বৃদ্ধকে পাশবিক নির্যাতন, যুবলীগ নেতা কারাগারে
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তিকে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা আবুল হোসেন ওরফে শাহ নেওয়াজকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবপ্রিয় দাশ দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নির্যাতনের শিকার ওই ব্যক্তি নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মামলার নথি থেকে পুলিশ জানায়, মসজিদের ঠিকাদারি নিয়ে বিরোধের জেরে অভিযুক্ত শাহ নেওয়াজ বৃদ্ধের পায়ুপথে টর্চ ঢুকিয়ে নির্যাতন করেন।
এ ঘটনায় মামলার পর আসামিকে গ্রেপ্তার করে আজ সোমবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
সোমবার দুপুরে নির্যাতনের শিকার ৬৮ বছরের ব্যক্তি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, চরওয়াপদা ইউনিয়নের চর বৈশাখী একটি মসজিদের নির্মাণকাজের ঠিকাদারি চেয়েছিলেন চরওয়াপদা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আবদুল মান্নান ভূইয়া ও তার অনুসারী ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য তানভীর উদ্দিন এবং আবুল হোসেন শাহনেওয়াজ।
তিনি বলেন, 'তবে আমি নিজেই কাজটির তদারকি করি। পরে মসজিদ নির্মাণ শুরু হলে চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীরা আমাকে বাঁধা ও হুমকি দেন।'
'পরে শাহনেওয়াজ ও তানভীর আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ ঘটনায় আমি ইউপি সদস্য তানভীরকে প্রধান আসামি করে ৭ জনের বিরুদ্ধে গত ৭ জুন আদালতে একটি মামলা করি। এতে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়,' যোগ করেন তিনি।
তিনি জানান, গত শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে তানভীর, শাহনেওয়াজ, দিদার, খোকন, সালাউদ্দিন ও বোরহান উদ্দিনসহ ১০-১২ জন তাকে জোর করে চর বৈশাখী গ্রামের একটি বাড়িতে নিয়ে যায় এবং মারধর করে।
তিনি বলেন, 'একপর্যায়ে তারা আমার মুখে গামছা বেঁধে পায়ুপথে একটি টর্চলাইট ঢুকিয়ে দেয়। তাদের মারধর ও অমানবিক নির্যাতনে প্রচুর রক্তক্ষরণে একসময় আমি অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যাই। তখন তারা আমাকে মৃত ভেবে সেখানে ফেলে পালিয়ে যায়।'
তার পরিবার জানায়, শনিবার সকালে গুরুতর অবস্থায় তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে টর্চলাইটটি বের করা হয়েছে।
এ ঘটনায় চর ওয়াপদা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আবুল হোসেন ওরফে শাহ নেওয়াজকে (৪৫) প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন বৃদ্ধের ছেলে। মামলায় অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়।
ওসি দেবপ্রিয় দাশ বলেন, 'গ্রেপ্তারকৃত শাহ নেওয়াজকে সোমবার দুপুরে আদালতে হাজির করলে শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কাজ করছে বলে জানান তিনি।
Comments