মধ্যরাতে টিপুর স্ত্রী ডলিকে র‌্যাব কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ

নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপু। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যা মামলায় তার স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ডলিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

গতকাল দিবাগত রাত ১০টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলিকে টিকাটুলির র‌্যাব-৩ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে আবার বাসায় পৌঁছে দেয় র‌্যাব।

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার ফারহানা ইসলাম ডলি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতরাত ১০টার দিকে র‌্যাব আমাকে তাদের টিকাটুলি কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেসময় তারা আমার কাছে ঘটনার ডিটেইলস জানতে চায়। আমি কোনো তথ্য জানি কী না, কাউকে সন্দেহ করি কী না, টিপুর সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল কী না এসব।'

'আমি অসুস্থ থাকায় সেসময় আমার সঙ্গে ৩ জন আত্মীয়ও ছিল। তবে তাদের কাছে কোনো কিছু জানতে চায়নি র‌্যাব। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত সাড়ে ১২টার দিকে আবার আমাদের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়', বলেন তিনি।

এর আগেও, ফারহানা ইসলাম ডলিকে ডেকে নিয়েছিল গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

এ বিষয়ে গতরাতে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডিবি সাংবাদিক সম্মেলন করার আগেও আমাকে একবার ডেকেছিল। সেসময় তারা আকাশকে দেখিয়ে বলেছিল আমি চিনি কী না। তখন আমি বলেছিলাম যে, তাকে চিনি না, কোনোদিন দেখিওনি।'

টিপুর স্ত্রী বলেন, 'ডিবি ব্রিফিংয়ে বলেছে, আকাশই কিলার। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে এটা স্বীকারও করেছে। এ ক্ষেত্রে আমার প্রশ্ন হলো, টিপুকে হত্যার জন্য আকাশকে যদি ভাড়া করা হয়, তাহলে এর পরিকল্পনাকারী কারা?'

'আরেকটি বিষয় হলো, ডিবি বলছে- আকাশের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল পরিকল্পনাকারীরা। এতে স্বভাবতই মনে হচ্ছে মাস্টারমাইন্ডদের সঙ্গে আকাশের পূর্বপরিচয় বা সখ্যতা ছিল। না হলে কোনো টাকা গ্রহণ ছাড়াই, কেবল মামলা তুলে নেওয়ার আশ্বাসে আকাশ এ হত্যার দায়িত্ব নিয়েছে, বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য নয়', বলেন তিনি।

ফারহানা ইসলাম ডলি আরও বলেন, 'এখন পর্যন্ত মামলার তদন্তের যে অগ্রগতি হয়েছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট নই। যাদের নির্দেশে আকাশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত হতে পারে, সে নিশ্চয়ই তাদের চেনে। তারা যারাই হোক না কেন, যত বড় গডফাদার বা মাফিয়াই হোক না কেন, আমি তাদের সবার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। এ ঘটনায় গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দেশবাসীর কাছে বিচার চাই।'

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর ব্যস্ত সড়ক শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় জাহিদুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি এ সময় বাসায় ফিরছিলেন। তার গাড়ি যানজটে পড়ার পর মোটরসাইকেলে করে আসা হেলমেট পরা এক যুবক জাহিদুলকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। তার এলোপাতাড়ি গুলিতে রিকশারোহী কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান জামাল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

ওই ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ডলি গত শুক্রবার সকালে শাহজাহানপুর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

Comments