়ের করেন। দাবি করেন যে, তিনি পটলের ৫২০ ভোটের বিপরীতে ৬০২ ভোট পেয়েছিলেন। কিন্তু পটলকে অবৈধভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

ওই দিনেই আদালত এক আদেশের মাধ্যমে পটলসহ আরও ৩ জনকে শ্রমিক ইউনিয়নের পদ না নেওয়ার নির্দেশ দেন।

একই দিনে রাত ৮টার দিকে নুরুল নিখোঁজ হন। পরদিন এসএস ব্রিক ফিল্ড থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় তার মেয়ে নিগার ১১ জুন পটালসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, তৎকালীন ওসি শাকিল পটলের পক্ষে নির্বাচনের ফলাফল কারচুপির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

পরে ওই ৮ আসামির নাম বাদ দিয়ে রাজশাহীর বিচারিক আদালতে হত্যা মামলার একটি এফআইআর জমা দেয় পুলিশ।

একই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শাকিলের এফআইআরে কারচুপির অভিযোগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চ রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

একইসঙ্গে এফআইআরে কারচুপির জন্য শাকিলকে কেন বরখাস্ত করা হবে না- সরকারের কাছে তা জানতে চেয়ে একটি রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ওই দিনই সাময়িক বরখাস্ত করা হয় শাকিলকে।

হাইকোর্ট বলেছেন, আইজিপিকে (পুলিশ মহাপরিদর্শক) এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিভাগীয় তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন হয় ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

আজ এই মামলার আসামি আবুল কাসেম ওরফে আবুর জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট।

Comments

The Daily Star  | English

Nowfel gained from illegal tobacco trade

Former education minister Mohibul Hassan Chowdhoury Nowfel received at least Tk 3 crore from a tobacco company, known for years for illegal cigarette production and marketing including some counterfeit foreign brands.

3h ago