যেমন আছেন অধ্যক্ষ স্বপন কুমার ও তার পরিবার

জুতার মালা পরানো অবস্থায় অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে যখন তার রুম থেকে বের করে আনা হয় তখন তার পাশে পুলিশ ছিল। ছবি: সংগৃহীত

জুতার মালা পরানো সেই অধ্যক্ষের বাড়ির নিরাপত্তায় এখন মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। বাড়িতে রয়েছেন তার স্ত্রী ও ৩ মেয়েসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে অধ্যক্ষ নিজেই থাকছেন আত্মীয়দের বাড়িতে।

নড়াইলে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের বাড়ি।

অনার্সের শিক্ষার্থী তার বড় মেয়ে বলেন, 'অপমান ও লজ্জায় কলেজে যেতে পারছি না, ঘর থেকে বের হতে পারছি না। মেঝো বোনের সামনে এসএসসি পরীক্ষা, সেও প্রাইভেট পড়তে যেতে পারছে না। ছোট বোনেরও একই অবস্থা। বাবা আপাতত আত্মীয়দের বাড়িতে থাকছেন।'

এ ঘটনার পর মির্জাপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মুরসালিন বাদী হয়ে গত সোমবার মামলা করেন। মামলায় ১৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এর মধ্যে আড়পাড়া গ্রামের মালেক মুন্সীর ছেলে মোবাইল ফোন মেকানিক শাওন (২৬), মির্জাপুর গ্রামের সৈয়দ মিলনের ছেলে অটোরিকশা চালক রিমন (২০) এবং একই গ্রামের মাদরাসা শিক্ষক মনিরুল ইসলামকে (২৫) গত মঙ্গলবার দুপুরে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করা, শিক্ষকদের ৩টি মোটরসাইকেল পোড়ানো এবং পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার ৩ আসামিকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিতে গতকাল বুধবার আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদুর রহমান এই আবেদন করেন। আগামী ৩ জুলাই রিমান্ড শুনানি হবে বলে তিনি জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জানান, যে ঘটনাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে স্বপন কুমারকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে সেই ঘটনায় তার কোনো দায় নেই। আসলে, কলেজ শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও অধ্যক্ষের পদ দখলের অভিপ্রায় থেকেই স্বপন কুমারের গলায় জুতার মালা পরানো হয়।

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গত সোমবার অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।

মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি অচিন চক্রবর্তী বলেন, 'ঘটনার দিন আমি ঢাকায় ছিলাম, পরে সব শুনেছি। কারা এ ঘটনায় জড়িত তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।'

তিনি জানান, ঈদুল আজহার পর কলেজ খুলবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান এবং পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় জানান, ঘটনার দিন তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল সহিংসতা এড়িয়ে সবাইকে নিরাপদ রাখা। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা দেওয়ার বিষয়টি তারা দেখেননি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পরা ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, পুলিশের উপস্থিতিতেও অধ্যক্ষ স্বপন কুমারের গলায় রয়েছে জুতার মালাটি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় বলেন, 'আমরা সেটা জানি না। আমরা যখন সেখানে উপস্থিত হয়েছি তখন এমন কিছু হয়নি, তার গলায় জুতার মালা ছিল না।'

ঘটনাটি তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের একটি কমিটি এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের অপর একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে।

আজ এই ২ তদন্ত কমিটির আজ প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English
consensus commission bicameral parliament proposal

Consensus commission: Talks stall over women’s seats, upper house

The National Consensus Commission proposed establishing an upper house comprising elected representatives from each district and city corporation, and suggested abolishing the current system of reserved seats for women in parliament.

4h ago