বিশ্বজিৎ হত্যা মামলা: যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কামরুল গ্রেপ্তার

র‌্যাব ৩ গতকাল রাতে চামেলীবাগে অভিযান চালিয়ে কামরুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে। ছবি: সংগৃহীত

বহুল আলোচিত বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. কামরুল হাসানকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

গতকাল রোববার রাজধানীর চামেলীবাগ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (অপস্ ও ইন্ট শাখা) পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব ৩ গতকাল রাতে চামেলীবাগে অভিযান চালিয়ে  কামরুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কামরুল জানান, ঘটনার দিন বিশ্বজিৎকে প্রতিপক্ষ দলের সদস্য ভেবে ধাওয়া করেন তারা। তারপর মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা তাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। বিশ্বজিৎ আহত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

তারপর তিনি জানতে পারেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে বিশ্বজিৎ মারা গেছেন এবং ওই ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় মামলা হয়েছে। এরপর তিনি পাশের দেশে তার নানাবাড়ির আত্মীয়ের সহায়তায় আত্মগোপন করেন। মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের ২ মাস পর তিনি দেশে ফিরে আসেন।

২০১৩ সালের শেষ দিকে তিনি ছদ্মনামে গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করেন। এরপর তার সঙ্গে প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রের সদস্য খোকন ও সোহেলের পরিচয় হয়। তারা তাকে বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে ঘরে বসেই প্রচুর অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। এভাবে তিনি প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন এবং ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন বিক্রি করে ৫০ লাখের বেশি টাকা উপার্জন করেন।

এরপর ওই টাকা দিয়ে তিনি কক্সবাজার সদর এলাকায় হোটেল ব্যবসা চালু করেন। তবে করোনার লকডাউনের সময় লোকসানের কারণে ব্যবসা বন্ধ করে দেন।

পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আসামিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। 

২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর সকালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের ডাকা হরতালের সময় রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে আমন্ত্রণ টেইলার্সের মালিক বিশ্বজিৎ দাসকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেb। বিচারিক আদালতের রায়ে ২১ আসামির মধ্যে ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা।

পরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ৮ আসামির মধ্যে ২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল, ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন এবং অন্য ২ জনকে খালাস দেন হাইকোর্ট।

এ ছাড়াও, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১৩ আসামির মধ্যে আপিল করা ২ জন খালাস পান।

Comments

The Daily Star  | English

Ending impunity for crimes against journalists

Though the signals are mixed we still hope that the media in Bangladesh will see a new dawn.

9h ago